ভোলার দক্ষিণ দিঘলদীতে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল পাচার করার সময় ৫০ বস্তা চাল আটক করেছে জনতা। শনিবার ভোররাতে শান্তিরহাট বাজারে চালসহ দুই অটোচালক ও ডিলার প্রতিনিধিকে আটক করে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কাছে তুলে দেন তারা। কিন্তু তিনি ডিলারের গুদাম তালা মেরে চাল বিতরণ সাময়িক বন্ধ রাখলেও চোরাকারবারির সঙ্গে জড়িত ডিলারের প্রতিনিধি ও অটোচালকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে তাদের ছেড়ে দেন। এতে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।  
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের চারটি ওয়ার্ডের সুবিধাভোগীদের জন্য বরাদ্দকৃত ৪৫০ বস্তা (১৩.

৫ টন) চাল  বিতরণের জন্য  শুক্রবার ডিলার মো. হাদিসের শান্তিরহাট বাজারের গুদামে এনে রাখা হয়। গতকাল ভোররাতে গুদাম থেকে গোপনে অটোরকিশায় চাল অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার সময় ৫০ বস্তা চালসহ দুটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও ডিলার প্রতিনিধি ইমতিয়াজ নাহিদকে আটক করেন স্থানীয়রা।
শাহজল, কবির, ফখরুল খন্দকার, সুমন, মন্নান মাঝি, মো. ইউসুফসহ অনেকের অভিযোগ, এ ডিলার আগেও বরাদ্দকৃত চাল সুবিধাভোগীদের না দিয়ে বেশি দামে খোলা বাজারে বিক্রি করেছেন। এর প্রতিবাদ করলে সাধারণ মানুষের সঙ্গে অন্যায় আচরণ করতেন। কিন্তু শুক্রবার সন্ধ্যায় জেলা সদর থেকে চাল এনে শান্তিরহাট গুদামে রাখার পর থেকেই তা নজরদারিতে রাখেন স্থানীয়রা। ভোররাতে গুদাম থেকে গোপনে চাল সরিয়ে নেওয়ার সময় চাল আটক করে কর্তৃপক্ষকে খবর দেন তারা।  
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান ট্যাগ অফিসার আবদুর রাজ্জাক ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবদুল মালেক তালুকদার। তারা অটোরিকশার ৫০ বস্তা চালসহ পুরো চাল (৪৫০ বস্তা) ডিলারের গুদামে তালাবদ্ধ করে বিতরণ কাজ সাময়িক বন্ধ রাখেন। তবে তাৎক্ষণিক কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে ডিলার প্রতিনিধি ও চাল পরিবহন করা অটোচালকদের ছেড়ে দেন। এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেন এলাকাবাসী। তখন পুলিশের একটি দলও ঘটনাস্থলে যায়।  
চাল বিতরণের দায়িত্বে থাকা আবদুর রাজ্জাক বলেন, চাল বিতরণের পূর্বনির্ধারিত সময় অনুযায়ী তারা গিয়ে দেখেন কিছু চাল বাইরে অটোরিকশায়। লোকজন বোরাক ঘিরে রেখেছেন। এরপর আর চাল বিতরণ হয়নি।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবদুল মালেক তালুকদার বলেন, দুটি গাড়িতে ৫০ বস্তা চাল স্থানীয়রা আটকে রাখেন। তবে কী কারণে চাল গুদামের বাইরে এনেছেন ডিলার তার সদুত্তর দিতে পারেননি। আইনগতভাবে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 
ডিলার প্রতিনিধি ও অটোচালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক দাবি করেন, চালের বস্তার হিসাব করার সময় ডিলার প্রতিনিধি ইমতিয়াজ পালিয়ে যান। অটোচালকরা তাঁর আসার আগেই চলে গেছেন। দোষীদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী মামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন ইউএনও মো. আরিফুজ্জামান।
ডিলার প্রতিনিধি ইমতিয়াজ নাহিদের ভাষ্য, তারা একই দিনে দুই স্থান থেকে চাল বিতরণ করতে চেয়েছিলেন। সে কারণে তারা ৫০ বস্তা চাল গুদামের বাইরে এনেছেন।   
দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের ৪, ৫, ৬ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ৪৫০ জন সুবিধাভোগীর জন্য ১৩ দশমিক ৫ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়,
যা শনিবার পরিবারপ্রতি ৩০ কেজি বিতরণের কথা ছিল।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: চ ল ব তরণ ব তরণ র ব যবস থ র সময় উপজ ল চ লসহ

এছাড়াও পড়ুন:

কালিয়াকৈরে বিএনপির কমিটি বাতিলের দাবিতে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ, ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে বিক্ষুব্ধদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। রবিবার (১৫ জুন) সকালে উপজেলার সাহেববাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। দুইপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

বিএনপির নেতা-কর্মীরা জানান, গত ১৪ জুন কালিয়াকৈর উপজেলা, পৌরসভাসহ জেলার আটটি ইউনিটের কমিটি বাতিল করে গাজীপুর জেলা বিএনপি। তৃণমূল নেতাকর্মীদের নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বৈঠক করে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি। পরে শনিবার (১৪) সন্ধ্যায় কালিয়াকৈর উপজেলা ও পৌরসভার কমিটি ঘোষণা করা হয়। ওই কমিটিতে উপজেলার বিএনপির আহ্বায়ক করা হয়েছে মৌচাক ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম সিকদার, সদস্য সচিব করা হয়েছে এম আনোয়ার হোসেনকে। কালিয়াকৈর পৌর বিএনপির আহ্বায়ক করা হয়েছে মামুদ সরকার ও সদস্য সচিব করা হয়েছে মহসিন উজ্জামানকে। 

উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক পারভেজ আহমেদ গ্রুপ কমিটি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন । আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে শনিবার (১৪ জুন) রাতেই বিক্ষোভ মিছিল করে নেতাকর্মীরা। জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ইশরাক আহমেদ সিদ্দিকীর অনুসারীদের দিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন পারভেজ গ্রুপের কর্মীরা।

একই দাবিতে রবিবার (১৫ জুন) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী পারভেজ আহমেদের পক্ষ নিয়ে আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করে। এ সময়ে নতুন কমিটির পক্ষ থেকে আরেকটি মিছিল বের হলে উভয়ের মধ্যে ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া হয়। 

পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বেশ কয়েক রাউন্ড টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে বিক্ষুব্ধদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। খবর পেয়ে সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে এলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। তবে এখনো এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আতঙ্কে রয়েছেন এলাকাবাসী।

কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান জানান, সকাল থেকে ধাওয়া- পাল্টা ধাওয়া হলেও এখনো পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। 
 

ঢাকা/রেজাউল/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ