সরকারি নীতিসহায়তা এসিশিল্পের অগ্রগতিকে বেগবান করবে
Published: 23rd, March 2025 GMT
মনিকা ইসলাম, গ্রুপ ডিরেক্টর, যমুনা গ্রুপ
প্রশ্ন: যমুনা এসির বিশেষ বৈশিষ্ট্য ও সুবিধা কী?
মনিকা ইসলাম: মানুষের জীবনমানের উন্নতি, ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি আর সামগ্রিক বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনার উন্নতির ফলে এসির ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। আর এই চাহিদার কথা মাথায় রেখে যমুনা অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সুবিধা–সংবলিত এসি বাজারে এনেছে। এরই মধ্যে আমরা ফাইভ ডি, এআই ইনভার্টার প্রযুক্তির এসি বাজারজাতকরণ করেছি।
প্রশ্ন: বাজারে আপনাদের অবস্থান কেমন?
মনিকা ইসলাম: বাজারে যমুনা এসির একটি শক্তিশালী অবস্থান রয়েছে। হোম অ্যাপ্লায়েন্স ব্যবসায় আমাদের কোম্পানিগুলো দুই দশকের বেশি সময় ধরে ব্যবসা পরিচালনা করছে। কিন্তু ভালো মানের পণ্যের সরবরাহের ঘাটতি থেকেই আমাদের গ্রুপের প্রয়াত সম্মানিত চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম মনে করলেন, ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে জনগণের দুয়ারে সেরা পণ্যটি পৌঁছে দিতে হবে। সে লক্ষ্যে যমুনা গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান যমুনা ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড অটোমোবাইলস লিমিটেড ২০১৪ সালে বৃহৎ পরিসরে ইলেকট্রনিকস হোম অ্যাপ্লায়েন্স উৎপাদন শুরু করে। আমাদের অত্যাধুনিক কারখানাটি বিশ্বমানের যমুনা এসি তৈরি করে, যা বৈশ্বিক ব্র্যান্ডগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে পারে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, আধুনিক যন্ত্রপাতি, উন্নত কাঁচামাল এবং অবিরাম উদ্ভাবন এবং উৎকর্ষের ফলে যমুনা এসি আজ দেশসেরা ব্র্যান্ড।
প্রশ্ন: এসিশিল্পে প্রধান সমস্যা কী দেখেন?
মনিকা ইসলাম: আমাদের দেশের যেকোনো শিল্পের বড় প্রতিবন্ধকতা অবকাঠামোগত উন্নয়ন, সঠিক পরিকল্পনা, সরকারি নীতিমালা ও এর বাস্তবায়ন। একসময়ের পুরোপুরি আমদানিনির্ভর এই শিল্প বর্তমানে দেশীয় উদ্যোক্তাদের সফল পরিচালনায় শিল্প হিসেবে আমাদের অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রাখছে। স্থানীয় শিল্পকর, ভ্যাট, কাস্টমস শুল্কের বিদ্যমান ব্যবস্থাপনা এই শিল্পের অগ্রগতিকে কিছুটা শ্লথ করেছে। আমরা আশা করব, সরকারি নীতিসহায়তা এ শিল্পের অগ্রগতিকে আরও বেগবান করবে।
প্রশ্ন: এসি এখন কারা কিনছেন?
একটা সময় এসিকে বিলাসী পণ্য হিসেবে বিবেচনা করা হতো। কিন্তু বর্তমানে এটি প্রয়োজনীয় ইলেকট্রনিক পণ্য হয়ে উঠেছে। তা ছাড়া জীবনযাত্রায় মানের উন্নতি আর সামগ্রিক বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনার উন্নতির ফলে শহর থেকে গ্রামাঞ্চলেও এসির ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ, বিদ্যুৎসাশ্রয়ী ইনভার্টার এসিতে বিদ্যুৎ বিল কম হওয়ায় মধ্যবিত্ত এমনকি নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণিও এসি ক্রয় করছে, যা এই শিল্পের জন্য ইতিবাচক।
প্রশ্ন: বিক্রয়োত্তর সেবা কীভাবে দেন, গ্রাহক সন্তুষ্টি কেমন?
মনিকা ইসলাম: যমুনা ইলেকট্রনিকস গুণে-মানে আজ দেশসেরা ব্যান্ড। সাধারণত হোম অ্যাপ্লায়েন্স উৎপাদনপ্রক্রিয়ায় ৭-১০ শতাংশ ত্রুটি থাকে। কিন্তু বাংলাদেশের একমাত্র ব্র্যান্ড যমুনা, যার উৎপাদনজনিত ত্রুটি ১ শতাংশের নিচে। বিক্রয়–পরবর্তী সেবা ইলেকট্রনিক পণ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দেশব্যাপী বিস্তৃত আমাদের সার্ভিস সেন্টারগুলোয় ক্রেতা সহজে বিক্রয়–পরবর্তী সেবা নিতে পারবেন। তা ছাড়া দেশের গুরুত্বপূর্ণ জেলাগুলোয় আমাদের বিক্রয়–পরবর্তী সেবা দ্রুত ও সহজলভ্য করার জন্য ডেডিকেটেড কল সেন্টার রয়েছে, যেটির মাধ্যমে ক্রেতা সহজে সেবা পেতে পারে।
প্রশ্ন: এসিশিল্পের বিকাশে সবার আগে কী করা দরকার?
মনিকা ইসলাম: এসি একটি বিকাশমান শিল্প। গত কয়েক বছরে তাৎপর্যপূর্ণভাবে বেড়েছে এসি বিক্রি। বাংলাদেশের বড় জনসংখ্যার কারণেও এখানে বড় বাজারে পরিণত হয়েছে। এদিকে দেশের বেশির ভাগ এলাকা বিদ্যুতের আওতায় আসার ফলে গ্রামাঞ্চলেও ইলেকট্রনিক পণ্যের সঙ্গে এসির ব্যবহার বাড়ছে। এসির বাজার একটা সময় পুরোপুরি ছিল আমদানিনির্ভর। যমুনার মতো কোম্পানিগুলো স্থানীয় পর্যায়ে এসি উৎপাদন করে এ আমদানিনির্ভরতা কমিয়েছে। স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো এখন দেশের এসির চাহিদার ৮৫ শতাংশেরও বেশি পূরণ করছে। দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো এসি সংযোজন ও উৎপাদনে ব্যাপক বিনিয়োগ করে যাচ্ছে। প্রণোদনা ও ভর্তুকির পাশাপাশি উৎপাদন ও প্রতিযোগিতার পরিবেশ তৈরির মাধ্যমে এ খাত বিকাশে সরকারের ইতিবাচক ভূমিকা রয়েছে।
প্রশ্ন: এসি নিয়ে আপনাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
মনিকা ইসলাম: বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আমাদের উপমহাদেশে আবহাওয়ার ধরন পরিবর্তন হচ্ছে, যার প্রভাবে প্রতিবছরই বাংলাদেশের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর সঙ্গে দেশের অর্থনীতির অগ্রযাত্রায় সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতাও বাড়ছে। আমাদের এসির ক্রমবর্ধমান চাহিদা, সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আমি বিশ্বাস করি এসির বাজারের একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ রয়েছে।
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন: পল্লব মোহাইমেন
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আম দ র এস র ব সরক র ব যবস ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
আনচেলত্তিকে বেতনসহ সসম্মানে বিদায় দেবে রিয়াল
মৌসুম শেষে রিয়াল মাদ্রিদের চাকরি হারাচ্ছেন কার্লো আনচেলত্তি। ২৫ মে রিয়ালের লিগ মৌসুম শেষ হবে। এরপরই দুই পক্ষের সমঝোতার ভিত্তিতে ক্লাব ছাড়বেন ইতালিয়ান কোচ ডন কার্লো। তার পরবর্তী গন্তব্য হতে যাচ্ছে ব্রাজিলের ডাগ আউট। সংবাদ মাধ্যম রেলেভো এমনই দাবি করেছে।
ইউরোপের ফুটবলে মৌসুম ধরা হয় এক জুন থেকে অন্য জুন মাস পর্যন্ত। রিয়াল মাদ্রিদ তাকে মৌসুমে ১১ মিলিয়ন ইউরো বেতন দেয়। মে’র শেষে আনচেলত্তি চাকরি ছাড়লেও পুরো মৌসুমের বেতন পাবেন তিনি। ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ তাকে রিয়াল মাদ্রিদের একজন শুভেচ্ছাদূত মনে করেন। সেভাবেই তাকে সসম্মানে ক্লাব ছাড়ার সুযোগ করে দিতে চান।
সংবাদ মাধ্যম রেলেভো দাবি করেছে, ব্রাজিলের কোচ হওয়ার প্রশ্নে দুই পক্ষের আলাপ অনেকটাই এগিয়ে গেছে। ৪ ও ৯ জুনের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে সেলেসাওদের ডাগ আউটে দেখা যাবে ডন কার্লোকে। তবে এখনো চূড়ান্ত হয়নি কোন কিছুই।
ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশন আগেই জানিয়ে দিয়েছে, জুনের আগে জাতীয় দলের পরবর্তী কোচের নাম ঘোষণা করতে চায় তারা। রিয়াল মাদ্রিদে কার্লো আনচেলত্তির অবস্থা নড়বড়ে হওয়ায় অপেক্ষা করেছে সিবিএফ। তাই বলে কোন ভাবেই ক্লাব বিশ্বকাপ পর্যন্ত অপেক্ষা করবে না তারা। আগামী জুন-জুলাইয়ে হবে ক্লাব বিশ্বকাপ।
আগামী দুই বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচের জন্য ১৮ মে দল ঘোষণা করতে হবে ব্রাজিলের। সিবিএফ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় দল ঘোষণা করতে চায় বলে দাবি করেছে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম। তবে দল ঘোষণা সম্পর্কিত আলোচনায় নাকি যুক্ত থাকবেন আনচেলত্তি। স্কাই স্পোর্টস অবশ্য দাবি করেছে, আগামী এল ক্লাসিকোর পরই মাদ্রিদ ছাড়বেন ডন কার্লো।