আমরা দুনিয়ার মাঠে খেলার খেলোয়াড়, ছোট মাঠের না: প্রধান উপদেষ্টা
Published: 17th, March 2025 GMT
বাংলাদেশ দুনিয়ার মাঠে খেলার খেলোয়াড়, ছোট মাঠে খেলার খেলোয়াড় না। স্বপ্নের, সাধের বাংলাদেশ গঠনে সবাইকে দলবদ্ধ খেলোয়াড় হিসেবে খেলতে হবে। টিমওয়ার্ক জরুরি এবং বাংলাদেশে যতগুলো টিম আছে তার মধ্যে পুলিশ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
আজ সোমবার প্রধান উপদেষ্টার তেজগাঁও কার্যালয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে পুলিশের ১২৭ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সঙ্গে বিশেষ বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এসব কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা দুনিয়ার মাঠে খেলার খেলোয়াড়, আমরা ছোট মাঠে খেলার খেলোয়াড় না বাংলাদেশ, ওই যে বললাম, বাংলাদেশ অপূর্ব একটা দেশ। সে দেশে যারা আমরা দুনিয়ার মাঠে খেলি। আমাদের দেখে লোকে হাততালি, এরা এসেছে। বাংলাদেশ নেমেছে এবার। ওরকম চাই, ওরকম এবং করতে পারি।.
নতুন বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনীর করণীয় প্রসঙ্গে মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘অতীত নিয়ে কান্নাকাটি করার দরকার নাই। নতুনের জন্য আমরা প্রস্তুত এবং করে দেখাব। এটা মুখে বলার দরকার নেই। কাজে বলব, যে হ্যাঁ এই হলো নতুন বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনী। সবাই বাহবা দেবে যে হ্যাঁ, এই একটা কাজ এবং আশপাশের যারা আছে, তারা বলবে যে ভাই, আপনারা একটা কাজ দেখালেন। এটা আমরা চিন্তা করি নাই, পুলিশের হাত দিয়ে এই কাজ হতে পারে। পুলিশের মাথায় চিন্তা আসতে পারে। কারণ, পুলিশ সম্বন্ধে ইমেজ হলো যে তারা খারাপটাই আগে দেয়। খারাপটা আগে করে। আমরা ভালোটা আগে দেখব, ভালোটা আগে করব। আমাদের পুরো বাহিনীটা নিয়োজিত।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘বাহিনী সামগ্রিকভাবে একটা কাঠামো। এই কাঠামোর কাছে অনেক শক্তি, যদি আমরা সেই শক্তিকে ঠিক দিকে প্রসারিত করি। যেটি বলার জন্য, যে কমিউনিকেট করার জন্য যে আমরা এই সুযোগটা গ্রহণ করি। আমরা কী কী করলে হবে, সেই আলোচনাটা আমরা শুরু করি। যে এই এই জিনিস হলে, এটা একটা টিম ওয়ার্ক। তো এটা একক উপদেষ্টা হুকুম দিয়া দিল আর তোমরা করে ফেললে, এ রকম না। এটা সবাই মিলে একটা টিমের মতো খেলতে হবে এবং বাংলাদেশে যত টিম আছে সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ টিমগুলো তোমরা, ‘পুলিশ বাহিনী’।’
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা
হবিগঞ্জে ছোট-বড় মিলেয়ে চা বাগানের সংখ্যা প্রায় ৪১টি। এসব বাগানের বাসিন্দা প্রায় দেড় লাখ। এর মধ্যে, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ৩২ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ চা পাতা উত্তোলনে জড়িত।
চা বাগানে একজন শ্রমিককে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়। এর বিনিময়ে মজুরি পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো বাগানে নিয়মিত এই মজুরিও দেওয়া হয় না।
শ্রমিকদের দাবি, দৈনিক মজুরি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করতে হবে। বর্তমানে যে মজুরি পাওয়া যায় তা দিয়ে সংসার চলে না। প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। সেই সঙ্গে চা শ্রমিকদের নৈমিত্তিক ছুটির ব্যবস্থা করতে হবে।
আরো পড়ুন:
বৈষম্য কেন? নারী শ্রমিকেরা পান না সমান মজুরি
ধান কাটায় আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার, পেশা বদলাচ্ছেন কৃষি শ্রমিকেরা
সরেজমিনে কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, শ্রমিকরা ছোট্ট কুঠুরিতে গাদাগাদি করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসবাস করেন। পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, দু-বেলা পেটভরে খেতে পারেন না।
শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘‘দুই বছর অন্তর চা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি ও সমস্যা নিয়ে চা বাগান মালিক পক্ষের সংগঠনের সঙ্গে চা শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিনিধির বৈঠক হয়। সর্বশেষ গত বছরের আগস্টে বৈঠক হয়েছে। সে সময় ৮ টাকা ৫০ পয়সা বৃদ্ধি পেয়ে মজুরি ১৭৮ টাকা ৫০ নির্ধারিত হয়েছে।’’
শ্রমিকদের কষ্টের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এই টাকায় চলা যায় না। দেশের কোথাও এতো সস্তা শ্রমের দাম নেই। বর্তমানে একজন কৃষিশ্রমিক দিনে ৫০০-১০০০ টাকা আয় করেন, একজন রিকশাচালকের প্রতিদিনের আয় ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। সেখানে একজন চা শ্রমিক পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। এজন্য তাকে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়।’’
চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে নাটক ও গানের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসা জেলার চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি প্রতীক থিয়েটারের সভাপতি সুনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘দৈনিক ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা মজুরিতে শ্রমিকদের চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। অচিরেই মজুরি ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হোক। এছাড়া, শ্রমিকদের আরো সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’’
ঢাকা/রাজীব