তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের শিল্পকারখানায় শ্রমিকদের জন্য উন্নত পরিবেশ ও কর্মক্ষেত্র তৈরির গুরুত্ব অনেক। এ বিষয়ে সরকার ও উন্নয়ন সংস্থার পাশাপাশি তরুণ পেশাজীবী, বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ও শিল্পক্ষেত্রে যুক্ত পেশাজীবীদের সচেতন হওয়া প্রয়োজন। সেই লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার অন বাজেট অ্যান্ড পলিসির (সিবিপি) আয়োজনে গতকাল সোমবার থেকে কুমিল্লার পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বার্ড) মিলনায়তনে শুরু হয়েছে পাঁচ দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণ কর্মশালা।

‘স্প্রিং স্কুল অন বিজনেস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস’ শীর্ষক এই কর্মশালায় দায়িত্বশীল ব্যবসায়িক আচরণকে পেশাজীবী, গবেষক ও শিক্ষার্থীদের সামনে তুলে ধরা হচ্ছে। স্প্রিং স্কুলের সহযোগিতায় রয়েছে জার্মান উন্নয়ন সংস্থা জিআইজেড, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও), বাংলাদেশের ডেনমার্ক দূতাবাস, সুইডিশ সরকার ও ইনিশিয়েটিভ ফর গ্লোবাল সলিডারিটি (আইজেএস)।

প্রশিক্ষণের প্রথম দিনের উদ্বোধনী আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি তাঁর বক্তব্যে ব্যবসা ও মানবাধিকার বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির গুরুত্ব এবং দায়িত্বশীল ব্যবসায়িক আচরণ প্রতিষ্ঠায় শিক্ষা ও গবেষণার ভূমিকার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য দায়িত্বশীল ব্যবসায়িক পরিবেশ থাকা প্রয়োজন। এ বিষয়ে শিল্প খাত–সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ থাকা প্রয়োজন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার অন বাজেট অ্যান্ড পলিসি সামগ্রিকভাবে দেশের কর্মক্ষেত্রে পরিবেশ উন্নয়নের জন্য প্রথমবারের মতো এই স্প্রিং স্কুল আয়োজন করেছে। এ স্কুলের কার্যক্রমের সঙ্গে বিভিন্ন দাতা সহযোগীরা যুক্ত আছেন বলে শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা লাভের সুযোগ পাচ্ছে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আইএলও বিশেষজ্ঞ জোসি লাপোর্তে, টেকনিক্যাল কর্মকর্তা চয়নিচ থাম্পারিপাত্রা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক কাজী মারুফুল ইসলাম, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক কৃষ্ণ কুমার সাহা। কৃষ্ণ কুমার সাহা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ার বাইরে পেশাজীবীদের দক্ষতা অর্জনের লক্ষ্যে এমন স্কুল আয়োজন করা হচ্ছে। পশ্চিমা দেশে এমন কার্যক্রম নিয়মিত হলেও বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এমন কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ব্যবসা খাত–সংশ্লিষ্ট পেশাজীবী, গবেষক ও আগামীর পেশাজীবীদের দক্ষতা অর্জনের লক্ষ্যে এমন আয়োজন করছি আমরা।’

স্প্রিং স্কুলের অংশ হিসেবে বিভিন্ন সেশনের দায়িত্বশীল ব্যবসা, টেকসই উন্নয়ন ও করপোরেট জবাবদিহি বিষয়ে কার্যকর আলোচনা করা হবে। প্রশিক্ষণ কর্মশালাটি ১১ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে।

সামগ্রিকভাবে এ ধরনের আয়োজন দেশ-বিদেশের শিক্ষার্থী, গবেষক, নীতিনির্ধারক ও উন্নয়নকর্মীদের বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জনে সহায়তা করছে বলে আয়োজকেরা জানান। অংশগ্রহণকারীরা ব্যবসায়িক খাতে মানবাধিকারের বাস্তবায়ন ও ন্যায্যতা নিশ্চিতকরণে সমসাময়িক চ্যালেঞ্জ ও করণীয় বিষয়ে গভীরতর ধারণা দিতেই এমন স্কুল দেশে প্রথমবারের মতো আয়োজন করা হচ্ছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

জমজমাট নাটকের পর কিংসের শিরোপা উৎসব

সময়ের চেয়েও বেশি দীর্ঘ হলো অপেক্ষা। উত্তেজনার বাঁকে বাঁকে লুকিয়ে ছিল ফুটবলীয় রোমাঞ্চ। শেষ ১৫ মিনিট যেন পরিণত হলো রূপকথার উপসংহারে—যেখানে আবাহনীর স্বপ্ন থেমে যায়, আর বসুন্ধরা কিংস খুঁজে পায় চতুর্থ ফেডারেশন কাপের সোনালি মুহূর্ত।

বৃষ্টির ছন্দে বিভ্রান্ত হওয়া ফাইনাল আবার শুরু হলো এক সপ্তাহ পর। ১-১ সমতায় থাকা ম্যাচের বাকি অংশ গড়ালো ময়মনসিংহ জেলা স্টেডিয়ামে। যেখানে শুরু থেকেই ১০ জনের দল নিয়ে খেলতে নামে কিংস। অতিরিক্ত সময়ে কিছুই হল না। তবে অপেক্ষার পুরস্কার মিলল টাইব্রেকারে।

সেখানে বাজিমাত করলেন কিংসের গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবণ। আবাহনীর দ্বিতীয় শট আটকে দিয়ে দলকে দিলেন এগিয়ে যাওয়ার আত্মবিশ্বাস। আর শেষ শটটি নেন ব্রাজিলিয়ান ড্যাসিয়েল, যা গোললাইন পার হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই উৎসবে ফেটে পড়ে কিংস শিবির।

আরো পড়ুন:

যে কারণে এবারের লিগ জয়কে এগিয়ে রাখছেন সালাহ

পাঁচ গোলের রোমাঞ্চকর ফাইনালে শেষ হাসি বার্সার

কিছুদিন আগেই আবাহনীর কাছে টাইব্রেকারে হেরেছিল কিংস। এবার সেই হারের উত্তরটা যেন মিলল একই মঞ্চে, একই কৌশলে— তবে ভিন্ন ফলাফলে। মোরসালিন, তপু, ইনসান, জোনাথন আর ড্যাসিয়েল— কেউই ভুল করেননি। আবাহনীর একমাত্র ব্যর্থ শটটি ছিল নাইজেরিয়ান এমেকার, যা ঠেকিয়ে দেন শ্রাবণ। আর মিরাজুলের চতুর্থ শট, যা প্রথমবার ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন শ্রাবণ। কিন্তু রেফারির সিদ্ধান্তে আবার নিতে হয়। তাতেও গোল হলেও ততক্ষণে কিংস হয়ে গেছে অপ্রতিরোধ্য।

এদিন মাত্র ১৫ মিনিট খেলা হলেও মাঠের উত্তাপ ছিল পূর্ণদৈর্ঘ্য নাটকের মতো। শুরুতেই হলুদ কার্ড দেখেন আবাহনীর সুমন রেজা ও অধিনায়ক হৃদয়। আগের ম্যাচেও হলুদ-লাল কার্ডে ভরা ছিল দৃশ্যপট। ফুটবল এখানে শুধু কৌশলের খেলা নয় তা যেন হয়ে ওঠে মানসিক স্থিতির পরীক্ষাও।

এই জয়ে বসুন্ধরা কিংস চতুর্থবারের মতো ফেডারেশন কাপ জয় করল। একই সঙ্গে আবাহনীকে প্রথমবার কোনো ফাইনালে হারানোর কৃতিত্বও অর্জন করল তারা। অতীতে দুই ফাইনালে পরাজিত হয়েছিল কিংস। এবার তারা সেই রেকর্ড মুছে দিল নির্ভার ফুটবলে।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দেশ গড়ার নায়কদের জন্য ফ্লাইট এক্সপার্টের বিশেষ উদ্যোগ
  • শ্রম আইনের সংশোধন কবে হবে, তা বলছে না শ্রম মন্ত্রণালয়
  • প্রথমবারের মতো দেশে সংযোজিত এসইউভি গাড়ি আনল প্রোটন
  • এক সপ্তাহে এভারেস্ট জয় কি সত্যিই সম্ভব
  • সম্পর্কের ৫০ বছর: বাংলাদেশে প্রথমবার চীনা ক্যালিগ্রাফি প্রদর্শনী
  • জমজমাট নাটকের পর কিংসের শিরোপা উৎসব
  • শ্রমজীবী মানুষের পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ: শ্রম উপদেষ্টা
  • বন্ধু রাশিয়াকে সাহায্য করতে সেনা পাঠায় উত্তর কোরিয়া