বাড়ির উঠানে বাবার মরদেহ রেখে জমির ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে সালিসে ব্যস্ত ছিলেন সন্তানেরা। সালিস বৈঠক শেষে ১৬ ঘণ্টা পর স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি, মেম্বার ও এলাকাবাসীর হস্তক্ষেপে মরদেহের দাফন করা হয়।

বুধবার (২৬ মার্চ) ভোর ৬টার দিকে হাবিবুর রহমান বিশ্বাস (৭২) নামের ওই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়। এরপর দীর্ঘ ১৬ ঘণ্টা বাড়ির উঠানে পড়ে ছিল তার মরদেহ। রাত ১০টার দিকে তাকে দাফন করা হয়। সন্তানদের এমন কীর্তিতে হতবাক হয়েছেন গ্রামবাসী।

ঘটনাটি ঘটেছে যশোরের অভয়নগর উপজেলার চলিশিয়া ইউনিয়নের কোটা গ্রামের পূর্বপাড়া এলাকায়। হাবিবুর রহমান বিশ্বাস পেশায় একজন কৃষক ছিলেন। তার চার স্ত্রী ও নয় সন্তান রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, হাবিবুর রহমান দীর্ঘদিন ধরে ছোট স্ত্রী ও তার ছেলে সোহেল বিশ্বাসের সঙ্গে কোটা গ্রামে বসবাস করতেন। মৃত্যুর পূর্বে ছোট স্ত্রীর নামে ৮৩ শতাংশ জমি লিখে দেওয়াকে কেন্দ্র করে স্থানীয় পর্যায়ে কয়েকবার সালিসের আয়োজন করেছিলেন অন্য স্ত্রী ও সন্তানেরা। কিন্তু, নিজের সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন হাবিবুর রহমান।

বুধবার বার্ধক্যজনিত কারণে হাবিবুরের মৃত্যুর খবরে বাড়িতে আসেন অন্য স্ত্রীর ছেলে আতাউর রহমান, সুমন, আনোয়ার ও হাফিজুর। এসময় জমি সংক্রান্ত বিরোধ মীমাংসা না হওয়া পর্যন্ত বাবার মরদেহ দাফনে বাধা সৃষ্টি করেন তারা। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি, মেম্বার ও এলাকাবাসীকে ডেকে বাড়ির উঠানের এক পাশে সালিস বসানো হয়। সে সময় বাড়ির উঠানে খাটিয়ার ওপর হাবিবুর রহমানের মরদেহ পড়ে ছিল দীর্ঘ সময়।

মৃতের ছেলে সোহেল বিশ্বাস বলেন, ‘‘বাবার কবর পর্যন্ত খুঁড়তে দেয়নি সৎ ভাইয়েরা। আমার মায়ের নামে লিখে দেওয়া ৮৩ শতাংশ জমির মধ্য ৫০ শতাংশ তাদের নামে লিখে দেওয়ার শর্তে মুচলেকা দেওয়ার পর কবর খুঁড়তে ও দাফন করতে দেয় তারা।’’

কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি আরো বলেন, ‘‘মৃত্যুর ১৬ ঘণ্টা পর বাবার মরদেহ দাফন করতে হয়েছে। আল্লাহ ওদের বিচার করবেন।’’

সালিসে উপস্থিত ইউপি সদস্য কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ‘‘জমি সংক্রান্ত বিরোধ সালিসের মাধ্যমে মীমাংসা করা হয়েছে। রাত ১০টার পর মরদেহের দাফন করা হয়েছে।’’

চলিশিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সানা আব্দুল মান্নান বলেন, ‘‘মরদেহ ফেলে রাখার ঘটনা দুঃখজনক। বিষয়টি জানার পর আমার প্রতিনিধি, মেম্বার ও এলাকাবাসী সালিসের মাধ্যমে তাদের পারিবারিক সমস্যার মীমাংসা করেছেন।’’

ঢাকা/প্রিয়ব্রত/রাজীব

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হ ব ব র রহম ন ব ব র মরদ হ

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টিতে ভিজতে গিয়ে ছাদ থেকে পড়ে মাইলস্টোন ছাত্রীর মৃত্যু

রাজধানীর আফতাবনগর এলাকায় বাসার ছাদ থেকে পড়ে মাইলস্টোন স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী তানহা (১৪) মারা গেছে। গতকাল বুধবার বিকেলে বৃষ্টিতে ভিজতে ছাদে উঠেছিল সে।  

তানহার বোন তাবাসসুম বলেন, বৃষ্টিতে ভেজার সময় হঠাৎ ছাদ থেকে পড়ে যায় তানহা। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

তানহা পাবনা সদর উপজেলার আব্দুস সালামের মেয়ে। আফতাবনগর পাসপোর্ট অফিসের পাশে পরিবারের সঙ্গে থাকত সে।

এদিকে একই দিন দুপুরে গুলিস্তান মহানগর নাট্যমঞ্চ পার্কের পুকুরে গোসল করতে নেমে ডুবে মারা যায় ইয়াসিন ওরফে নিরব (১৫)। তার বন্ধু জুবায়ের আহমেদ জানায়, দুপুর আড়াইটার দিকে কয়েকজনের সঙ্গে গোসল করতে নামে নিবর। এ সময় পানিতে ডুবে গেলে তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সে সৈয়দপুরের মৃত এনায়েত হোসেনের ছেলে। গুলিস্তানে ফুটপাতে সে ঘড়ি বিক্রি করত।

ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মোহাম্মদ ফারুক জানান, দু’জনের লাশ ঢামেক মর্গে রাখা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। দুই ঘটনায় আলাদা থানায় অপমৃত্যুর মামলা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ