মনিকা ইসলাম, গ্রুপ ডিরেক্টর, যমুনা গ্রুপ

প্রশ্ন: যমুনা এসির বিশেষ বৈশিষ্ট্য ও সুবিধা কী?

মনিকা ইসলাম: মানুষের জীবনমানের উন্নতি, ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি আর সামগ্রিক বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনার উন্নতির ফলে এসির ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। আর এই চাহিদার কথা মাথায় রেখে যমুনা অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সুবিধা–সংবলিত এসি বাজারে এনেছে। এরই মধ্যে আমরা ফাইভ ডি, এআই ইনভার্টার প্রযুক্তির এসি বাজারজাতকরণ করেছি। 

প্রশ্ন: বাজারে আপনাদের অবস্থান কেমন?

মনিকা ইসলাম: বাজারে যমুনা এসির একটি শক্তিশালী অবস্থান রয়েছে। হোম অ্যাপ্লায়েন্স ব্যবসায় আমাদের কোম্পানিগুলো দুই দশকের বেশি সময় ধরে ব্যবসা পরিচালনা করছে। কিন্তু ভালো মানের পণ্যের সরবরাহের ঘাটতি থেকেই আমাদের গ্রুপের প্রয়াত সম্মানিত চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম মনে করলেন, ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে জনগণের দুয়ারে সেরা পণ্যটি পৌঁছে দিতে হবে। সে লক্ষ্যে যমুনা গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান যমুনা ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড অটোমোবাইলস লিমিটেড ২০১৪ সালে বৃহৎ পরিসরে ইলেকট্রনিকস হোম অ্যাপ্লায়েন্স উৎপাদন শুরু করে। আমাদের অত্যাধুনিক কারখানাটি বিশ্বমানের যমুনা এসি তৈরি করে, যা বৈশ্বিক ব্র্যান্ডগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে পারে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, আধুনিক যন্ত্রপাতি, উন্নত কাঁচামাল এবং অবিরাম উদ্ভাবন এবং উৎকর্ষের ফলে যমুনা এসি আজ দেশসেরা ব্র্যান্ড।  

প্রশ্ন: এসিশিল্পে প্রধান সমস্যা কী দেখেন?

মনিকা ইসলাম: আমাদের দেশের যেকোনো শিল্পের বড় প্রতিবন্ধকতা অবকাঠামোগত উন্নয়ন, সঠিক পরিকল্পনা, সরকারি নীতিমালা ও এর বাস্তবায়ন। একসময়ের পুরোপুরি আমদানিনির্ভর এই শিল্প বর্তমানে দেশীয় উদ্যোক্তাদের সফল পরিচালনায় শিল্প হিসেবে আমাদের অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রাখছে। স্থানীয় শিল্পকর, ভ্যাট, কাস্টমস শুল্কের বিদ্যমান ব্যবস্থাপনা এই শিল্পের অগ্রগতিকে কিছুটা শ্লথ করেছে। আমরা আশা করব, সরকারি নীতিসহায়তা এ শিল্পের অগ্রগতিকে আরও বেগবান করবে।

প্রশ্ন: এসি এখন কারা কিনছেন?

একটা সময় এসিকে বিলাসী পণ্য হিসেবে বিবেচনা করা হতো। কিন্তু বর্তমানে এটি প্রয়োজনীয় ইলেকট্রনিক পণ্য হয়ে উঠেছে। তা ছাড়া জীবনযাত্রায় মানের উন্নতি আর সামগ্রিক বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনার উন্নতির ফলে শহর থেকে গ্রামাঞ্চলেও এসির ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ, বিদ্যুৎসাশ্রয়ী ইনভার্টার এসিতে বিদ্যুৎ বিল কম হওয়ায় মধ্যবিত্ত এমনকি নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণিও এসি ক্রয় করছে, যা এই শিল্পের জন্য ইতিবাচক। 

প্রশ্ন: বিক্রয়োত্তর সেবা কীভাবে দেন, গ্রাহক সন্তুষ্টি কেমন?

মনিকা ইসলাম: যমুনা ইলেকট্রনিকস গুণে-মানে আজ দেশসেরা ব্যান্ড। সাধারণত হোম অ্যাপ্লায়েন্স উৎপাদনপ্রক্রিয়ায় ৭-১০ শতাংশ ত্রুটি থাকে। কিন্তু বাংলাদেশের একমাত্র ব্র্যান্ড যমুনা, যার উৎপাদনজনিত ত্রুটি ১ শতাংশের নিচে। বিক্রয়–পরবর্তী সেবা ইলেকট্রনিক পণ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দেশব্যাপী বিস্তৃত আমাদের সার্ভিস সেন্টারগুলোয় ক্রেতা সহজে বিক্রয়–পরবর্তী সেবা নিতে পারবেন। তা ছাড়া দেশের গুরুত্বপূর্ণ জেলাগুলোয় আমাদের বিক্রয়–পরবর্তী সেবা দ্রুত ও সহজলভ্য করার জন্য ডেডিকেটেড কল সেন্টার রয়েছে, যেটির মাধ্যমে ক্রেতা সহজে সেবা পেতে পারে।

প্রশ্ন: এসিশিল্পের বিকাশে সবার আগে কী করা দরকার?

মনিকা ইসলাম: এসি একটি বিকাশমান শিল্প। গত কয়েক বছরে তাৎপর্যপূর্ণভাবে বেড়েছে এসি বিক্রি। বাংলাদেশের বড় জনসংখ্যার কারণেও এখানে বড় বাজারে পরিণত হয়েছে। এদিকে দেশের বেশির ভাগ এলাকা বিদ্যুতের আওতায় আসার ফলে গ্রামাঞ্চলেও ইলেকট্রনিক পণ্যের সঙ্গে এসির ব্যবহার বাড়ছে। এসির বাজার একটা সময় পুরোপুরি ছিল আমদানিনির্ভর। যমুনার মতো কোম্পানিগুলো স্থানীয় পর্যায়ে এসি উৎপাদন করে এ আমদানিনির্ভরতা কমিয়েছে। স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো এখন দেশের এসির চাহিদার ৮৫ শতাংশেরও বেশি পূরণ করছে। দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো এসি সংযোজন ও উৎপাদনে ব্যাপক বিনিয়োগ করে যাচ্ছে। প্রণোদনা ও ভর্তুকির পাশাপাশি উৎপাদন ও প্রতিযোগিতার পরিবেশ তৈরির মাধ্যমে এ খাত বিকাশে সরকারের ইতিবাচক ভূমিকা রয়েছে।

প্রশ্ন: এসি নিয়ে আপনাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

মনিকা ইসলাম: বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আমাদের উপমহাদেশে আবহাওয়ার ধরন পরিবর্তন হচ্ছে, যার প্রভাবে প্রতিবছরই বাংলাদেশের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর সঙ্গে দেশের অর্থনীতির অগ্রযাত্রায় সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতাও বাড়ছে। আমাদের এসির ক্রমবর্ধমান চাহিদা, সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আমি বিশ্বাস করি এসির বাজারের একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ রয়েছে।

সাক্ষাৎকার নিয়েছেন: পল্লব মোহাইমেন

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আম দ র এস র ব সরক র ব যবস ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের পরবর্তী শুনানি বুধবার

রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের (রিভিউ) ওপর পরবর্তী শুনানির জন্য আগামীকাল বুধবার দিন রেখেছেন আপিল বিভাগ। আজ মঙ্গলবার শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের বেঞ্চ পরবর্তী ওই দিন ধার্য করেন।

এর আগে গত ১৮ মে শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ শুনানির জন্য ১ জুলাই দিন ধার্য করেছিলেন। ধার্য তারিখে বিষয়টি শুনানির জন্য রিভিউ আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবীর সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ ১৫ জুলাই পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। আজ বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকার ৭ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।

ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স সংশোধন করে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। পরে ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। রায়ে রাষ্ট্রের সাংবিধানিক পদধারীদের পদক্রম ওপরের দিকে রাখা ও অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়। পাশাপাশি জেলা জজদের পদক্রম আট ধাপ উন্নীত করে সচিবদের সমান করা হয়।

আপিল বিভাগের রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতির পদক্রম এক ধাপ উন্নীত করে জাতীয় সংসদের স্পিকারের সমান এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের (স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদক ও মহান স্বাধীনতাসংগ্রামে অংশগ্রহণ করে যে মুক্তিযোদ্ধারা বীর উত্তম খেতাব পেয়েছেন) পদক্রমে যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত বলে উল্লেখ করা হয়।

ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) তৎকালীন চেয়ারম্যান ২০১৭ সালে পৃথক আবেদন করেন। রিভিউ আবেদনে রাষ্ট্রের ৯০ জন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পক্ষভুক্ত হন। পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের ওপর গত ২৭ এপ্রিল শুনানি শুরু হয়।

আজ আদালতে রিভিউ আবেদনকারী মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন শুনানি করেন। রিট আবেদনকারী পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম শুনানিতে অংশ নেন।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী, ১৯৮৬ সালে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরি করে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর একই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর তা জারি করা হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে তা সংশোধন করা হয়।

সর্বশেষ সংশোধন করা হয় ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে। সংশোধিত এই ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরির ক্ষেত্রে সাংবিধানিক পদ, সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত ও সংজ্ঞায়িত পদগুলো প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিচের ক্রমিকে রাখা হয়েছে—এমন উল্লেখ করে এর বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন মহাসচিব মো. আতাউর রহমান ২০০৬ সালে রিট করেন।

রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট আট দফা নির্দেশনাসহ ১৯৮৬ সালের ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স (সংশোধিত) অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ২০১১ সালে আপিল করে। এ আপিলের ওপর শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০১৭ সালে করা আবেদনের ওপর শুনানি চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আসামির কাঠগড়ায় সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের ৪৫ মিনিট
  • পরবর্তী সরকারের পক্ষে এত সহজে সংস্কার আকাঙ্ক্ষাকে উপেক্ষা করা সম্ভব হবে না: আসিফ নজরুল
  • বিসিআইসির নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ
  • এলডিসি উত্তরণের পরবর্তী প্রস্তুতি নিতে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন
  • ৪৪তম বিসিএস: মনোনীত প্রার্থীদের তথ্য চেয়ে পুনরায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
  • ‘আগামীর বাংলাদেশে মিডিয়াকে দালাল হিসেবে দেখতে চাই না’ 
  • ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের পরবর্তী শুনানি বুধবার
  • মাইলস্টোনে দগ্ধ ৩৩ জন এখনো ভর্তি, আইসিইউতে ৩
  • শেখ হাসিনার অডিওগুলো শুনলে বোঝা যায়, তাঁর এখনো প্রতিশোধ নেওয়ার ইচ্ছা আছে: আইন উপদেষ্টা
  • দ্বিতীয় প্রান্তিকে ব্র্যাক ব্যাংকের মুনাফা বেড়েছে