গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের আহ্বানে তাদের গুলশান কার্যালয়ে গিয়েছিলেন সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) ইকবাল করিম ভূঁইয়া। সেখানে তিনি প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ছিলেন। গুমসংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে কমিশনের প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত এই সেনা কর্মকর্তা।

আজ বুধবার বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশনে যাওয়ার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন সাবেক এই সেনাপ্রধান। পাশাপাশি কমিশনের তদন্তে সংশ্লিষ্টদের স্বেচ্ছায় এগিয়ে আসারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

জেনারেল (অব.

) ইকবাল করিম ভূঁইয়া তাঁর স্ট্যাটাসে বলেন, ‘আমার কর্মঅভিজ্ঞতা থেকে কিছু লেখা সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। ওই লেখাগুলো রাষ্ট্র, সমাজ ও সংস্থার বিভিন্ন অংশের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। সেই পটভূমিতে অনেক ব্যক্তি, গোষ্ঠী ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এর বিভিন্ন দিক ও বিষয়ে জানার আগ্রহ জন্মেছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে “গুমসংক্রান্ত কমিশন ফর ইনকোয়ারি” আজ বেলা ১১টায় গুলশানে অবস্থিত তাদের কার্যালয়ে আমাকে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিল।’

সাবেক সেনাপ্রধান বলেন, ‘তদন্ত কমিশনের ডাকে সাড়া দিয়ে আমি যথাসময়ে সেখানে যাই এবং কমিশন বিভিন্ন বিষয়ে আমার কাছে বিস্তারিত জানতে চায়। আমার স্মৃতিতে থাকা বিষয়গুলো তাদের জানাই। কমিশনের নানান জিজ্ঞাসা ও প্রশ্নের জবাব দিই। জাতীয় প্রয়োজনে গঠিত গুরুত্বপূর্ণ এই কমিশনের কার্যক্রম অধিকতর ফলপ্রসূ করার লক্ষ্যে আমার সঙ্গে তাদের আলোচনা ৩ ঘণ্টা ২৩ মিনিট স্থায়ী হয়। বেলা ২টা ২৩ মিনিটে আলোচনা শেষ হয়।’

গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশনে ইকবাল করিম ভূঁইয়ার যাওয়ার বিষয়ে কমিশনের সদস্য সাজ্জাদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাবেক এই সেনাপ্রধানের কিছু লেখা সম্প্রতি আমাদের নজরে এসেছে। মূলত এই লেখাগুলো সম্পর্কেই তাঁর কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছে। তিনি আমাদের প্রশ্নগুলোর জবাব দিয়েছেন।’

সাবেক সেনাপ্রধান ইকবাল করিম ভূঁইয়া স্ট্যাটাসে আরও বলেন, ‘বিগত বছরগুলোতে জ্ঞাত বা অজ্ঞাত স্থানে বলপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান ও তাঁদের শনাক্ত করা এবং কোন পরিস্থিতিতে গুম হয়েছিলেন, তা নির্ধারণ করা প্রয়োজন। সেই উদ্দেশ্যে গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যসহ কোনো ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের কাছে থাকা তথ্য ও প্রমাণাদি সরবরাহ করে গুমসংক্রান্ত কমিশনের কার্যক্রমকে বেগবান করা আমাদের সবার দায়িত্ব ও কর্তব্য। আর তা যথাযথভাবে পালন করা গেলেই কেবল ভবিষ্যতে মানবতাবিরোধী অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।’

ফেসবুকের স্ট্যাটাসে সাবেক সেনাপ্রধান বলেন, ‘একজন নাগরিক হিসেবে বিশ্বাস করি, “গুমসংক্রান্ত কমিশন ফর ইনকোয়ারি”র এমন গুরুত্বপূর্ণ কাজে সহযোগিতার জন্য এ কাজে জড়িত সব পক্ষ, ব্যক্তি ও চাকরিরত বা অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে স্বেচ্ছায় এগিয়ে আসা উচিত। গুম ও অপহরণসংক্রান্ত যেসব মানবতাবিরোধী অপরাধ দেশে সংঘটিত হয়েছে, এর সঙ্গে জড়িতদের সম্পর্কে যে যেখানে যতটুকুই জানেন, তা এই কমিশনকে অবহিত করা দরকার।’

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার সমন্বয়ক হলেন আনসার উদ্দিন খান

অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা আনসার উদ্দিন খান পাঠানকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার সমন্বয়ক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চুক্তি ও বৈদেশিক নিয়োগ শাখা থেকে তাঁকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের কথা জানিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

উপসচিব আবু সালেহ মো. মাহফুজুল আলম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮–এর ধারা ৪৯ অনুযায়ী অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা আনসার উদ্দিন খান পাঠানকে অন্য যেকোনো পেশা, ব্যবসা কিংবা সরকারি, আধা সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান/সংগঠনের সঙ্গে কর্মসম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে যোগদানের তারিখ থেকে দুই বছর মেয়াদে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কো-অর্ডিনেটর (সমন্বয়ক) হিসেবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রদান করা হলো।

আনসার উদ্দিন খান পাঠান ২০২২ সালের ২১ সেপ্টেম্বর অবসরে যান। সে সময় তিনি বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির পুলিশ সুপার ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার সমন্বয়ক হলেন আনসার উদ্দিন খান