স্কুলছাত্র আয়াজ হত্যা মামলায় দুই আসামির সাজা কমল
Published: 16th, March 2025 GMT
এক দশকের বেশি সময় আগে গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি স্কুলের ছাত্র আয়াজ হক হত্যা মামলায় দেওয়া দুই আসামির সাজা কমানো হয়েছে। এই মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ইনজামামুল ইসলাম ওরফে জিসানকে ১২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট। আর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত তৌহিদুল ইসলামকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার এ রায় দেন। বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে দুই আসামির করা আপিল খারিজ করে সাজা সংশোধন করে এ রায় দেওয়া হয়।
বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে দুই আসামির করা আপিলের ওপর শুনানি শেষে গত ২৫ ফেব্রয়ারি হাইকোর্ট রায়ের জন্য ১৬ মার্চ দিন ধার্য করেন। এর ধারাবাহিকতায় আজ রায় দেওয়া হয়। আদালতে তৌহিদুলের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোতাহার হোসেন এবং জিসানের পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বদিউজ্জামান তপাদার ও সুলতানা আক্তার রুবী ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো.
রায়ের পর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বদিউজ্জামান তপাদার প্রথম আলোকে বলেন, হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আপিল করা হবে।
ওই মামলায় ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর বিচারিক আদালত রায় দেন। আসামিরা তখন সিটি কলেজের ছাত্র ছিলেন। রায়ে ইনজামামুল ইসলাম ওরফে জিসানকে আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তৌহিদুল ইসলাম, মশিউর রহমান, আবু সালেহ মো. নাসিম ও আরিফ হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে জিসান ও তৌহিদুল ২০২১ সালে পৃথক আপিল করেন। আপিলের ওপর গত ১৯ জানুয়ারি হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয়। এর ধারাবাহিকতায় গত ২৫ ফেব্রুয়ারি শুনানি শেষে আজ রায় দিলেন আদালত।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১৪ সালের ৯ জুন সিটি কলেজের প্রীতি ফুটবল টুর্নামেন্টের প্রস্তুতি ও খরচ বাবদ টাকা তোলার বিষয় নিয়ে আয়াজের বড় ভাই সিটি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আশদিন হকের সঙ্গে আসামিদের কথা-কাটাকাটি ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে ওই দিন বিকেলে ধানমন্ডি থানার জিগাতলায় যাত্রীছাউনির কাছে আয়াজকে একা পেয়ে আসামিরা ছুরিকাঘাত করেন। তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় আয়াজের বাবা আইনজীবী শহীদুল হক ২০১৪ সালের ৯ জুন ধানমন্ডি থানায় মামলা করেন। ২০১৫ সালের ১৩ মে ধানমন্ডি থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক এসআই সাহিদুল বিশ্বাস আদালতে অভিযোগপত্র দেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ল ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
আবারও নিরপরাধ দাবি হিটু শেখের, ভিন্ন কথা সাক্ষীদের
আলোচিত শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় তৃতীয় দিনের মতো গতকাল মঙ্গলবার সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে মাগুরায়। এদিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসানের আদালতে ১০ সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। এদিনও মামলার প্রধান আসামি আছিয়ার বোনের শ্বশুর হিটু শেখ আদালত কক্ষে ঢোকার আগে সাংবাদিকদের কাছে নিজেকে নিরপরাধ দাবি করেন। কিন্তু আদালত সূত্র জানায়, সাক্ষীরা প্রত্যেকে হিটু শেখের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
এর আগে সোমবার ছিল এই মামলার দ্বিতীয় দিনের সাক্ষ্য গ্রহণ। সেদিনও শুনানি শেষে আদালত থেকে বের হওয়ার সময় হিটু শেখ নিজেকে নিরপরাধ দাবি করেন।
গতকাল কড়া নিরাপত্তার মধ্যে হিটু শেখসহ ৪ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। বাদীপক্ষের আইনজীবী ও নারী-শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি মনিরুল ইসলাম মুকুল জানান, গত তিন কার্যদিবস টানা সাক্ষ্য গ্রহণ চলেছে। গতকাল ১০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। সাক্ষীদের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন, আছিয়ার বোন হামিদা ছিলেন। এ নিয়ে মোট ১৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হলো। এ মামলায় মোট ৩৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে। আজ বুধবার মাগুরা ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা সাক্ষ্য দেবেন। গতকাল আসামিপক্ষের আইনজীবী স্বাধীনভাবে সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন। তিনি আদালতে আসামিরা নির্দোষ বলে যুক্তি উপস্থাপন করেন।
গতকালও আদালত কক্ষে ঢোকার আগে হিটু শেখ ঘটনার জন্য তাঁর পুত্রবধূ আছিয়ার বোনকে দায়ী করে গ্রেপ্তারের দাবি জানান। হিটু শেখ বলেন, ঘটনার সময় আমিসহ আমার দুই ছেলে বাড়িতে ছিলাম না। সকালে বাইরে যাওয়ার সময়ও আছিয়াকে সুস্থ দেখে গেছি। আছিয়ার বোন এ সময় একাই বাড়িতে ছিল। সাংবাদিকরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখেন। দোষী হলে যে শাস্তি হয়, মাথা পেতে নেব।
বোনের বাড়ি বেড়াতে এসে ৬ মার্চ রাতে মাগুরা সদরের নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের শ্বশুর হিটু শেখের ধর্ষণের শিকার হয় ৮ বছরের শিশু আছিয়া। ঢাকা সিমএমএইচে ১৩ মার্চ তার মৃত্যু হয়।