আট মাসে সাত সিরিজ এবং একটি এশিয়া কাপ। দ্বিপক্ষীয় সিরিজে ১৫টি করে টি২০ আর ওয়ানডে ম্যাচ খেলা হবে। একটি টি২০ এশিয়া কাপও আছে। লাল বলের খেলাও একেবারে কম না। এ বছর তিনটি টেস্ট সিরিজ খেলবেন নাজমুল হোসেন শান্তরা। সেদিক থেকে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের ব্যস্ত মৌসুম শুরু হবে এপ্রিল মাসে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজ দিয়ে।
এই ব্যস্ততায় ক্রিকেটারদের ‘ওয়ার্ক লোড ম্যানেজ’ করার পাশাপাশি জাতীয় দলের পুল শক্তিশালী করতে রোটেশন পদ্ধতির পক্ষে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা। জাতীয় দলের সাবেক তিন অধিনায়ক মনে করেন, টানা খেলার কারণে ক্রিকেটারদের মধ্যে একঘেয়েমি চলে আসতে পারে। যেটা ভালো পারফরম্যান্স করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে বলে দাবি তাদের। রোটেশন পদ্ধতি অনুসরণ করা গেলে লাভ বেশি বলেও মনে করেন তারা। পুলের ক্রিকেটারদের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা দেওয়া সম্ভব হবে।
বিপিএল শেষ করে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলেছেন শান্তরা। ৩ মার্চ থেকে মাঠে গড়িয়েছে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ। লিগের খেলা শেষ করেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ ২০ এপ্রিল থেকে ২ মে পর্যন্ত। এই সিরিজ শেষ করে তিন ম্যাচ ওয়ানডে এবং তিন ম্যাচ টি২০ সিরিজ খেলতে পাকিস্তান যাবে বাংলাদেশ।
জুন-জুলাইয়ে শ্রীলঙ্কা সফরে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলবেন শান্তরা। লঙ্কা থেকে ফেরার পরও ফুরসত নেই। পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে ও তিন ম্যাচ টি২০ সিরিজ খেলা। ভারতের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে ও তিন ম্যাচ টি২০ সিরিজ খেলা আগস্টে। এই সিরিজগুলোতে রোটেশন পদ্ধতি অনুসরণ করা গেলে পুলের ক্রিকেটারদের আন্তর্জাতিক ম্যাচের জন্য প্রস্তুত করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন রকিবুল হাসান।
তিনি গতকাল ফোনে বলেন, ‘আমি রোটেশন পদ্ধতির পক্ষে। পেস বোলারদের এমনই বিশ্রাম দেওয়া হয়। ব্যাটারদের মধ্যে যারা তিন সংস্করণ খেলে, তাদেরও কমবেশি বিরতি দিয়ে খেলাতে পারলে ভালো। তাতে করে ‘স্ট্যাগ’ হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকবে। পুলের ক্রিকেটাররা ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে। এতে করে যে লাভ হবে, ক্রিকেটারদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়বে; ‘ইনজুরি রিপ্লেসমেন্ট’ ভালো হবে। এখন প্রায় সব দেশই রোটেশন পদ্ধতিতে খেলে। আমি মনে করি, বিসিবি এবং জাতীয় দল নির্বাচকরা এ ক্ষেত্রে সাহস দেখাতে পারলে ভালো হবে।’
এ বছর হোম সিরিজ বেশি। সাত সিরিজের পাঁচটিই হবে দেশের মাটিতে। জাতীয় দলের পুল শক্তিশালী করতে রোটেশন পদ্ধতি ভালো কৌশল বলে মনে করেন হাবিবুল বাশার। সাবেক এ নির্বাচক বলেন, ‘ওয়ানডে দলে দুটি জায়গা খালি হচ্ছে। ওখানে দুজন ব্যাটার নিতে হবে পাইপলাইন থেকে। ওয়ানডের জন্য ভালো কাউকে ফিট করতে হলেও অটো রোটেশনে যেতে হবে। পেস বোলারদেরও টানা খেলাতে পারবে না। এই রোটেশন পলিসি পরিকল্পিত হলে ভালো হবে। কারণ, বাংলাদেশকে সিরিজগুলো জিততেও হবে।’
ভারতের বিপক্ষে খেলার পরই দরজায় কড়া নাড়বে টি২০ এশিয়া কাপ। অক্টোবরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হোম সিরিজ। নভেম্বর-ডিসেম্বরে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে পূর্ণাঙ্গা সিরিজ দিয়ে বছর শেষ করবে বাংলাদেশ। বিসিবির সাবেক প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু জানান, কৌশলগত রোটেশন পলিসি নিলে ভালো। তিনি বলেন, ‘পেস বোলারদের রোটেশন করতেই হবে। যে পাঁচ-ছয়জন পেস বোলার আছে, তারা উনিশ-বিশ। বিশ্রাম দিয়ে দিয়ে খেলালে ভালো হবে। ব্যাটারদের সেভাবে রোটেশন না করলেও চলে। কারণ, মানসম্পন্ন ব্যাটার কম। মুশফিক-মাহমুদউল্লাহর জায়গা পূরণ করার জন্যও তো দুজন ব্যাটারকে নিতে হবে।’
এই রোটেশন পদ্ধতি যাতে কার্যকর করার জন্য টাইগার ক্যাম্প কাজে লাগাতে চায় বিসিবি। ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শাহরিয়ার নাফীস জানান, মে মাস থেকে টাইগার এবং এইচপির ক্যাম্প চলবে। ফরম্যাট অনুযায়ী ক্রিকেটারদের প্রস্তুত রাখার উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। এ ছাড়া মে মাসে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ‘এ’ দলের সিরিজ, আগস্টে ‘এ’ দলের অস্ট্রেলিয়া সফর দিয়ে বিকল্প ক্রিকেটারদের প্রস্তুত করার পরিকল্পনা নিয়েছে বিসিবি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ত য় দল র শ ষ কর র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’