খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চালসহ জনতার হাতে ৩ জন আটক
Published: 22nd, March 2025 GMT
ভোলার দক্ষিণ দিঘলদীতে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল পাচার করার সময় ৫০ বস্তা চাল আটক করেছে জনতা। শনিবার ভোররাতে শান্তিরহাট বাজারে চালসহ দুই অটোচালক ও ডিলার প্রতিনিধিকে আটক করে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কাছে তুলে দেন তারা। কিন্তু তিনি ডিলারের গুদাম তালা মেরে চাল বিতরণ সাময়িক বন্ধ রাখলেও চোরাকারবারির সঙ্গে জড়িত ডিলারের প্রতিনিধি ও অটোচালকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে তাদের ছেড়ে দেন। এতে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের চারটি ওয়ার্ডের সুবিধাভোগীদের জন্য বরাদ্দকৃত ৪৫০ বস্তা (১৩.
শাহজল, কবির, ফখরুল খন্দকার, সুমন, মন্নান মাঝি, মো. ইউসুফসহ অনেকের অভিযোগ, এ ডিলার আগেও বরাদ্দকৃত চাল সুবিধাভোগীদের না দিয়ে বেশি দামে খোলা বাজারে বিক্রি করেছেন। এর প্রতিবাদ করলে সাধারণ মানুষের সঙ্গে অন্যায় আচরণ করতেন। কিন্তু শুক্রবার সন্ধ্যায় জেলা সদর থেকে চাল এনে শান্তিরহাট গুদামে রাখার পর থেকেই তা নজরদারিতে রাখেন স্থানীয়রা। ভোররাতে গুদাম থেকে গোপনে চাল সরিয়ে নেওয়ার সময় চাল আটক করে কর্তৃপক্ষকে খবর দেন তারা।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান ট্যাগ অফিসার আবদুর রাজ্জাক ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবদুল মালেক তালুকদার। তারা অটোরিকশার ৫০ বস্তা চালসহ পুরো চাল (৪৫০ বস্তা) ডিলারের গুদামে তালাবদ্ধ করে বিতরণ কাজ সাময়িক বন্ধ রাখেন। তবে তাৎক্ষণিক কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে ডিলার প্রতিনিধি ও চাল পরিবহন করা অটোচালকদের ছেড়ে দেন। এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেন এলাকাবাসী। তখন পুলিশের একটি দলও ঘটনাস্থলে যায়।
চাল বিতরণের দায়িত্বে থাকা আবদুর রাজ্জাক বলেন, চাল বিতরণের পূর্বনির্ধারিত সময় অনুযায়ী তারা গিয়ে দেখেন কিছু চাল বাইরে অটোরিকশায়। লোকজন বোরাক ঘিরে রেখেছেন। এরপর আর চাল বিতরণ হয়নি।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবদুল মালেক তালুকদার বলেন, দুটি গাড়িতে ৫০ বস্তা চাল স্থানীয়রা আটকে রাখেন। তবে কী কারণে চাল গুদামের বাইরে এনেছেন ডিলার তার সদুত্তর দিতে পারেননি। আইনগতভাবে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ডিলার প্রতিনিধি ও অটোচালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক দাবি করেন, চালের বস্তার হিসাব করার সময় ডিলার প্রতিনিধি ইমতিয়াজ পালিয়ে যান। অটোচালকরা তাঁর আসার আগেই চলে গেছেন। দোষীদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী মামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন ইউএনও মো. আরিফুজ্জামান।
ডিলার প্রতিনিধি ইমতিয়াজ নাহিদের ভাষ্য, তারা একই দিনে দুই স্থান থেকে চাল বিতরণ করতে চেয়েছিলেন। সে কারণে তারা ৫০ বস্তা চাল গুদামের বাইরে এনেছেন।
দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের ৪, ৫, ৬ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ৪৫০ জন সুবিধাভোগীর জন্য ১৩ দশমিক ৫ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়,
যা শনিবার পরিবারপ্রতি ৩০ কেজি বিতরণের কথা ছিল।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: চ ল ব তরণ ব তরণ র ব যবস থ র সময় উপজ ল চ লসহ
এছাড়াও পড়ুন:
ক্যারিবীয় জাহাজে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩
ক্যারিবীয় সাগরে একটি জাহাজে আবারো হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী। এতে জাহাজটিতে থাকা অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ।
রবিবার (২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।
আরো পড়ুন:
নাইজেরিয়ায় হামলার হুমকি ট্রাম্পের
কানাডার সঙ্গে আলোচনায় না বসার ঘোষণা ট্রাম্পের
শনিবার গভীর রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে হেগসেথ বলেন, “মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই জাহাজটিকে অবৈধ মাদক চোরাচালানে জড়িত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছিল।”
তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক জলসীমায় পরিচালিত এই হামলার সময় জাহাজটিতে ‘তিনজন পুরুষ মাদক-সন্ত্রাসী’ ছিলেন। তিনজনই নিহত হয়েছেন।”
শনিবারের এই হামলার আগে গত বুধবার ক্যারিবীয় সাগরে আরো একটি জাহাজে মার্কিন বাহিনীর হামলায় চারজন নিহত হন। গত সোমবার মার্কিন হামলায় নিহত হন ১৪ জন।
মাদক পাচারের অভিযোগ তুলে সেপ্টেম্বর মাস থেকে এই অঞ্চলে সামরিক অভিযান শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই অভিযানে এখন পর্যন্ত ভেনেজুয়েলা ও কলম্বিয়ার নাগরিকসহ ৬২ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এছাড়া ১৪টি নৌযান এবং একটি সাবমেরিন ধ্বংস হয়েছে।
তবে নৌযানগুলো মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্র এখনও দেয়নি। ফলে হামলার বৈধতা নিয়ে ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে। কিছু আইনজীবী যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন। কলম্বিয়া এবং ভেনেজুয়েলার মতো প্রতিবেশী দেশগুলো এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে।
ভেনেজুয়েলা বলছে, যুক্তরাষ্ট্র দেশটির বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করেছে। ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, দেশটি মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াই করবে।
যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে ক্যারিবীয় অঞ্চলে সাতটি যুদ্ধজাহাজ, একটি সাবমেরিন, ড্রোন এবং যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে এবং মেক্সিকো উপসাগরে মোতায়েন করেছে আরেকটি যুদ্ধজাহাজ।
ট্রাম্প প্রশাসন মাদক চোরাচালানকারী নৌযানের ওপর তাদের হামলাকে ‘আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করেছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের নৌযান সাধারণত আটক করা হয় ও ক্রুদের গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক মার্কিন অভিযানগুলোতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুরো নৌকা ধ্বংস করা হচ্ছে। জাতিসংঘ-নিযুক্ত মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা এই অভিযানগুলোকে ‘বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ড’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
ঢাকা/ফিরোজ