আগামী সংসদ নির্বাচনের দাবিতে রাজপথে নামছে বিএনপিসহ সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো। এ মাস থেকে শুরু হবে তাদের নানা কর্মসূচি। ধীরে ধীরে এ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে চাইছে তারা। এর আগে সরকারের কাছে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরতে আগামী সপ্তাহে আবারও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করবেন বিএনপি নেতারা। সেখানে নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানানো হবে। এ ছাড়া ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিও জানানো হবে।

বিএনপি ও সমমনা কয়েকটি দলের নেতারা জানান, নির্বাচন নিয়ে সরকারের একেক সময়ে একেক বক্তব্যে এক ধরনের অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। এতে রাজনৈতিক অস্থিরতার পাশাপাশি আরও অনেক নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরে। দেশ-বিদেশেও খারাপ বার্তা পৌঁছানোর আশঙ্কা তৈরি হতে পারে। আবার অনির্বাচিত সরকার বেশি দিন ক্ষমতায় থাকলে এটি জাতির জন্য আরেকটি নেতিবাচক উদাহরণ সৃষ্টি হবে। এ জন্য উদার রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি ডান ও বাম দলগুলোকে এক প্ল্যাটফর্মে আনার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে অভিন্ন দাবিতে এসব দল সোচ্চার রয়েছে। খুব শিগগির আনুষ্ঠানিক বৈঠকের মাধ্যমে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির কৌশল নেওয়া হবে। সেখান থেকে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানানো হবে। একই সঙ্গে একই দাবিতে পৃথক কর্মসূচি নিয়ে মাঠে ভূমিকা রাখবে এসব দল। এতেও কাজ না হলে ধীরে ধীরে কর্মসূচির তীব্রতা বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে ওইসব দলের। তবে আপাতত সরকারের ওপর সমর্থন অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত রয়েছে।

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ সমকালকে জানান, ‘রোডম্যাপ ঘোষণার জন্য এতদিন ধরে তারা সরকারের কাছে যে আহ্বান জানিয়ে আসছেন, ঈদের পর তা আরেকবার আনুষ্ঠানিকভাবে জানাতে চান। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আনুষ্ঠানিকভাবে হয়তো আহ্বান জানাব। তিনি কী পদক্ষেপ নেন এবং কী ঘোষণা দেন, তার জন্য কিছু সময় অপেক্ষা করব আমরা। এর পরও প্রত্যাশিত ঘোষণা না এলে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরব।’

তিনি আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টা যদি একেক সময় একেক কথা বলেন, ‘দেখতে হবে কেন এভাবে বলছেন? আমরা আগে তাঁর সঙ্গে কথা বলে নেব। তার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি কী করেন, তা দেখব। তার পর আমাদের রাজনৈতিক বক্তব্য মাঠে-ময়দানে, জনগণের কাছে কর্মসূচির মধ্য দিয়ে তুলে ধরব।’

এদিকে আগামী নির্বাচন কবে অনুষ্ঠিত হবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে ধোঁয়াশা রয়েছে। বিভিন্ন দলের মধ্যে নির্বাচনের ইস্যুতে ঐকমত্যের অভাবও দেখা যাচ্ছে। 

মহান স্বাধীনতা দিবস ও পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ড.

মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এ বছর ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। এ প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য অস্পষ্ট। ডিসেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত ছয় মাস। এখনও কোনো রোডম্যাপ প্রকাশিত হয়নি। আমরা স্পষ্ট রোডম্যাপ এবং দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছি।’

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম মন্তব্য করেন, সংস্কার ও বিচার ছাড়া নির্বাচন হলে সেটি মেনে নেওয়া হবে না। এ পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক মহলে নতুন একটি দাবির কথা উঠে এসেছে, যেখানে ইউনূস সরকারকে অন্তত ২০২৯ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। সম্প্রতি ফেসবুকে এনসিপির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম (উত্তরাঞ্চল) এ দাবি করেন। 

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সরকারের ঘনিষ্ঠ কিছু বুদ্ধিজীবীর পরামর্শে এ দাবি উঠে আসতে পারে, যা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে জাতীয় সরকারে রূপান্তরিত করার প্রচেষ্টা হতে পারে। এ পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা মনে করছেন, এ সরকারের মেয়াদ বাড়ানো দেশের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির দুই জ্যেষ্ঠ নেতার মতে, ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হলে এবং বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের কোনো মৈত্রী তৈরি না হলে সংগত কারণে জামায়াত ক্ষমতার মধুচন্দ্রিমা থেকে ছিটকে পড়বে। এ অবস্থায় জামায়াত চায় না শিগগির নির্বাচন হোক। জামায়াত প্রভাবিত ছাত্রদের অংশটিও নির্বাচন চায় না। তাদের সঙ্গে কিছু বুদ্ধিজীবীরও এটি চাওয়া। এ কারণে তারা নির্বাচনের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত প্রচারণা শুরু করেছেন।

তাদের মতে, এ সরকার বিপুল জনসমর্থন নিয়ে ক্ষমতাসীন হয়েছে। শুরুতেই জামায়াত ও ইসলামপন্থিদের প্রতি সরকারের অতিরিক্ত সখ্যের কারণে উদারপন্থিরা সরকারের কাছ থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছে। নানা রকমের বিভাজনের কারণে ছাত্রদের জনপ্রিয়তাও দিন দিন কমতে শুরু করেছে। নারীর প্রতি সহিংসতাসহ নানা ঘটনা সমাজে গভীর ভীতি তৈরি করেছে। সারাদেশে মাজার ভাঙচুর, মেয়েদের ফুটবল টুর্নামেন্ট, গানের অনুষ্ঠান বন্ধ করা, শিল্পীদের হুমকি-ধমকিতে এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি করেছে, যাতে মনে হয় দেশে ইসলামপন্থি উগ্রবাদের ব্যাপক উত্থান ঘটেছে। বিশেষ করে যত্রতত্র মব তৈরি করার মধ্য দিয়ে যেভাবে সন্ত্রাস সৃষ্টি করা হয়েছে, তাতে বহু মানুষ উদ্বিগ্ন। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের একটি বড় অংশ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে স্থিতিশীল সরকার চায়। সেনাবাহিনীও ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায় বলে বারবার জানিয়েছে। ফলে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে নির্বাচন আয়োজন প্রাধান্য পাওয়া উচিত। তাছাড়া নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সরকার গঠন করলে সেই সরকার সব দিক থেকে জাতীয় সরকার হবে বলে বিএনপি বারবার বলে এসেছে। সেই সরকারেও ড. ইউনূসের দক্ষতা কাজে লাগানোর সুযোগ থাকবে। 

সরকারের মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে সতর্ক করতে বিএনপির নেতারা আগে থেকেই বিভিন্ন বক্তব্য তুলে ধরেছেন। ঈদের আগের দিন বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মির্জা ফখরুল বলেছেন, নির্বাচনের আগে সরকার নিরপেক্ষতা হারালে বিএনপি তা কোনোভাবেই মেনে নেবে না। তারা সরকারের পূর্ণ নিরপেক্ষতা প্রত্যাশা করে, বিশেষ করে অধ্যাপক ইউনূসের কাছ থেকে। যদি প্রধান উপদেষ্টা এ বিষয়ে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নেন, তাহলে জনগণের মধ্যে এমন ধারণা তৈরি হবে যে, এ সরকার নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছে।

চট্টগ্রামে দলের নেতাকর্মীর সঙ্গে ঈদের কুশল বিনিময়ের সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, একটি শক্তি ক্ষমতায় থাকার জন্য নতুন নতুন পন্থা বের করছে। ফ্যাসিস্টরা দাঁড়াতে পারেনি। এ শক্তিও যাতে দাঁড়াতে না পারে, সে জন্য বাংলাদেশের মানুষ প্রস্তুত রয়েছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান রয়টার্সের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন না হলে জনগণের মধ্যে জোরালো অসন্তোষ এবং দেশে অস্থিরতা তৈরি হবে বলে সতর্ক করেছেন।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না সমকালকে বলেন, ‘এই সরকারের ব্যর্থতা আমরা চাই না। সরকার যাতে বোঝে, সেটা চাইছি। দেশের মানুষের মনের আকুতি অনুযায়ী জাতীয় ঐক্য নিয়ে সরকার যেন কাজ করে এবং দ্রুত নির্বাচন দিয়ে সম্মানের সঙ্গে তাদের বিদায় নেওয়ার আহ্বান জানাই।’

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, মানুষ এ সরকারকে দুর্বল ও অকার্যকর মনে করায় নৈরাজ্যের বিস্তার ঘটছে। গণঅভ্যুত্থানের আট মাসেও মানুষের জীবনে স্বস্তি আসেনি। এ অবস্থা চলতে দিলে জনগণের জানমাল আরও নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়বে। তাই এ সরকারের সময় বাড়ানোর যেসব কথা বলা হচ্ছে, সেটি না করাই উত্তম। 

বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, কিছুদিনের মধ্যে সরকার সুনির্দিষ্টভাবে নির্বাচনের রোডম্যাপ না দিলে অতীতের মতো সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে যুগপৎভাবে আন্দোলনে নামব।

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক বলেন, নির্বাচন নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা হলে তা প্রধান উপদেষ্টার জন্য সম্মানজনক বিষয় হতে পারে। নির্বাচনের সময়সীমা স্পষ্ট করা না হলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরকারের দূরত্ব তৈরি হতে পারে, যা কারও জন্যই মঙ্গলজনক হবে না।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ সরক র র ক ছ ব এনপ র স উপদ ষ ট র ড স ম বর এ সরক র জনগণ র র জন য ইউন স ক ষমত ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

৩০০ আসনে প্রার্থী বাছাই প্রায় চূড়ান্ত: তারেক রহমান

জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষে সম্ভাব্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

তিনি বলেন, “দেশের ৩০০ সংসদীয় আসনে বিএনপি দলীয় প্রার্থী কিংবা বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের মনোনয়ন চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত ধাপে রয়েছে।”

আরো পড়ুন:

বরগুনায় জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা মামুন 

জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির 

রবিবার (২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে প্রবাসে বিএনপির সদস্যপদ নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তারেক রহমান। লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত হন তিনি।

প্রতিটি নির্বাচনী আসনে বিএনপির একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন জানিয়ে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “দেশের প্রতিটি সংসদীয় আসনে বিএনপির একাধিক যোগ্য এবং জনপ্রিয় প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও প্রতিটি মানুষকে নিশ্চয়ই মনোনয়ন দেওয়া সম্ভব নয়। ভিন্ন রাজনৈতিক দলের যারা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে আমাদের সঙ্গে রাজপথের সঙ্গী ছিলেন, এমন প্রার্থীকেও বিএনপি সমর্থন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”

এই বাস্তবতার কারণে হয়তো কিছু সংসদীয় সংসদীয় আসনে বিএনপি দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন বঞ্চিত হবেন জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, “বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মী, সমর্থকদের কাছে আমাদের প্রত্যাশা, দেশ ও জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে আপনারা এই বাস্তবতাকে মেনে নেবেন।”

জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে জনমনে সৃষ্ট সংশয়, সন্দেহ গণতন্ত্রে উত্তরণের পথকে সংকটপূর্ণ করে তুলতে পারে মন্তব্য করে তারেক রহমান বলেন, “দেশে প্রতিনিয়ত একের পর এক নিত্য নতুন শর্ত জুড়ে দিয়ে গণতন্ত্র উত্তরণের পথকে সংকটাপূর্ণ করে তোলা হচ্ছে। তবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শক্তিতে বিশ্বাসী নাগরিকেরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোনো ষড়যন্ত্রই বিএনপিকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারবে না।”

আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে মানুষের উদ্বেগের কথা তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, “পরাজিত পলাতক স্বৈরাচারের শাসন আমলে জনগণের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কোনোই আগ্রহ ছিল না। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় জনমনে কোনো কোনো ক্ষেত্রে জিজ্ঞাসা বাড়ছে, যথাসময়ে কি নির্বাচন হবে?... এমন তো হবার কথা ছিল না।”

বিএনপির বিজয় ঠেকাতে অপপ্রচার ও অপকৌশল দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে বলে উল্লেখ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “উদ্বেগ এবং আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশেও বর্তমানে বিএনপির বিজয় ঠেকাতে সংঘবদ্ধ অপপ্রচার এবং অপকৌশল দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে।”

শুধু বিএনপির বিজয় ঠেকাতে গিয়ে পতিত পরাজত পলাতক স্বৈরাচার দেশে ‘ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বিগত ১৫ বছরে দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করা হয়েছে।”

প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে বিএনপি দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে মন্তব্য করে তারেক রহমান জানান, তবে বিএনপির প্রতি দেশের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতাপ্রিয় জনগণের আস্থা, ভালোবাসা থাকায় সে সংকট কাটিয়েছে তার দল।

তারেক রহমান বলেন, “দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি শুরু থেকেই ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য বজায় রাখার স্বার্থে সর্বোচ্চ ছাড় দিয়ে একদিকে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতার পথ বেছে নিয়েছে। অপরদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেও যতটুকু সম্ভব, যতটুকু যথাসাধ্য সম্ভব আমাদের অবস্থান থেকে আমরা সহযোগিতা করে আসছি।”

দেশে নারীদের নিরাপত্তার বিষয়ে সামাজিক উদাসীনতা প্রকট হয়ে উঠছে উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এ সংক্রান্ত গণমাধ্যমের প্রতিবেদন তুলে ধরে বলেন, “নারী ও শিশুদের জন্য নিরাপত্তাহীন সমাজ নিশ্চয়ই সভ্য সমাজ হিসেবে গণ্য হতে পারে না।”

সেজন্য তিনি জাতীয়তাবাদী মহিলা দলসহ বাংলাদেশের সচেতন নারী সমাজকে তাদের দাবি সরকারের কাছে তুলে ধরার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানের শুরুতে অনলাইনে বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদ গ্রহণ এবং তার ফি পরিশোধের প্রক্রিয়া নিয়ে একটি ভিডিওচিত্র প্রদর্শন করা হয়। তাতে বলা হয়, এখন থেকে বিশ্বের যেকোনো দেশ থেকে অনলাইনে বিএনপির দলীয় ওয়েবসাইটে গিয়ে সদস্যপদ গ্রহণ করা যাবে।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, এ জে ড এম জাহিদ হাসান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ আলমগীর হোসেন প্রমুখ।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জনগণের সহজে ভূমিসেবা নিশ্চিত করতে হবে: সিনিয়র সচিব
  • কোনো দলের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে ঐকমত্য হলে জোট হতে পারে: সারজিস আলম
  • অবিলম্বে গণভোটের দাবি চাকসুর
  • ক্ষমতার লোভে কেউ কেউ ধর্মকে ব্যবহার করছে: আব্দুস সালাম
  • উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী
  • ভুল শুধরে জনগণের আস্থা ফেরানোর সুযোগ এই নির্বাচন: আইজিপি
  • ৩০০ আসনে প্রার্থী বাছাই প্রায় চূড়ান্ত: তারেক রহমান
  • ইরান পারমাণবিক স্থাপনাগুলো আরো শক্তিশালী করে পুনর্নির্মাণ করবে
  • জ্বালানি সুবিচার নিশ্চিতে সংগ্রাম, শপথ যুব সংসদের সদস্যদের
  • বন্দরে বিএনপি নেতা তাওলাদের উপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে আল্টিমেটাম