ভ্যাট আওতা বাড়ানো কার্যক্রম চলছে: এনবিআর চেয়ারম্যান
Published: 22nd, March 2025 GMT
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খান বলেছেন, “আমদের ট্যাক্স-জিডিপি রেশিও পাশ্ববর্তী অন্যান্য দেশের তুলনায় এখনো অনেক কম। রাজস্ব আয় বাড়াতে ভ্যাট আদায়ের আওতা বাড়ানোর কাজ করছে এনবিআর।”
শনিবার (২২ মার্চ) বিকেলে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) কার্যালয়ে অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আহরণ শীর্ষক কর্মশালায় এ কথা বলেন তিনি। ইআরএফ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান র্যাপিডে যৌথভাবে এই কর্মশালার আয়োজন করে।
ইআরএফ সভাপতি দৌলত আক্তার মালার সভাপতিত্বে কর্মশালায় আরো উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলোর হেড অব অনলাইন শওকত হোসেন মাসুম। কর্মশালায় ইআরএফ সদস্যরা অংশ নেন।
আরো পড়ুন:
বাংলাদেশ ঋণগ্রস্ত জাতি হয়ে যাচ্ছে: এনবিআর চেয়ারম্যান
মহাসড়কের হোটেল-রেস্তোরাঁয় ভ্যাট মেশিন বাধ্যতামূলক, লটারি জেতার সুযোগ ভোক্তার
অতীতে ট্যাক্স আদায়ে পলিসি লেভেলে জোর দেওয়া হলেও বাস্তবায়নে জোর দেওয়া হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আয়কর, ভ্যাট ও কাস্টমকে অটোমেশন করতে উদ্যোগ নিয়েছে এনবিআর। এটি বাস্তবায়ন হলে ট্যাক্স নিয়ে বর্তমানে যে ভীতি রয়েছে সেটা কমবে। ভবিষ্যতে আর অফলাইনে রিটার্ন নেওয়া হবে না। যারা ট্যাক্স ফাঁকি দেন, তাদের তদারকির আওতায় আনা হবে এবং যারা ট্যাক্স দেন তারা হয়রানির শিকার হবেন না।”
তিনি বলেন, “রাজস্ব আয়ের প্রধান উৎস হবে ইনকাম ট্যাক্স ও ভ্যাট। আগামী বাজেটে এর প্রতিফলন দেখা যাবে। বড় বাজেট তৈরি করার প্রবণতা কমাতে হবে। আইন তৈরি হয়, তবে বাস্তবায়ন করা হয় না।”
কালো টাকার সুযোগ বন্ধে কাজ চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, “কর সংস্কৃতি গড়ে তুলতে বিভিন্ন খাতের সরকারি সেবা নিশ্চিত করতে হবে।”
আব্দুর রহমান খান বলেন, “ইএফডি যন্ত্র দোকানে আছে, কিন্তু তা ব্যবহার করা হয় না। ব্যবসায়ীরা ভ্যাট দেন না। ভ্যাট দেন ভোক্তারা। অনেক ক্ষেত্রে দোকানদারেরা ভোক্তার কাছ থেকে ভ্যাট নিয়ে জমা দেন না। ফলে ভ্যাট থেকে কাঙ্খিত রাজস্ব আদায় হচ্ছে না। কর প্রশাসনের দুর্বলতা আছে। গত বছর ১ কোটি ১৪ লাখ টিআইএনধারীর রিটার্ন জমা পড়েছে ৪৫ লাখ। এবার ১৫ লাখ অনলাইন রিটার্ন জমা পড়েছে। এদের মধ্যে ১০ লাখই শূন্য রিটার্ন জমা পড়েছে।”
তিনি বলেন, “দুই তৃতীয়াংশ নামমাত্র রিটার্ন জমা দেন। যারা রিটার্ন দেন না, তাদের তেমন সমস্যা হয় না।”
করের আওতা বাড়াতে গ্রাম, মফস্বল এলাকায় ভ্যাট ট্যাক্স আদায় বাড়াতে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলেও জানান এনবিআর চেয়ারম্যান।
কর্মশালায় মূল প্রবন্ধে র্যাপিডের নির্বাহী পরিচালক এম আবু ইউসুফ বলেন, “চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে রাজস্ব ঘাটতি প্রায় ৫৮ হাজার কোটি টাকা। ফলে সংকুচিত হচ্ছে অর্থনীতি। রাজস্ব আদায়ের কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জন করতে না পারলে, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অবকাঠামোসহ উন্নয়ন খাতের নানান ইস্যুতে চাপ বাড়ে। বাজেট কমাতে হয়।”
তিনি বলেন, “সেবা পেলে মানুষ কর দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। এই সংস্কৃতি গড়ে তুলতে বিভিন্ন খাতের সরকারি সেবা নিশ্চিত করতে হবে। আমরা পরোক্ষ করের ওপর নির্ভরশীল। এটা পরিবর্তন করে প্রত্যক্ষ কর অন্তত ৬৫ শতাংশ করা উচিত। কর প্রদানের পদ্ধতিগত জটিলতা দূর করতে হবে। বাজেটে ঘাটতি কমাতে হবে।”
কর্মশালায় আরো উঠে আসে, ঠিকঠাক সরকারি সেবা নিশ্চিত করা যেন মানুষ কর প্রদানে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। পদ্ধতিগত জটিলতা নিরসন আর পুরো অটোমেশন চালুতে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের গুরুত্ব নিয়েও আলোচনা হয়।
ঢাকা/হাসনাত/সাইফ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আজ মুখোমুখি শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান, যে ম্যাচে ঝুলছে বাংলাদেশের ভাগ্য
এশিয়া কাপে আজকের রাত যেন এক নাটকীয় অধ্যায়। ‘বি’ গ্রুপের শেষ ম্যাচে আবুধাবির মাঠে মুখোমুখি হবে শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান। বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায় শুরু হওয়া এই লড়াই কেবল দুই দলের নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের ভাগ্যও। কোটি টাইগার সমর্থক তাই আজ তাকিয়ে থাকবে টিভি পর্দায়। কারণ, এই ম্যাচেই নির্ধারিত হবে, বাংলাদেশ কি সুপার ফোরে উড়াল দেবে, নাকি গ্রুপ পর্বেই শেষ হবে স্বপ্নযাত্রা।
গ্রুপের সমীকরণ এখন টানটান নাটকের মতো। তিন ম্যাচে পূর্ণ ৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে শ্রীলঙ্কা। সমান ৪ পয়েন্ট থাকলেও রান রেটে পিছিয়ে দ্বিতীয় স্থানে বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের ঝুলিতে আছে ২ পয়েন্ট; এক জয় ও এক হারের ফল। হংকং অবশ্য তিন ম্যাচেই হেরে অনেক আগেই বিদায় নিয়েছে।
আরো পড়ুন:
আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান
আরব আমিরাতকে ১৪৭ রানের টার্গেট দিল পাকিস্তান
এখন হিসাবটা এমন—
আফগানিস্তান হেরে গেলে বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবেই সুপার ফোরে।
আফগানিস্তান জিতলে সমীকরণ জটিল হবে। তখন শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের পয়েন্ট সমান ৪ হলেও নেট রান রেটে স্পষ্ট এগিয়ে থাকবে আফগানরা (২.১৫০)। শ্রীলঙ্কার রান রেট ১.৫৪৬, আর বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে -০.২৭০-তে।
অর্থাৎ আফগানিস্তান যদি জেতে, তবে বাংলাদেশকে তাকিয়ে থাকতে হবে এক অসম্ভব সমীকরণের দিকে। সেটা হলো- লঙ্কানদের অন্তত ৭০ রানের ব্যবধানে হারতে হবে এবং তা করতে হবে ৫০ বল হাতে রেখে। অন্যথায় রান রেটের খেলায় পিছিয়েই থাকতে হবে টাইগারদের। তবে বৃষ্টি যদি হানা দেয় কিংবা ম্যাচ কোনো কারণে পরিত্যক্ত হয়, তাহলে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা দু’দলই নিশ্চিতভাবেই চলে যাবে সুপার ফোরে।
ম্যাচকে ঘিরে দুই শিবিরেই চাপ-উত্তেজনার আবহ। আফগানিস্তানের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার গুলবাদিন নাইব মনে করেন, চাপটা আসলে শ্রীলঙ্কার ওপরই বেশি, “আমরা এসব টুর্নামেন্ট খেলতে অভ্যস্ত, আমাদের কোনো চাপ নেই। শ্রীলঙ্কা ভালো দল ঠিকই, তবে তারাও চাপে থাকবে। আমার মনে হয় দারুণ একটা ম্যাচ হবে।”
অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার অলরাউন্ডার দাসুন শানাকা বাংলাদেশ প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “প্রতিটি ম্যাচই আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। হ্যাঁ, বাংলাদেশের সমর্থকরা আমাদের জয়ের জন্য অপেক্ষা করছে। আমরাও জয়ের লক্ষ্যেই মাঠে নামব।”
হংকংয়ের বিপক্ষে জিতলেও শ্রীলঙ্কাকে ঘাম ঝরাতে হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা বলছে, আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়টা সহজ হবে না তাদের জন্যও। শেষ পর্যন্ত কারা হাসবে জয়ের হাসিতে, আর কোন সমীকরণে দাঁড়াবে বাংলাদেশের ভাগ্য; এই প্রশ্নের উত্তরই দেবে আজকের আবুধাবির রাত।
ঢাকা/আমিনুল