কুমিল্লায় বিএনপির সাংগঠনিক সভায় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ১৫ জন আহত
Published: 24th, March 2025 GMT
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বিএনপির সাংগঠনিক সভাকে কেন্দ্র করে দলের দুটি পক্ষের নেতা-কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ইটপাটকেল ও চেয়ার নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। সোমবার দুপুরে চৌদ্দগ্রাম পৌর মিলনায়তনে উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সভা চলাকালে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার সময় কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকারিয়া তাহের (সুমন), সদস্যসচিব আশিকুর রহমান মাহমুদসহ (ওয়াসিম) জ্যেষ্ঠ নেতারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার কারণে বেশ কিছুক্ষণ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। এ সময় বাজারের ব্যবসায়ী ও মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের ভাষ্য, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও উপজেলা বিএনপির সদ্য সাবেক আহ্বায়ক কামরুল হুদার অনুসারীদের সঙ্গে দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সাজেদুর রহমান মোল্লা (হিরণ) ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক তোফায়েল হোসেনের (জুয়েল) অনুসারীদের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। যদিও কামরুল হুদার দাবি, সংঘর্ষে তাঁর কোনো নেতা-কর্মী জড়িত ছিলেন না। তবে বিএনপি নেতা সাজেদুর রহমান মোল্লা ও যুবদল নেতা তোফায়েল হোসেন এ ঘটনার জন্য কামরুল হুদার নেতা-কর্মীদের দায়ী করেছেন।
তোফায়েল হোসেন বলেন, ‘উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সভায় কামরুল হুদার গ্রুপ ছাড়া যাতে অন্য নেতা-কর্মী প্রবেশ করতে না পারে, এ জন্য কামরুল হুদার লোকজন গেটে পাহারা বসায়। আমরা নেতা-কর্মীদের নিয়ে সভাস্থলে প্রবেশের চেষ্টা করলে হকিস্টিক, চায়নিজ কুড়ালসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করে কামরুল হুদার অনুসারীরা। এতে আমাদের অন্তত ১৫ জন নেতা-কর্মী আহত হয়। অতর্কিত হামলায় আমরা সভাস্থলে প্রবেশ করতে না পেরে চলে আসি।’
সাজেদুর রহমান মোল্লা বলেন, ‘নেতা-কর্মীদের নিয়ে আমি অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশের চেষ্টা করলে তারা (কামরুল হুদার লোকজন) আমাকে লাঞ্ছিত করে। এ ছাড়া আমার নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করে। এতে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়েছে। আমি সভাস্থলে প্রবেশ করতে না পেরে স্থানীয় আবুল খায়ের মার্কেটের সামনে এসে নেতা-কর্মীদের নিয়ে অবস্থান করি। কিছুক্ষণ পর সেখানেও আমার ওপর হামলা করে কামরুল হুদার লোকেরা। আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও উপজেলা বিএনপির সদ্য সাবেক আহ্বায়ক কামরুল হুদা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা এসব বিষয়ে কিছুই জানি না। যখন ঘটনা ঘটে তখন আমরা সভাস্থলে। ওই সময় জেলা বিএনপির সিনিয়র নেতারা বক্তব্য দিচ্ছিলেন। আমার কোনো নেতা-কর্মী এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। কার ব্যানার আর ফেস্টুন ওপরে থাকবে—এ নিয়ে বিরোধে তারা নিজেরাই সংঘর্ষে জড়িয়েছে বলে শুনেছি। সভাস্থলে কিছু হয়নি, যা হয়েছে বাইরে হয়েছে। আর এসব ঘটনার পেছনে অন্য দলের ইন্ধন আছে। তারাই বিএনপিকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে।’
চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিলাল উদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে জানান, বিএনপির সাংগঠনিক সভায় দুই পক্ষের মধ্যে তর্কাতর্কির ঘটনা তিনি শুনেছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে। এ ঘটনায় কোনো পক্ষ অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র রহম ন ম ব এনপ র স কর ম দ র প রব শ স ঘর ষ এ ঘটন উপজ ল ঘটন র র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
ক্যারিবীয় জাহাজে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩
ক্যারিবীয় সাগরে একটি জাহাজে আবারো হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী। এতে জাহাজটিতে থাকা অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ।
রবিবার (২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।
আরো পড়ুন:
নাইজেরিয়ায় হামলার হুমকি ট্রাম্পের
কানাডার সঙ্গে আলোচনায় না বসার ঘোষণা ট্রাম্পের
শনিবার গভীর রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে হেগসেথ বলেন, “মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই জাহাজটিকে অবৈধ মাদক চোরাচালানে জড়িত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছিল।”
তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক জলসীমায় পরিচালিত এই হামলার সময় জাহাজটিতে ‘তিনজন পুরুষ মাদক-সন্ত্রাসী’ ছিলেন। তিনজনই নিহত হয়েছেন।”
শনিবারের এই হামলার আগে গত বুধবার ক্যারিবীয় সাগরে আরো একটি জাহাজে মার্কিন বাহিনীর হামলায় চারজন নিহত হন। গত সোমবার মার্কিন হামলায় নিহত হন ১৪ জন।
মাদক পাচারের অভিযোগ তুলে সেপ্টেম্বর মাস থেকে এই অঞ্চলে সামরিক অভিযান শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই অভিযানে এখন পর্যন্ত ভেনেজুয়েলা ও কলম্বিয়ার নাগরিকসহ ৬২ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এছাড়া ১৪টি নৌযান এবং একটি সাবমেরিন ধ্বংস হয়েছে।
তবে নৌযানগুলো মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্র এখনও দেয়নি। ফলে হামলার বৈধতা নিয়ে ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে। কিছু আইনজীবী যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন। কলম্বিয়া এবং ভেনেজুয়েলার মতো প্রতিবেশী দেশগুলো এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে।
ভেনেজুয়েলা বলছে, যুক্তরাষ্ট্র দেশটির বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করেছে। ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, দেশটি মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াই করবে।
যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে ক্যারিবীয় অঞ্চলে সাতটি যুদ্ধজাহাজ, একটি সাবমেরিন, ড্রোন এবং যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে এবং মেক্সিকো উপসাগরে মোতায়েন করেছে আরেকটি যুদ্ধজাহাজ।
ট্রাম্প প্রশাসন মাদক চোরাচালানকারী নৌযানের ওপর তাদের হামলাকে ‘আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করেছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের নৌযান সাধারণত আটক করা হয় ও ক্রুদের গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক মার্কিন অভিযানগুলোতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুরো নৌকা ধ্বংস করা হচ্ছে। জাতিসংঘ-নিযুক্ত মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা এই অভিযানগুলোকে ‘বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ড’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
ঢাকা/ফিরোজ