সারা বছরই দেশে সেমাই উৎপাদন ও বিক্রি হয়। ঈদুল ফিতরের সময় উৎপাদন আর বিক্রি বছরের বাকি ১১ মাসকে ছাপিয়ে যায়। দেশের অনেক জেলাতেই সেমাই উৎপাদন হয়। কিশোরগঞ্জে বিসিক শিল্পনগরীর কারখানায় সেমাই উৎপাদন করছে ‘এমএম খান ফুড প্রডাক্টস’ নামে একটি ফাস্টফুড প্রতিষ্ঠান। ঈদে স্থানীয় চাহিদা মেটাতে তিন টন সেমাই উৎপাদনের লক্ষ্যে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি। 

গতকাল বুধবার সদর উপজেলার মারিয়া ইউনিয়নের বিসিক শিল্পনগরীতে গিয়ে দেখা গেছে, এমএম খান ফুড প্রডাক্টসের কারখানায় সেমাই তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রায় অর্ধশত শ্রমিক। একদল কর্মী মেশিনে সেমাইয়ের ‘খামির’ তৈরি করছেন। কিছু কর্মী খামির দিয়ে কাঁচা সেমাই তৈরি করছেন। একদল কর্মী তেলে সেমাই ভাজছেন। কয়েকজন সেই ভাজা সেমাই প্যাকেটজাত করছেন। ম্যাকের কারখানায় সেমাই ছাড়াও বিস্কুট, পাউরুটি, স্যান্ডউইচ, কেক, চানাচুরসহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী তৈরি করা হয়। কিন্তু ঈদকে সামনে রেখে সেমাই তৈরিতে ব্যস্ত কারখানার শ্রমিকরা। 

কারখানার কর্মীদের কাজের তদারক করেন আব্দুল আউয়াল। তিনি জানালেন, ময়দা, ডালডা আর তেল দিয়েই মূলত সেমাই তৈরি করা হয়। ম্যাকের কারখানায় লাচ্ছা সেমাই আর বাংলা লাচ্ছা সেমাই তৈরি করা হয়। কারখানার শ্রমিকরা যেন পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখেন সেদিকে তিনি কঠোরভাবে নজর রাখেন। প্রত্যেক কর্মী মাথা ঢেকে, মাস্ক আর হ্যান্ড গ্লোভস পরে কাজ করেন। আব্দুল আউয়াল বলেন, তাদের কারখানায় লাচ্ছা সেমাই আর বাংলা লাচ্ছা সেমাই তৈরি করা হয়। ২০০ গ্রাম বাংলা লাচ্ছার খুচরা মূল্য ৪৫ টাকা, আর ২০০ গ্রাম লাচ্ছা সেমাইয়ের খুচরা মূল্য ৪০ টাকা। 

শহরের স্টেশন রোডের নিয়ামত ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের মালিক মিজানুর রহমান শাহীন জানান, তারা এতদিন পাকিস্তানের কুলসন সেমাই বিক্রি করতেন। এখন কুলসনের পাশাপাশি স্থানীয় এমএম খান ফুড প্রডাক্টসের সেমাই বিক্রি করছেন। ক্রেতাদের কাছে এর বেশ চাহিদাও রয়েছে।  

এমএম খান ফুড প্রডাক্টস কারখানার ব্যবস্থাপক সুদীপ বিশ্বাস জানালেন, তারা সারাবছরই সেমাই উৎপাদন করেন। তবে দুই ঈদে বাজারে চাহিদা থাকায় উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। বিশেষ করে ঈদুল ফিতরের সময় সর্বোচ্চ পরিমাণ সেমাই উৎপাদন হয়। তাদের কারখানা থেকে কিশোরগঞ্জ জেলার চাহিদা মিটিয়ে ময়মনসিংহেও সেমাই সরবরাহ করা হয়। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাজারে সেমাই বিক্রিতে বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে প্রতিযোগিতার মুখে পড়তে হয় তাদের। এ কারণে ম্যাকের কারখানায় উৎপাদিত সেমাইয়ে স্বাদ ও গুণগত মানের দিকে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক শ রগঞ জ করছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব

রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক। 

 এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”

বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।” 

চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”

ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।” 

হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে। 

গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।

কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”

ঢাকা/রাঙামাটি/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে নোয়াখালীতে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
  • নতুন হত্যা মামলায় আমু, আনিসুল, রাজ্জাকসহ ৮ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হলো
  • ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
  • বিদেশি সংস্থার এজেন্ট দাবি করা এনায়েত করিমের ৪৮ ঘণ্টার রিমান্ড মঞ্জুর