রাষ্ট্র সংস্কারে ১২০টি প্রস্তাবে একমত এলডিপি: কর্নেল অলি
Published: 20th, March 2025 GMT
রাষ্ট্র সংস্কারে গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে ১৬৬টি প্রশ্নমালার যে স্প্রেডশিট পাঠিয়েছে তার মধ্যে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) ১২০টিতে একমত বলে জানিয়েছেন দলটির প্রেসিডেন্ট কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ।
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবন এলাকার এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপে এ কথা জানান তিনি।
অলি আহমেদ জানান, ১৬৬টি প্রস্তাবের মধ্যে তারা ১২০টিতে একমত প্রকাশ করেছেন, বাকী ৪২টিতে একমত নয়, দুইটিতে আংশিকভাবে একমত এবং দুইটি অস্পষ্ট।
সংবিধান সংস্কার সংক্রান্ত ৭০টি প্রস্তাবের মধ্যে ৫১টিতে এলডিপি একমত, ১৬টিতে একমত নয়, একটি আংশিকভাবে একমত এবং দুটো প্রস্তাব অস্পষ্ট বলে মনে করে দলটি।
বিচার বিভাগের ২৩টির মধ্যে ২২টিতে একমত আর একটিতে আংশিকভাবে একমত, দুর্নীতি দমনের ২০টির মধ্যে সবগুলোতে একমত। জনপ্রশাসনে ২৬টির মধ্যে ১১টিতে একমত, ১৫টিতে একমত নয়। নির্বাচন সংস্কারের ২৭ প্রস্তাবের মধ্যে ১৬টিতে একমত এবং ১১টিতে দলটি একমত নয় বলে কমিশনকে জানিয়েছেন এলডিপি।
অলি আহমেদ বলেন, সবগুলো সুপারিশের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের সুপারিশ দুর্বল ছিল। তারা অতীতের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যে সংলাপ করেছিল তার কাগজ সংগ্রহ করা উচিত ছিল। আপনি যত কিছুই করেন না কেন নির্বাচন সুষ্ঠু করতে পারবেন না যদি না দুইজন লোক কাজ না করে, একজন ওসি, আরেকজন হল ইউএনও।
এলডিপির মতামতের কাগজ কাউকে না দিতে প্রস্তাব করেন অলি আহমেদ। জবাবে আলী রীয়াজ বলে আমরা কাউকে দেব না।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষে বৈঠক নেতৃত্ব দিচ্ছেন সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য সফররাজ হোসেন,এমদাদুল হক, ড.
এলডিপির মহাসচিব রেদোয়ান আহমদসহ আটজন উপস্থিত আছন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
লন্ডন বৈঠকে বিচার ও সংস্কারের বিষয়টি নির্বাচনের মতো গুরুত্ব না পাওয়া অত্যন্ত হতাশাজনক: এনসিপি
লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ সংক্রান্ত আলোচনা যতটুকু গুরুত্ব পেয়েছে, বিচার ও সংস্কার ততটুকু গুরুত্ব পায়নি বলে মনে করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বিষয়টিকে ‘অত্যন্ত হতাশাজনক’ বলেছে দলটি।
আজ শুক্রবার রাতে এনসিপির এক বিবৃতিতে এই প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহউদ্দিন সিফাত বিবৃতিটি পাঠিয়েছেন।
এনসিপির বিবৃতিতে বলা হয়, রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা হিসেবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের আলোচনাকে ইতিবাচকভাবে দেখছে এনসিপি। এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে লন্ডনে অনুষ্ঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যকার বৈঠকটি ‘সংসদ নির্বাচন’ বিষয়ে দলটিকে আস্থায় আনতে সফল হয়েছে সরকার। জাতীয় ঐক্য, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং রাষ্ট্র সংস্কারের প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা জরুরি। কিন্তু বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ সংক্রান্ত আলোচনা যতটুকু গুরুত্ব পেয়েছে, অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে নাগরিকদের প্রধান দাবি তথা বিচার ও সংস্কার ততটুকু গুরুত্ব পায়নি। এটা অত্যন্ত হতাশাজনক বলে মনে করে এনসিপি।
নির্বাচন প্রশ্নে সরকার কেবল একটি রাজনৈতিক দলের অবস্থান ও দাবিকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে বলে বারবার প্রতীয়মান হচ্ছে—এ কথা উল্লেখ করে এনসিপি আরও বলেছে, জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, জুলাই সনদ কার্যকর করা এবং বিচারের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ছাড়া জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন গণ-অভ্যুত্থানকে স্রেফ একটি ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে পরিণত করবে এবং রাষ্ট্র বিনির্মাণের জন–আকাঙ্ক্ষাকে অবদমিত করবে।
জনগণের দাবি তথা জুলাই সনদ রচনা ও কার্যকর করার আগে নির্বাচনের কোনো তারিখ ঘোষিত হলে তা জনগণ মেনে নেবে না বলে উল্লেখ করেছে এনসিপি। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘কাজেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সংস্কারের বিষয়গুলোর ব্যাপারে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা ও জুলাই সনদ রচনা এবং কার্যকর করেই আসন্ন জুলাইকে যথাযথ মর্যাদায় স্মরণ করার উদ্যোগ নিতে সরকারকে জোর দাবি জানাচ্ছে এনসিপি।’
জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, মৌলিক সংস্কার বাস্তবায়নে জুলাই সনদ কার্যকর করা ও বিচারের রোডম্যাপ ঘোষণার পরই নির্বাচন সংক্রান্ত আলোচনা চূড়ান্ত হওয়া উচিত বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে এনসিপি।