ভারতীয় বাংলা সিনেমার অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখার্জি। জীবনটা নিজের শর্তে উপভোগ করেন। ঠোঁটকাটা স্বভাব, সমাজের বাঁকা দৃষ্টিকে পাত্তা না দেওয়ায় বছর জুড়েই আলোচনায় থাকেন।

ব্যক্তিগত জীবনে অনেকের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন স্বস্তিকা মুখার্জি। তার প্রেমিকদের তালিকাও বেশ দীর্ঘ! ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বেশ খোলামেলা হলেও গত বছরের শেষে লগ্নে প্রথম প্রেমিকের পরিচয় জানান ‘মাস্তান’খ্যাত এই নায়িকা। আর সে অন্য কেউ নন, তার সিনেমারই নায়ক জিৎ। এ ঘটনার কয়েক মাস পর জিতের সঙ্গে সম্পর্কের সমীকরণ ব্যাখ্যা করলেন স্বস্তিকা। জানালেন— অর্ধযুগ একসঙ্গে থেকেছেন তারা।

কয়েক দিন আগে ‘ইন দ্য রিং উইথ ফিল্মফেয়ার বাংলা’-কে সাক্ষাৎকার দেন স্বস্তিকা। সাংবাদিক জিতেশ পিল্লাইয়ের সঙ্গে আলাপকালে স্বস্তিকা মুখার্জি বলেন, “আমার আর জিতের সম্পর্কে আমার মেয়ের এখনো মত আছে। আমরা ৬ বছর একসঙ্গে ছিলাম। ও তো আমার উপর এখনো রেগে গিয়ে বলে— ‘তোমার দোষ ছিল। যাই হোক না কেন, আমি কখনো তোমাকে ক্ষমা করব না।”

আরো পড়ুন:

বাবার ‘লক্ষ্মী ট্যারা’ চোখ নিয়ে স্মৃতিকাতর স্বস্তিকা

স্বস্তিকার প্রথম প্রেম জিৎ

একসঙ্গে অর্ধযুগ বসবাস করার কারণে স্বস্তিকার কন্যা অন্বেষার সঙ্গে জিতের দারুণ সম্পর্ক গড়ে উঠে। ফলে সম্পর্কটি ভেঙে যাওয়ার পক্ষে ছিলেন না অন্বেষা। এ তথ্য জানিয়ে স্বস্তিকা মুখার্জি বলেন, “আসলে জিতের সঙ্গে ও খুব ঘনিষ্ঠ ছিল। আমরা ৬ বছর একসঙ্গে ছিলাম। আর ও বড় হওয়ার পর তো বলে, ‘এত সুন্দর একটা পুরুষ, এ তুমি কী করলে মা!”

জিতের সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার প্রভাব শুধু তার মেয়ে অন্বেষা উপরেই নয়, মন খারাপ করেছিলেন স্বস্তিকার মা ও বোন অজপাও। এ সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ায় কেঁদেছিলেন স্বস্তিকার বোন। সেই ঘটনা বর্ণনা করে স্বস্তিকা মুখার্জি বলেন, “মা আর বোন সবসময় জিতের পক্ষ নিত। ওরা চেয়েছিল আমি আর জিৎ যেন বিয়ে করি। সম্পর্ক ভাঙার পরও আমার বোন জিতের বিয়েতেও গিয়েছিল। বোনের কান্না দেখে আমি বলেছিলাম, এসব কী নাটক হচ্ছে!”

পঞ্চাশে পা রাখার আগে আরো কয়েকটি প্রেম করতে চান চুয়াল্লিশের স্বস্তিকা। তার ভাষায়, “আমি ৬টি সিরিয়াস প্রেমের সম্পর্কে ছিলাম। এটি আমাকে ৬০০ প্রেমের অনুভূতি দেয়। কোনো হ্যাঙ্কিপ্যাঙ্কি ছিল না কোনোদিনই। মিডিয়া তো কারো সঙ্গে কফি খেতে গেলেও আমার নাম জুড়ে দেয়। যদিও এসব আমার ওপরে প্রভাব ফেলে না। যাহোক, বয়স ৫০ হওয়ার আগে জলদি করে আরো কয়েকটা প্রেম করে নিতে চাই।”

১৯৯৮ সালে জনপ্রিয় রবীন্দ্র সংগীতশিল্পী সাগর সেনের ছেলে প্রমিত সেনকে বিয়ে করেন স্বস্তিকা মুখার্জি। বাবা-মায়ের পছন্দে এ বিয়ে করেছিলেন তিনি। কিন্তু দুই বছরের মধ্যে সংসার জীবনে ছন্দপতন ঘটে। ২০০০ সালে দুধের শিশু অন্বেষাকে কোলে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে চলে আসেন স্বস্তিকা। একই বছর বিয়েবিচ্ছেদের মামলা করেন তিনি। তারপর সিঙ্গেল মাদার হিসেবে কন্যা অন্বেষাকে বড় করেছেন এই নায়িকা। কিন্তু কাগজে-কলমে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটেনি স্বস্তিকা-প্রমিতের।

প্রথম সংসার ভাঙার পর ২০০৩ সালে ‘হেমন্তের পাখি’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে পা রাখেন স্বস্তিকা মুখার্জি। ২০০৪ সালে ‘মাস্তান’ সিনেমায় প্রথম নায়িকা চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। এ সিনেমার নায়ক ছিলেন জিৎ। এ সিনেমার শুটিং সেটেই জিতের সঙ্গে বন্ধুত্ব ও প্রেমের সূচনা। এরপর টলিউডের পার্টি থেকে সিনেমার প্রিমিয়ার— সব জায়গায় একসঙ্গে দেখা যেত তাদের।

২০০৪ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত একসঙ্গে বেশ কিছু সিনেমায় অভিনয় করেন জিৎ-স্বস্তিকা। এ তালিকায় রয়েছে— ‘মাস্তান’, ‘ক্রান্তি’, ‘সাথীহারা’, ‘প্রিয়তমা’, ‘পার্টনার’, ‘পিতৃভূমি’, ‘কৃষ্ণকান্তের উইল’ প্রভৃতি। এরপর তাদের সম্পর্ক ভেঙে যায়। কী কারণে তাদের প্রেম ভেঙেছিল তা নিয়ে নানা গুঞ্জন শোনা যায়। তবে সঠিক কারণ জানাননি স্বস্তিকা।

কেউ বলেন, “স্বস্তিকার বিবাহিত তকমা এবং এক সন্তানের মা হওয়াই নাকি কাল হয় এই সম্পর্কে।” আবার কেউ বলেন, “জিৎ-স্বস্তিকার মাঝে ঢুকে পড়েছিলেন কোয়েল মল্লিক!” অনেকে বলেন, “ক্যারিয়ার ছেড়ে জিতের সঙ্গে ঘর বাঁধতে রাজি হননি স্বস্তিকা।”

স্বস্তিকা মুখার্জির সঙ্গে ব্রেকআপের কয়েক বছর পর অর্থাৎ ২০১১ সালে মোহনা মাদনানিকে বিয়ে করেন জিৎ। ২০১২ সালে তাদের ঘর আলো করে জন্ম নেয়ে কন্যা সন্তান। ২০২৩ সালের অক্টোবরে পুত্র সন্তানের বাবা হন এই নায়ক। তবে স্বস্তিকা এখনো একা জীবনযাপন করছেন।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স বস ত ক ম খ র জ একসঙ গ অন ব ষ প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

আইএমএফের পর্ষদ বৈঠক ২৩ জুন, এরপর মিলতে পারে দুই কিস্তি অর্থ

২৩ জুন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্বাহী পর্ষদের বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেই বৈঠকে বাংলাদেশের সঙ্গে আইএমএফের চলমান ঋণ কর্মসূচির দুই কিস্তির অর্থ ছাড়ের বিষয়টি উত্থাপনের কথা রয়েছে। বৈঠকে অনুমোদন হলে চলমান ঋণ কর্মসূচির আওতায় একসঙ্গে দুই কিস্তির অর্থ পাবে বাংলাদেশ। আইএমএফ গতকাল শুক্রবার তার কার্যসূচিতে নির্বাহী পর্ষদের বৈঠকের এ তারিখ নির্ধারণসংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করেছে।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, আইএমএফের এ বৈঠকে চলমান ঋণ কর্মসূচির তৃতীয় ও চতুর্থ পর্যালোচনার (রিভিউ) প্রতিবেদন উপস্থাপনের কথা রয়েছে। এ প্রতিবেদন পর্ষদ অনুমোদন করলে বাংলাদেশ একসঙ্গে পেয়ে যাবে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ। দুই কিস্তির অর্থ একসঙ্গে হতে পারে ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার।

এর আগে ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য সাড়ে তিন বছর মেয়াদি ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে। ঋণ অনুমোদনের সময় আইএমএফ বলেছিল, বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, ঝুঁকিতে থাকা ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেওয়া এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও পরিবেশসম্মত প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা করবে এ ঋণ কর্মসূচি। চলতি হিসাবের ঘাটতি বেড়ে যাওয়া, টাকার দরপতন ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়া—মূলত এ তিন কারণে ওই সময় আইএমএফের কাছে ঋণ চেয়েছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার।

আইএমএফের ঋণ কর্মসূচির মধ্যে বর্ধিত ঋণসহায়তা (ইসিএফ) ও বর্ধিত তহবিলসহায়তা (ইএফএফ) বাবদ ঋণ রয়েছে ৩৩০ কোটি ডলার। আর রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) বাবদ ঋণ রয়েছে ১৪০ কোটি ডলার। আরএসএফ আইএমএফের একটি নতুন তহবিল, যেখান থেকে এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশকেই প্রথম ঋণ দেওয়া হচ্ছে। ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আইএমএফের কাছ থেকে প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার পায় বাংলাদেশ। একই বছরের ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ও ২০২৪ সালের জুনে তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। অর্থাৎ তিন কিস্তিতে আইএমএফ থেকে এখন পর্যন্ত ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। বাকি আছে ঋণের ২৩৯ কোটি ডলার।

আইএমএফের ঋণের চতুর্থ কিস্তির অর্থ গত বছরের ডিসেম্বরে পাওয়ার কথা থাকলেও তা আর পাওয়া যায়নি। আইএমএফের সদর দপ্তর যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে অবস্থিত। প্রায় প্রতিবছর ওয়াশিংটনসহ প্রতিবেশী রাজ্যগুলোতে বড় ধরনের তুষারপাত হয়। গত বছরও তাই হয়েছে। অতিমাত্রার বরফের কারণে অচল হয়ে যায় জনজীবন। মার্কিন প্রশাসন সতর্কবার্তা জারি করে। তুষারপাতের কারণে আইএমএফসহ অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল অনেক দিন।

পরে আইএমএফের পক্ষ থেকে প্রথমে এ বছরের ফেব্রুয়ারি ও পরে মার্চে পর্ষদ বৈঠকের কথা বলা হয়। গত এপ্রিলে আইএমএফের একটি দল পর্যালোচনা করতে ঢাকায় আসে দুই সপ্তাহের জন্য। এর মধ্যে শর্ত পরিপালন নিয়ে দর–কষাকষিতে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড় আটকে যায়। এরপর ওয়াশিংটনে গত ২১ থেকে ২৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের বসন্তকালীন বৈঠকে এ বিষয়ে আরও আলোচনা হলেও কোনো সুরাহা হয়নি। তখন দর-কষাকষি হচ্ছিল মূলত মুদ্রা বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করা নিয়ে। আইএমএফ তা চাইলেও করতে চাইছিল না সরকার।

সবশেষে গত মাসে এ নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে কয়েকটি ভার্চ্যুয়াল বৈঠক করে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত ১২ মে দুই পক্ষ চূড়ান্ত সমঝোতায় পৌঁছায় ও বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করে বাংলাদেশ। ১৪ মে আইএমএফ ওয়াশিংটন থেকে এক বিবৃতিতে জানায়, দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে এবং ঋণের অর্থ ছাড় করা হবে জুনে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সাধারণত পর্ষদ বৈঠকে অনুমোদন হওয়ার দুই থেকে তিন দিনের মাথায় আইএমএফ অর্থ ছাড় করে দেয়। এবারও এর ব্যতিক্রম হবে না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • তদন্ত প্রতিবেদন দিতে এক মাস সময় বাড়ালেন ট্রাইব্যুনাল
  • কেন এবার একসঙ্গে পেকে যাচ্ছে ক্ষিরশাপাতি, আম্রপালি, ল্যাংড়া
  • শরীরের পাঁচ থেকে সাতটি অঙ্গ একসঙ্গে ব্যথা হয় যে কারণে
  • বাবাকে একটি সুন্দর দিন উপহার দিতে যা যা করতে পারেন
  • ফেনীতে একসঙ্গে তিন সন্তানের জন্ম দিলেন গৃহবধূ 
  • আগামী সপ্তাহে বাংলাদেশের কিস্তির প্রস্তাব উঠছে আইএমএফ পর্ষদে
  • আইএমএফের পর্ষদ বৈঠক ২৩ জুন, এরপর মিলতে পারে দুই কিস্তি অর্থ
  • এবার বাগ্‌দানের কথা নিজেই জানালেন ডুয়া
  • দেশের ক্রিকেট নিয়ে সাকিবের সঙ্গে যে আলোচনা হয়েছে মিরাজের
  • নিজের সিনেমা দেখারও টিকিট পাননি জয়া আহসান