জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে লিখিত মতামত দিল এবি পার্টি
Published: 17th, March 2025 GMT
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ১৬৬টি প্রস্তাবের মধ্যে ১০৮টি বিষয়ে ঐকমত্য, ২৬টি বিষয়ে আংশিক ঐকমত্য এবং ৩২টি বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করে লিখিত মতামত জমা দিয়েছে আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি)।
সোমবার (১৭ মার্চ) এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, ভাইস চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল দিদারুল আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার সানী আব্দুল হক ও ব্যারিস্টার নাসরিন সুলতানা মিলির সমন্বয়ে গঠিত প্রতিনিধিদল জাতীয় ঐক্যমত কমিশনে লিখিত মতামত জমা দেয়।
জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের পক্ষে মতামত গ্রহণ করেন সংবিধান সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান ড.
গত ৬ মার্চ জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সংবিধান সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলো স্প্রেডশিট আকারে এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পাঠানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ ১৭ মার্চ জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের কার্যালয়ে কমিশনের নির্দেশনা মোতাবেক পূরণকৃত স্প্রেডশিটগুলো জমা দেয় এবি পার্টি।
স্প্রেডশিটগুলোতে সংস্কারের সময়কাল ও বাস্তবায়নের উপায় হিসেবে মোট ছয়টি প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। প্রথম প্রস্তাবনা হলো—‘নির্বাচনের আগে অধ্যাদেশের মাধ্যমে’। এ উপায়ে সংবিধান সংশোধন বর্তমান সংবিধানের আলোকে অগ্রহণযোগ্য। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৯৩ (১)(খ) এর বিধান মোতাবেক রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ প্রণয়ন ক্ষমতার মাধ্যমে সংবিধানের কোনো বিধান পরিবর্তন বা রহিত করা যায় না। তাই, বর্তমান সংবিধান স্থগিত বা বাতিল না করে অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংবিধান সংশোধন করা বর্তমান সংবিধান সাপেক্ষে বেআইনি। তবে, বর্তমান সংবিধান স্থগিত করে জুলাই রেভুল্যুশনের স্পিরিটের আলোকে প্রস্তাবিত সাংবিধানিক বিধানসমূহ পরিবর্তন/পরিবর্ধন/পরিমার্জন করে নতুন সংবিধান পুনর্লিখন করা যেতে পারে। এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলের মাধ্যমে আপিল বিভাগের কাছে সরকার অধিকতর সাংবিধানিক ব্যাখ্যা চাইতে পারে।
অন্য পাঁচটি প্রস্তাবনা সার্বিক বিবেচনায় দুরূহ ও সময়সাপেক্ষ বলে মনে করে এবি পার্টি। এ পরিস্থিতিতে এবি পার্টি স্প্রেডশিটে উল্লেখ করা সংস্কারের সময়কাল ও বাস্তবায়নের উপায় হিসেবে আইনি সম্ভাব্য জটিলতা থাকা সত্ত্বেও প্রথম প্রস্তাবনাকেই (নির্বাচনের আগে অধ্যাদেশের মাধ্যমে) বেছে নিয়েছে।
তাছাড়া, যেসব প্রস্তাবনায় সংবিধান সংশোধনের সম্ভাব্য উপাদান নেই, সেসব ক্ষেত্রে প্রথম প্রস্তাবনাই (নির্বাচনের আগে অধ্যাদেশের মাধ্যমে) সবচেয়ে সহজসাধ্য বলে এবি পার্টির বিশ্বাস।
এবি পার্টির প্রতিনিধিদলে আরো ছিলেন সংগঠনটির সহকারী প্রচার সম্পাদক রিপন মাহমুদ, সহকারী দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট শরণ চৌধুরী ও সহকারী অর্থ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রফিক
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ঐকমত য সহক র মত মত
এছাড়াও পড়ুন:
ঐকমত্য কমিশন হাজির করেছে অনৈক্যের দলিল: বিএনপি নেতা জহির উদ্দিন স্বপন
ঐকমত্য কমিশনের কাজ ঐকমত্য তৈরি করা হলেও তারা আনুষ্ঠানিকভাবে অনৈক্যের দলিল হাজির করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন।
জহির উদ্দিন বলেছেন, ‘যতটুকু ঐক্য নিশ্চিত করা যায়, ততটুকুই ঐকমত্য কমিশনের কাজ। বাকিটা ঐক্যের চেষ্টার জন্য রেখে দিতে হবে।…কিন্তু তা না করে যখন এ রকমভাবে হাজির করা হচ্ছে সিদ্ধান্তের নামে, তখন মূলত বিরোধে লিপ্ত হওয়ার জন্য একটা পরোক্ষ আহ্বান এবং একটা বিরোধের এজেন্ডাকে কিন্তু হাজির করা হয়।’
আজ শনিবার সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে ‘পলিটিকস ল্যাব: পাবলিক ডায়ালগ’ শীর্ষক সংলাপে এ কথা বলেন জহির উদ্দিন। সংলাপের আয়োজন করে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস)।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত মঙ্গলবার জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে হস্তান্তরের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে তা নিয়ে মতভেদ দেখা দেয়। বিএনপি অভিযোগ তুলেছে, তাদের আপত্তির বিষয়গুলো রাখা হয়নি সনদ বাস্তবায়ন আদেশের খসড়ায়। আলোচনায় আসেনি, এমন কিছুও যুক্ত করা হয়েছে।
সংলাপে জহির উদ্দিন স্বপন বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশনই জাতির সামনে জানাল যে ঐক্য নাই। ঐকমত্যের কাজই হবে যতটুকু ঐক্য আছে, সেটাকে উত্তোলন করা, যতটুকু নাই ততটুকুকে জানিয়ে রাখা এর চাইতে বেশি কোনো কাজ নাই। কমিশন শব্দটার মধ্যেই তো রয়েছে যে তারা অথরিটি নয়।’
জুলাই অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা থেকে যদি প্রকৃত অর্থে সংস্কারই উদ্দেশ্য হয়, তাহলে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি মেনে চলার ওপর জোর দেন তিনি।