ফটকের সামনে মাটির স্তূপ। সেখানে পড়ে আছে ময়লা–আবর্জনা ও বৈদ্যুতিক তার। ভেতরে দুটি শৌচাগারের কমোড ভেঙে পড়েছে। বাইরে বেসিন ও বসার চেয়ার ভাঙা। বাতি ও সীমানাপ্রাচীরের ওপরে থাকা পূর্ব দিকের লোহার রেলিং চুরি হয়েছে। এটি একটি স্মৃতিসৌধের অবস্থা। দীর্ঘদিন ধরে অযত্ন ও অবহেলায় পড়ে আছে স্মৃতিসৌধটি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের সোহাগপুর গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধটির অবস্থান। ‘মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক স্থানসমূহ সংরক্ষণ ও মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণ প্রকল্প’–এর অধীন স্মৃতিসৌধটি নির্মাণ করা হয়। তবে জাদুঘর নির্মাণ করা হয়নি।

গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় সোহাগপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, স্মৃতিসৌধটি রাস্তা থেকে চার–পাঁচ ফুট উঁচু। স্মৃতিসৌধের সামনে মাটির স্তূপ। সেখান আবর্জনা ও বৈদ্যুতিক তার পড়ে রয়েছে। কিছু গাছপালা আছে। প্রধান ফটকে তালা ঝুলছে। দুই থেকে তিন ফুট উচ্চতার সীমানাপ্রাচীর টপকে ভেতরে গিয়ে প্রধান ফটকের দুই পাশে অতিথিদের বসার জন্য চারটি আসন রয়েছে। কিন্তু আসন চারটির পেছনের হেলান দেওয়ার অংশটি নেই। দুই পাশে দুটি শৌচাগার থাকলেও দরজা নেই, কমোড ভেঙে পড়ে আছে, ভেতরে ময়লা–আবর্জনার স্তূপ। বাইরে থাকা দুটি বেসিন, বাতি, বৈদ্যুতিক তারের বক্স ও প্রধান ফটক থেকে স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত যেতে রাস্তার দুই পাশে চারটি দুই থেকে আড়াই ফুট উচ্চতার স্টিলের পাইপ রয়েছে। সেখান বৈদ্যুতিক তার থাকলেও চারটি বাতির একটিও নেই। সীমানাপ্রাচীরের ওপরের উত্তর–পূর্ব দিকের লোহার রেলিংয়ের কিছু অংশ কেউ খুলে নিয়ে গেছে।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, ‘মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক স্থানসমূহ সংরক্ষণ ও মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণ প্রকল্পের’ আওতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চারটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করার কথা। প্রতিটির নির্মাণে ব্যয় ৩৫ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়। চারটি প্রকল্পের মধ্যে আশুগঞ্জের দুর্গাপুর ইউনিয়নের সোহাগপুর ও আশুলিয়া স্মৃতি মেমোরিয়াল, নবীনগরের বড়াইল ইউনিয়নের খা’র ঘাট ও বাঞ্ছারামপুর উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের কৃষ্ণনগরে। চারটির মধ্যে আশুগঞ্জের আশুলিয়া স্মৃতি মেমোরিয়াল প্রকল্পের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। এই নামে কোনো প্রকল্প উপজেলায় নেই বলে দাবি করে স্থানীয় এলজিইডি।

এলজিইডির আশুগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী পৃথুল ভৌমিক প্রথম আলোকে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক স্থানসমূহ সংরক্ষণ ও মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় আশুগঞ্জে মুক্তিযুদ্ধের একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ হয়েছে।

আশুগঞ্জ উপজেলার সাবেক ডেপুটি মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো.

হাশেম প্রথম আলোকে বলেন, ‘উপজেলার বাহাদুরপুর থেকে সোহাগপুর হয়ে ওয়াপদা পর্যন্ত পাকিস্তানিদের সঙ্গে আমাদের যুদ্ধ হয়েছিল। আমি সোহাগপুরে যুদ্ধ করেছিলাম। এখানে জায়গা না পাওয়ায় একটি প্রকল্প ফিরে গেছে। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ অযত্ন ও অবহেলার কারণ—বাজেট না থাকা।’

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধে নেই কোনো আয়োজন। গতকাল মঙ্গলবার

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ দ ঘর ন র ম ণ প রকল প র উপজ ল র

এছাড়াও পড়ুন:

সায়েমের অলরাউন্ড পারফরম‌্যান্সে পাকিস্তানের জয়ে শুরু

জয়ের ধারাবাহিকতায় পাকিস্তান। বাংলাদেশের বিপক্ষে ঢাকায় শেষ টি-টোয়েন্টি জয়ের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম‌্যাচ সিরিজের প্রথমটিতেও জয় পেয়েছে তারা।

অলরাউন্ড পারফরম‌্যান্সে পাকিস্তানের জয়ের নায়ক সায়েম আইয়ুব। তার ৩৮ বলে ৫৭ রানের ইনিংসে ভর করে পাকিস্তান লাডারহিলে ৬ উইকেটে ১৭৮ রান করে। জবাব দিতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৭ উইকেটে ১৬৪ রানের বেশি করতে পারেননি। দারুণ ব‌্যাটিংয়ের পর বোলিংয়ে সায়েম ২০ রানে ২ উইকেট নেন। ১৪ রানের জয়ে সিরিজে ১-০ ব‌্যবধানে এগিয়ে পাকিস্তান।

টস হেরে ব‌্যাটিংয়ে নেমে পাকিস্তান শুরুতে শাহিবজাদা ফারহানের উইকেট হারায়। ১২ বলে ১৪ রান করে আউট হন ডানহাতি ব‌্যাটসম‌্যান। তিনে নেমে ফখর সায়েমকে সঙ্গ দেন। দুজন ৮১ রানের জুটি গড়েন। এ সময়ে ফখর ২ চার ও ১ ছক্কায় ২৪ বলে ২৮ রান করেন। বাকি রান আসে সায়েমের ব‌্যাটে।  এ সময়ে তিনি তুলে নেন ক‌্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি। হোল্ডারের বলে এলবিডব্লিউ হলে থেমে যায় তার ইনিংস।

এরপর হাসান নওয়াজের ১৮ বলে ২৪, সালমান আগার ১০ বলে ১১, ফাহিম আশরাফের ৯ বলে ১৫ রানে পাকিস্তান লড়াকু পুঁজি পায়। শেষ দিকে ১ বল খেলার সুযোগ পান হারিস। ছক্কায় উড়িয়ে পাকিস্তানের শেষটা ভালো করেন তিনি।
বোলিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে সেরা ছিলেন শামার জোসেফ। ৩০ রানে নেন ৩ উইকেট।

লক্ষ‌্য তাড়ায় উদ্বোধনী জুটিতে ৭২ রান পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর হঠ‌্যাৎ ছন্দপতন। ৫ রান পেতেই ৩ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। ওই ধাক্কার পর তারা আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। জনসন চার্লস ও জুয়েল অ‌্যান্ড্রু ৩৫ রানের দুটি ইনিংস খেলেন। শেই হোপ (২),  গুদাকেশ মোটি (০), শেফরন রাদারফোর্ড (১১) ও রস্টন চেজ (৫) দ্রুত আউট হন। শেষ দিকে পরাজয়ের ব‌্যবধান কমান হোল্ডার ও জোসেফ। হোল্ডার ১২ বলে ৪ ছক্কায় ৩০ রান করেন। ১২ বলে ১ চার ও ২ ছক্কায় ২১ রান করেন জোসেফ ।

পাকিস্তানের বোলারদের মধ‌্যে সেরা ছিলেন হাসান নওয়াজ। ২৩ রানে ৩ উইকেট নেন বাঁহাতি স্পিনার। সায়েমের ২ উইকেট বাদে ১টি করে উইকেট পেয়েছেন শাহীন শাহ আফ্রিদি ও সুফিয়ান মুকিম।
আগামীকাল একই মাঠে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি অনুষ্ঠিত হবে।

ঢাকা/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ