আইপিএল মানেই রানের বন্যা। ফ্ল্যাট পিচ, ছোট বাউন্ডারি আর ব্যাটসম্যানদের অনুকূল কন্ডিশন যেন বোলারদের দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠেছে। ধারাবাহিকভাবে উচ্চ স্কোরিং ম্যাচ দেখে ক্রিকেট বিশ্লেষকরা এখন ভারসাম্য আনার পরামর্শ দিচ্ছেন। ভারতের কিংবদন্তি ক্রিকেটার ও বিশ্লেষক সুনীল গাভাস্কার সেই তালিকায় যোগ দিয়ে মাঠের আকার বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।  

গাভাস্কার মনে করেন, আইপিএলে বোলারদের জন্য কিছুটা সুবিধা আনতে হলে বাউন্ডারির দৈর্ঘ্য বাড়ানো প্রয়োজন। তার মতে, এলইডি বিজ্ঞাপন বোর্ডের পেছনে যথেষ্ট জায়গা রয়েছে, যা পেছনে সরিয়ে বাউন্ডারির লাইন কয়েক মিটার বাড়ানো যেতে পারে।  

মিড ডে-তে লেখা এক কলামে গাভাস্কার বলেন, ‘পাওয়ারপ্লেতে ব্যাটসম্যানদের খেলার ধরনে পরিবর্তন এসেছে, কিন্তু বাউন্ডারির আকার সেই আগের মতোই রয়ে গেছে। অনেক ছক্কা মাত্র কয়েক ইঞ্চির জন্য বাউন্ডারি পার হয়। যদি বাউন্ডারি কয়েক মিটার পেছনে থাকত, তাহলে হয়তো অনেক শট ক্যাচে পরিণত হতো এবং বোলাররা উইকেট পেতেন।’  

চলতি আইপিএলে প্রথম ১১ ম্যাচের মধ্যে ৬টিতে দলীয় স্কোর ২০০ ছাড়িয়েছে। সানরাইজার্স হায়দরাবাদ তাদের প্রথম ম্যাচেই ২৮৬ রান করেছিল, যা ব্যাটিং-বান্ধব কন্ডিশনের প্রমাণ।  

এছাড়া, আইপিএলের অর্থনৈতিক দিক নিয়েও কথা বলেছেন গাভাস্কার। তিনি মনে করেন, ম্যাচ-পরবর্তী খেলোয়াড়দের পুরস্কারের অর্থও সময়ের সঙ্গে বাড়ানো উচিত। তিনি লেখেন, ‘২০০৮ সালের প্রথম আসর থেকে আইপিএলের রাজস্ব অনেক বেড়েছে, কিন্তু প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ পুরস্কারের অর্থ এখনও অপরিবর্তিত রয়েছে।’  

তিনি আরও যোগ করেন, ‘যখন সন্তান স্কুল থেকে কলেজে ওঠে, তখন বাবা-মা তার পকেট খরচ বাড়িয়ে দেন। আইপিএলও এখন পরিণত হয়েছে, তাহলে পুরস্কারের পরিমাণও কি বাড়ানো উচিত নয়?’  

গাভাস্কারের মতে, আইপিএলকে আরও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও আকর্ষণীয় করতে হলে বোলারদের জন্য কিছু সুবিধা নিশ্চিত করা জরুরি। বাউন্ডারির আকার বাড়ানোর পাশাপাশি ম্যাচ-পরবর্তী পুরস্কারের বিষয়েও নজর দেওয়া উচিত আয়োজকদের।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রস ক র র

এছাড়াও পড়ুন:

দেশে বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন এম এন লারমা

মানবেন্দ্র নারায়ণ (এম এন) লারমাই দেশে প্রথম আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে বৈজ্ঞানিকভাবে চিহ্নিত করেছিলেন। তিনি প্রথম দেশে কাঠামোগতভাবে আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে স্পষ্ট করেন। একটি বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন তিনি।

পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য এম এন লারমার ৮৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সোমবার রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।

‘বিপ্লবী মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ৮৬ম জন্মবার্ষিকী উদ্‌যাপন কমিটি’ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়।

আলোচনা সভায় লেখক ও গবেষক পাভেল পার্থ বলেন, ১৯৫৫-৬৫ সালের মধ্যে তৈরি হওয়া ‘বাইনারি বিভাজন’ পরবর্তীকালে প্রতিষ্ঠা করেছে বাংলাদেশে সরকার। ‘বাইনারি’ মনস্তত্ত্বকে এখনো এই দেশে টিকিয়ে রাখা হয়েছে। এম এন লারমা ‘বাঙালি হেজিমনি’র বিরুদ্ধে আত্মপরিচয়ের বয়ান বাঁচিয়ে রাখতে তৎকালে জোরালো প্রতিবাদ করেছিলেন।

জেএসএসের কেন্দ্রীয় সদস্য দীপায়ন খীসা বলেন, কাপ্তাই বাঁধ না করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়েই ছাত্র এম এন লারমার প্রতিবাদী জীবন শুরু হয়। চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানের পর যে বৈষম্যহীন, অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের কথা বলা হচ্ছে, এম এন লারমা ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নকালেই এসব বিষয় নিয়ে জোরালো বক্তব্য দিয়েছিলেন।

দীপায়ন খীসা বলেন, ‘সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশন বা জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কখনো ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের সঙ্গে সংলাপ করেনি। আমরাও এই দেশের অংশ। তাহলে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের কেন কোনো সংলাপে অংশগ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানানো হলো না?’ তিনি বলেন, চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদেরও অংশীদারত্ব আছে। কিন্তু অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে তাদেরই ভুলে গেল এই সরকার।

সভাপতির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী জাকির হোসেন বলেন, ‘বাঙালি হয়ে যাও’ কথাটার পেছনে বাঙালি মুসলিমদের জাত্যভিমানের ব্যাপারটি রয়েছে। এম এন লারমা বাংলাদেশের মধ্যে থেকে নিজেদের অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য আন্দোলন শুরু করেছিলেন। সেই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে পরবর্তীকালে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি’ নামে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক শান্তিময় চাকমার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের অর্থ সম্পাদক মেইনথিন প্রমীলা, সাংবাদিক এহসান মাহমুদ, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অং শোয়ে সিং মারমা।

অনুষ্ঠানটি শুরু হয় এম এন লারমাকে সম্মান জানিয়ে কবিতা পাঠের মাধ্যমে। কবিতা পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রেই চাকমা ও লাল নিকিম বম। কবিতা আবৃত্তির পর এম এন লারমার জীবনবৃত্তান্ত পাঠ করেন হিল উইমেন্স ফেডারেশন ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রিয়া চাকমা।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের তথ্য প্রচার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক হিরণ মিত্র চাকমা, জেএসএসের কেন্দ্রীয় স্টাফ সদস্য অনন্ত বিকাশ ধামাই, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি শান্তিদেবী তঞ্চঙ্গ্যা, পিসিপি ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি জগদীশ চাকমা, বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অনন্ত তঞ্চঙ্গ্যা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মন্ত্রীদের জন্য গাড়ি কেনার অতিআগ্রহ নিয়ে প্রশ্ন টিআইবির
  • আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য গাড়ি কেনার অতি আগ্রহের কারণ কী, প্রশ্ন টিআইবির
  • ডাকসুর ব্যালট পেপারে ২ ভোট নিয়ে যা বলছে নির্বাচন কমিশন
  • নরসিংদীতে ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি স্থগিত
  • দক্ষিণ এশিয়ায় জেন–জি বিপ্লবের পরবর্তী নিশানা কে
  • নেপাল, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা: দক্ষিণ এশিয়ায় জেন–জি বিপ্লবের পরবর্তী নিশানা কে
  • গাজায় পাগলের মতো বোমা ফেলছে ইসরায়েল
  • ফতুল্লা পুলিশের সহায়তায় আপন ঠিকানায় মানসিক প্রতিবন্ধী নারী
  • দেশে বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন এম এন লারমা
  • ফতুল্লায় প্রতারণা করে ১৫ লাখ টাকার রড নিলো প্রতারক চক্র, কুমিল্লায় গ্রেপ্তার ৩