কয়েক দিন পরেই মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। প্রতিবছর ঈদে নাড়ির টানে বাড়ি ফেরে লাখ লাখ মানুষ। অপেক্ষাকৃত আরামদায়ক হওয়ায় অনেকেই যাতায়াতের মাধ্যম হিসেবে ট্রেনকে বেছে নেন। সোমবার (২৪ মার্চ) শুরু হয়েছে ট্রেনের ঈদযাত্রা।
ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে টার্মিনালে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। শেষ হয়েছে ঈদ উপলক্ষে যাবতীয় প্রস্তুতি।
ঈদকে সামনে রেখে অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু করেছিল বাংলাদেশ রেলওয়ে। গত ১৪ মার্চ যারা টিকিট কিনেছিলেন, তারা আজ ভ্রমণ করবেন।
যাত্রীদের বাড়তি চাপ সামাল দিতে সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করেছে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন কর্তৃপক্ষ। ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার শাহাদাত হোসেন বলেন, “ঈদযাত্রা নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে স্টেশন কর্তৃপক্ষ সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে। টিকিটবিহীন যাত্রী ঠেকাতে টিটিরা যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া র্যাব, পুলিশ, আরএনবি, জিআরপির কন্ট্রোল রুম থাকবে। দুর্ঘটনা এড়াতে ফায়ার সার্ভিস থাকবে। যাত্রীদের কেউ অসুস্থ হলে যেন দ্রুত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা যায় এজন্য মেডিকেল ক্যাম্প থাকবে।”
বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঈদের চাঁদ দেখার ওপরে ৩১ মার্চ এবং ১ ও ২ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হবে। ঈদযাত্রায় এবার প্রতিদিন ঢাকা থেকে ৩৫ হাজার ৩১৫টি অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হয়েছে।
বিগত বছরগুলোতে ঈদযাত্রায় ৮ থেকে ১০ জোড়া বিশেষ ট্রেন চালাতো বাংলাদেশ রেলওয়ে। কিন্তু এবার সেটি কমিয়ে ৫ জোড়া করা হয়েছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, চট্টগ্রাম-চাঁদপুর-চট্টগ্রাম রুটে চাঁদপুর ঈদ স্পেশাল ১ ও ২ নামে দুটি একজোড়া ট্রেন চালানো হবে; ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ-ঢাকা রুটে দেওয়ানগঞ্জ ঈদ স্পেশাল ৩ ও ৪ নামে একজোড়া ট্রেন চালানো হবে; ভৈরববাজার-কিশোরগঞ্জ-ভৈরববাজার রুটে শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল ৫ ও ৬ নামে একজোড়া ট্রেন চালানো হবে; ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ রুটে শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল ৭ ও ৮ নামে একজোড়া ট্রেন চালানো হবে এবং জয়দেবপুর-পার্বতীপুর-জয়দেবপুর রুটে পাবর্তীপুর ঈদ স্পেশাল ৯ ও ১০ নামে একজোড়া ট্রেন চালানো হবে।
এছাড়া, ঈদে অতিরিক্ত চাহিদা মেটানোর জন্য মোট ৪৪টি (পাহাড়তলী ওয়ার্কশপ থেকে ২৮টি মিটারগেজ ও সৈয়দপুর ওয়ার্কশপ থেকে ৩৬টি ব্রডগেজ) যাত্রীবাহী কোচ সার্ভিসে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। অতিরিক্ত চাহিদা মেটানোর জন্য মোট ১৯টি (মিটারগেজ ১৪টি ও ব্রডগেজ থেকে ৫টি) লোকোমোটিভ যাত্রীবাহী ট্রেন ব্যবহারের পরিকল্পনাও হাতে নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে চলাচল করা সব আন্তঃনগর ট্রেনের ডে-অফ (সাপ্তাহিক ছুটি) বাতিল করা হয়েছে। ২৭ মার্চ থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত এসব ট্রেনের কোনো ডে-অফ থাকবে না। ঈদের পরে যথারীতি সাপ্তাহিক ডে-অফ কার্যকর থাকবে। এছাড়া, ঈদের দিন কোনো আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করবে না।
ঈদ ফিরতি যাত্রার টিকিট মিলবে আজ: এদিকে ঈদ ফিরতি যাত্রার আন্তনগর ট্রেনের ৩ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হবে আজ ২৪ মার্চ; ৪ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হবে ২৫ মার্চ; ৫ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হবে ২৬ মার্চ; ৬ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হবে ২৭ মার্চ; ৭ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হবে ২৮ মার্চ; ৮ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হবে ২৯ মার্চ এবং ৯ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হবে ৩০ মার্চ।
ঢাকা/হাসান/ইভা
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল দ শ র লওয় ঈদ স প শ ল ঈদয ত র
এছাড়াও পড়ুন:
দিনাজপুর সীমান্তে গভীর রাতে আলো নিভিয়ে ১৫ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ
দিনাজপুরে বিরামপুর সীমান্ত দিয়ে ৯ শিশুসহ ১৫ জন জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। গতকাল বৃহস্পতিবার গভীর রাতে উপজেলার বিনাইল ইউনিয়নের অচিন্তপুর সীমান্ত এলাকা দিয়ে তাঁদের বাংলাদেশে পাঠানো হয়।
বিজিবির ফুলবাড়ী ২৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ বি এম জাহিদুল করিম প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জাহিদুল করিম জানান, গতকাল রাত আড়াইটার দিকে অচিন্তপুর সীমান্তের ২৮৫ নম্বর সীমানা পিলার এলাকায় হঠাৎ আলো নিভিয়ে দেয় বিএসএফ। এ সময় সেখানে বিজিবি সদস্যরা নিয়মিত টহলে ছিলেন। একপর্যায়ে বিএসএফ সদস্যরা ১৫ জনকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঠেলে দেন। পরে বিজিবি ২৯ ফুলবাড়ী ব্যাটালিয়নের আওতায় অচিন্তপুর বিওপি ক্যাম্পের সদস্যরা তাঁদের আটক করে বিজিবি ক্যাম্পে নিয়ে আসেন। আটক ১৫ জনের মধ্যে ৩ জন নারী ও ৩ জন পুরুষ, বাকিরা শিশু। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা সবাই নড়াইলের বাসিন্দা বলে জানিয়েছেন। তাঁদের দাবি, ভারত থেকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানোর কয়েকজনের কাছ থেকে ব্যবহৃত মুঠোফোন ও নগদ অর্থ কেড়ে নেন বিএসএফ সদস্যরা।
বিজিবি জানায়, ওই ১৫ জন বর্তমানে অচিন্তপুর বিওপি ক্যাম্পে অবস্থান করছেন। তাঁদের বিষয়ে পরবর্তী আইনগত কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
এর আগে বুধবার রাত থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত সিলেট, সুনামগঞ্জ, লালমনিরহাট ও ময়মনসিংহের সীমান্ত দিয়ে ৮৬ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। সিলেটের জৈন্তাপুর ও কোম্পানীগঞ্জ, সুনামগঞ্জের ছাতক, লালমনিরহাটের পাটগ্রাম ও ময়মনসিংহের ধোবাউড়া সীমান্ত দিয়ে তাঁদের ঠেলে পাঠানো হয়। তাঁদের আটক করেছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা। বিজিবির সদর দপ্তর সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, গত ৭ মে থেকে ৩ জুন পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ১ হাজার ২১০ জনকে পুশ–ইন করেছে ভারত।