এনসিপির প্রস্তাব: ভোটারের বয়স ১৬, প্রার্থীর ২৩
Published: 23rd, March 2025 GMT
ভোটার হওয়ার বয়স ১৮ থেকে কমিয়ে ১৬ করার প্রস্তাব করবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ন্যূনতম বয়স ২৫ থেকে কমিয়ে ২৩ করারও প্রস্তাব দেবে নতুন দলটি। দলটির ভাষ্য, শেখ হাসিনার পতন ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ঘটিয়েছে জেন-জি। তাদের এত বড় অংশীদারিত্বের পরও শুধু বয়সের কারণে মতামতের প্রতিফলন ঘটাতে না পারাটা হবে অযৌক্তিক।
গতকাল শনিবার রাজধানীর বাংলামটরে এনসিপির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলটির নেতারা এ অবস্থান তুলে ধরেন। আজ রোববার দুপুরে অন্তর্বর্তী সরকারের জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে সংস্কার প্রস্তাব জমা দেবে দলটি।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড.
সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির সংস্কার সমন্বয় কমিটির সমন্বয়ক এবং যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, সংবিধান সংস্কার কমিশন চায় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ন্যূনতম বয়স ২১ বছর। এনসিপি মনে করে, এটা ২৩ বছর হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ভোট দেওয়ার বয়স ১৬ বছর হতে পারে। লাতিন আমেরিকা, অস্ট্রিয়াসহ বিভিন্ন দেশে ১৬ বছর বয়সে ভোট দেওয়ার নজির রয়েছে।
সংস্কার কীভাবে বাস্তবায়ন করা যাবে– এ-সংক্রান্ত বিকল্প দিয়েছে ঐকমত্য কমিশন। সারোয়ার তুষার বলেন, যেসব সংশোধনীর ক্ষেত্রে সংবিধানের সম্পর্ক নেই, সেগুলো নির্বাচনের আগে অধ্যাদেশ কিংবা প্রশাসনিক ব্যবস্থার মাধ্যমে করা যেতে পারে। এনসিপি শুরু থেকেই গণতান্ত্রিক সংবিধান বা সংবিধান পুনর্লেখন চায়। এ জন্য দলটি চাইছে গণপরিষদ নির্বাচন।
সংস্কার প্রস্তাবের ক্ষেত্রে শহীদ পরিবার এবং আহতদের আকাঙ্ক্ষা জানতে চেয়েছেন বলে জানান সারোয়ার তুষার। তিনি বলেন, একজন শহীদের মা বলেছেন– পুলিশ যেন কোনো আন্দোলনে গুলি চালাতে না পারে। এ মতামতের প্রতিফলন ঘটানোর চেষ্টা করবে এনসিপি।
১৬৬ সুপারিশের বিষয়ে এনসিপি বলছে, কোনো ক্ষেত্রে আমরা পুরোপুরি, কোনো ক্ষেত্রে আংশিক, কিছু ক্ষেত্রে আমরা একমত হতে পারিনি। আবার কিছু ক্ষেত্রে বাড়তি মন্তব্য প্রয়োজন মনে হয়েছে। তা আমরা বিস্তারিত লিখিতভাবে জমা দেব।
সারোয়ার তুষার বলেন, ১৬৬ সুপারিশের মধ্যে ১১১টি সংলাপ ছাড়াই বাস্তবায়ন সম্ভব বলে কমিশন মনে করছে। কীসের ভিত্তিতে আলোচনা ছাড়া ১১১টি বাছাই করলেন তারা। এ ছাড়া স্থানীয় সরকার এবং পুলিশ সংস্কার প্রস্তাব কেন স্প্রেডশিটে নেই– তা জানতে চাইব।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক এবং সংস্কার সমন্বয় কমিটির সদস্য মনিরা শারমিন, জাবেদ রাসিন, যুগ্ম সদস্য সচিব সালেহ উদ্দিন সিফাত ও সংগঠক আরমান হোসাইন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এনস প র প রস ত ব এনস প র র বয়স
এছাড়াও পড়ুন:
লন্ডন বৈঠকে বিচার ও সংস্কারের বিষয়টি নির্বাচনের মতো গুরুত্ব না পাওয়া অত্যন্ত হতাশাজনক: এনসিপি
লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ সংক্রান্ত আলোচনা যতটুকু গুরুত্ব পেয়েছে, বিচার ও সংস্কার ততটুকু গুরুত্ব পায়নি বলে মনে করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বিষয়টিকে ‘অত্যন্ত হতাশাজনক’ বলেছে দলটি।
আজ শুক্রবার রাতে এনসিপির এক বিবৃতিতে এই প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহউদ্দিন সিফাত বিবৃতিটি পাঠিয়েছেন।
এনসিপির বিবৃতিতে বলা হয়, রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা হিসেবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের আলোচনাকে ইতিবাচকভাবে দেখছে এনসিপি। এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে লন্ডনে অনুষ্ঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যকার বৈঠকটি ‘সংসদ নির্বাচন’ বিষয়ে দলটিকে আস্থায় আনতে সফল হয়েছে সরকার। জাতীয় ঐক্য, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং রাষ্ট্র সংস্কারের প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা জরুরি। কিন্তু বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ সংক্রান্ত আলোচনা যতটুকু গুরুত্ব পেয়েছে, অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে নাগরিকদের প্রধান দাবি তথা বিচার ও সংস্কার ততটুকু গুরুত্ব পায়নি। এটা অত্যন্ত হতাশাজনক বলে মনে করে এনসিপি।
নির্বাচন প্রশ্নে সরকার কেবল একটি রাজনৈতিক দলের অবস্থান ও দাবিকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে বলে বারবার প্রতীয়মান হচ্ছে—এ কথা উল্লেখ করে এনসিপি আরও বলেছে, জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, জুলাই সনদ কার্যকর করা এবং বিচারের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ছাড়া জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন গণ-অভ্যুত্থানকে স্রেফ একটি ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে পরিণত করবে এবং রাষ্ট্র বিনির্মাণের জন–আকাঙ্ক্ষাকে অবদমিত করবে।
জনগণের দাবি তথা জুলাই সনদ রচনা ও কার্যকর করার আগে নির্বাচনের কোনো তারিখ ঘোষিত হলে তা জনগণ মেনে নেবে না বলে উল্লেখ করেছে এনসিপি। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘কাজেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সংস্কারের বিষয়গুলোর ব্যাপারে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা ও জুলাই সনদ রচনা এবং কার্যকর করেই আসন্ন জুলাইকে যথাযথ মর্যাদায় স্মরণ করার উদ্যোগ নিতে সরকারকে জোর দাবি জানাচ্ছে এনসিপি।’
জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, মৌলিক সংস্কার বাস্তবায়নে জুলাই সনদ কার্যকর করা ও বিচারের রোডম্যাপ ঘোষণার পরই নির্বাচন সংক্রান্ত আলোচনা চূড়ান্ত হওয়া উচিত বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে এনসিপি।