করমুক্ত আয়সীমা ৫ লাখ টাকা করার সুপারিশ
Published: 20th, March 2025 GMT
ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের জন্য বার্ষিক করমুক্ত আয়সীমা পাঁচ লাখ টাকার প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)। এ ছাড়া প্রাইভেট কোম্পানির ক্ষেত্রে করপোরেট কর শর্তহীনভাবে ২৫ শতাংশ এবং শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির ক্ষেত্রে তা ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছে।
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে প্রাক্–বাজেট আলোচনায় বিসিআইয়ের পক্ষ থেকে এই সুপারিশ করা হয়। বিসিআইয়ের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন সংগঠনের সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী। এনবিআর সভাপতি আবদুর রহমান খান এতে সভাপতিত্ব করেন।
বিসিআই তাদের বাজেট প্রস্তাবে বলেছে, ভারতে বার্ষিক করমুক্ত আয়সীমা ১২ লাখ রুপি। মূল্যস্ফীতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বিবেচনায় ২০২৫-২৬ করবছরের জন্য বর্তমান ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের করমুক্ত সীমা ও বিদ্যমান আয়করের হার পুনর্নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে এ সংগঠন।
বিসিআই মনে করে, এ দেশে উচ্চ করহার নতুন বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত করে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে ব্যবসাবান্ধব ও সহনশীল করপোরেট করের হার নির্ধারণ জরুরি। বাংলাদেশের করপোরেট করহার আশপাশের দেশের তুলনায় অনেক বেশি। বিসিআই কোনো শর্ত ছাড়াই আড়াই শতাংশ হারে কমিয়ে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির জন্য ২৫ শতাংশ এবং পাবলিক ট্রেডেড কোম্পানির জন্য ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছে বিসিআই। এতে স্থানীয় পর্যায়ে ব্যবসা উৎসাহিত হবে, দেশে বিনিয়োগ বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
অন্য সুপারিশএনবিআরে জমা দেওয়া বাজেট প্রস্তাবে একাধিক প্রস্তাব করেছে বিসিআই। এর মধ্যে অন্যতম হলো বার্ষিক টার্নওভার ১৫ কোটি টাকার নিচে এমন প্রতিষ্ঠানকে ৮ বছর মেয়াদ পর্যন্ত আয়কর অবকাশ এবং বিশেষ রেয়াতি ১ শতাংশ হারে টার্নওভার কর; ১ থেকে ৩ শতাংশ হারে পণ্যের কাঁচামাল, উপকরণ, মেশিনারিজ ও যন্ত্রপাতি আমদানির সুবিধা দেওয়া; যেসব খাতের বার্ষিক টার্নওভার ৫০ কোটি টাকার নিচে তাদের পণ্য খাতে ৩ শতাংশ ও সেবা খাতে ৫ শতাংশ রেয়াতি হারে মূসক এবং ১ থেকে ৩ শতাংশ হারে পণ্যের কাঁচামাল, উপকরণ, মেশিনারিজ ও যন্ত্রপাতি আমদানির সুবিধা দেওয়া; যাদের বার্ষিক টার্নওভার ৩০০ কোটি টাকার নিচে তাদের পণ্য খাতে ৪ শতাংশ ও সেবা খাতে ৫ শতাংশ রেয়াতি হারে মূসক এবং ১ থেকে ৩ শতাংশ হারে পণ্যের কাঁচামাল, উপকরণ, মেশিনারিজ ও যন্ত্রপাতি আমদানির সুবিধা দেওয়া; যাদের বার্ষিক টার্নওভার ৩০০ কোটি টাকার ওপরে তাদের ওপর সাধারণভাবে প্রযোজ্য মূসকের হার এবং ১ থেকে ৩ শতাংশ হারে পণ্যের কাঁচামাল, উপকরণ, মেশিনারিজ ও যন্ত্রপাতি আমদানির সুবিধা দেওয়া। এ ছাড়া অনুন্নত এলাকার শিল্প খাতকে ৮ কর মেয়াদ পর্যন্ত বিশেষ কর অবকাশ এবং শ্রেণিভেদে বিশেষ রেয়াতি ৩ শতাংশ হারে টার্নওভার কর এবং ১ থেকে ৩ শতাংশ হারে পণ্যের কাঁচামাল, উপকরণ, মেশিনারিজ ও যন্ত্রপাতি আমদানির সুবিধা দেওয়া।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আমদ ন র স ব ধ করম ক ত র জন য ব স আই
এছাড়াও পড়ুন:
শরীয়তপুরে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ সন্দেহে তরুণ গ্রেপ্তার, বোমা তৈরির উপকরণ জব্দ
শরীয়তপুরের ডামুড্যা পৌরসভার বিশাকুড়ি এলাকা থেকে জঙ্গি সন্দেহে পুলিশ এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে। পরে ওই তরুণের বাসা থেকে বোমা তৈরির উপকরণ উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। গত শনিবার সন্ধ্যায় আফতাব উদ্দিন ওরফে আবির (১৯) নামের ওই তরুণকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ সোমবার তিনি শরীয়তপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
পুলিশ জানায়, আফতাব উদ্দিনের জঙ্গিসংশ্লিষ্টতা রয়েছে ও নাশকতা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, এমন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার সন্ধ্যায় তাকে বাড়ির সামনের সড়ক থেকে আটক করা হয়। এরপর ঢাকা থেকে রাতে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের একটি দল ডামুড্যায় আসে। তারা আফতাব উদ্দিনের বাড়িতে তল্লাশি চালায়। ওই বাড়ি থেকে বোমা তৈরির উপকরণ উদ্ধার করা হয়।
পরের দিন রোববার ডামুড্যা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রিপন বাদী হয়ে ২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় আফতাব উদ্দিনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে শরীয়তপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আনা হয়। আদালতের বিচারকের কাছে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এরপর তাঁকে শরীয়তপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ওই তরুণ অনলাইন মাধ্যমে যুক্ত থেকে জঙ্গিবাদে স্বেচ্ছায় উদ্বুদ্ধ (সেলফ মোটিভেটেড) হওয়ার কথা পুলিশের কাছে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছেন শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘সে কিছু একটা করবে, এমন চেষ্টা করছিল। তার আগেই আমরা তাকে ধরতে সক্ষম হয়েছি। তবে আইএসের সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ আছে কি না, তা নিশ্চিত হতে পারিনি। তবে তার দিকে (আইএস) সে উদ্বুদ্ধ হয়েছে, এমন বলেছে। এ বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।’
ডামুড্যা থানা সূত্র জানায়, ডামুড্যা পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের বিশাকুড়ি এলাকার বাসিন্দা আফতাব উদ্দিন। তিনি ডামুড্যা উপজেলা সদরের পূর্ব ডামুড্যা সরকারি কলেজ থেকে চলতি এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। তাঁর বাবা আবদুল মালেক হাওলাদার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। কয়েক বছর আগে মারা গেছেন।
এ বিষয়ে জানতে আফতাব উদ্দিনের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তাঁরা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
ডামুড্যা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আফতাব উদ্দিন নামের এক শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়। পরে তাঁর বাড়ি তল্লাশি করলে বোমা তৈরির উপকরণ পাওয়া যায়। সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলায় তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে তিনি কী বলেছেন, তা তদন্তের স্বার্থে এ মুহূর্তে বলা যাবে না।