দীর্ঘ আলোচনা ও টানাপোড়েনের পর শেষমেশ জার্মানির ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন পার্টি (সিডিইউ ও সিএসইউ) ও সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এসপিডি) একটি জোট গঠনের চুক্তিতে পৌঁছেছে। বুধবার চুক্তির বিষয়টি সামনে আসে। নির্বাচনের প্রায় ছয় সপ্তাহ পর এই জোটভুক্ত সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত এল।

নির্বাচনের পর জার্মানিতে নতুন সরকারের গঠন নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের পর জোট সরকার গঠনের লক্ষ্যে দুই দল ১৯ বার বৈঠক করেছে।

নতুন জোট সরকার যে সব মূল বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে তা হলো, নতুন করে কোনো কর বাড়ানো হবে না। তবে সাবেক পূর্ব জার্মানির পুনর্গঠনে সংহতি কর বজায় থাকবে। করপোরেট কর ২০২৮ সাল থেকে কমবে। সরবরাহ শৃঙ্খল আইনের বিষয়ে যে নিয়মগুলো ছিল তার অবসান ঘটবে। সামাজিক ভাতাবিষয়ক বুরগারগেল্ড নিয়মের সংস্কার এবং দ্রুত নাগরিকত্ব দেওয়া বন্ধ করা হবে। অতিরিক্ত সময়ে কাজের জন্য করমুক্ত ভাতা চালুর পরিকল্পনা করা হবে।।নির্বাচনের তিন সপ্তাহ পর গত ১৩ মার্চ জোট সরকার গঠনের লক্ষ্যে এই আলোচনা শুরু হয়েছিল। পূর্ববর্তী সমঝোতা অনুযায়ী, প্রতিরক্ষা খাতে ঋণসীমা শিথিল করে এবং অবকাঠামোতে ৫০০ বিলিয়ন ইউরোর বিনিয়োগের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

জোটবদ্ধ দলগুলো আলোচনা সাপেক্ষে জোট সরকার রূপরেখা তৈরি করলেও এই রূপরেখা জোটের দলগুলোকে পৃথকভাবে বিশেষ সম্মেলনের মাধ্যমে দলীয় কর্মীদের সমর্থন পেতে হবে।

জার্মানি মৌলিক শাসনতান্ত্রিক আইন অনুসারে, নতুন পার্লামেন্ট বা বুন্ডেস্ট্যাগকে নির্বাচনের ৩০ দিনের মধ্যে অর্থাৎ গত ২৫ মার্চের মধ্যে তার প্রথম অধিবেশন আহ্বান করতে হতো। সরকার গঠিত না হলেও এর আগে সেই অধিবেশন সম্পূর্ণ হয়েছে। আগামী জোট সরকারে নিয়ম অনুযায়ী সব থেকে বেশি আসন পাওয়া ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন পার্টির প্রধান ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস চ্যান্সেলর হতে চলেছেন। সদ্য নির্বাচিত পার্লামেন্টে সদস্যদের ভোটে নতুন চ্যান্সেলর নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত বর্তমান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ তাঁর পদে বহাল থাকবেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ ট সরক র র গঠন গঠন র

এছাড়াও পড়ুন:

লন্ডন বৈঠকে বিচার ও সংস্কারের বিষয়টি নির্বাচনের মতো গুরুত্ব না পাওয়া অত্যন্ত হতাশাজনক: এনসিপি

লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ সংক্রান্ত আলোচনা যতটুকু গুরুত্ব পেয়েছে, বিচার ও সংস্কার ততটুকু গুরুত্ব পায়নি বলে মনে করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বিষয়টিকে ‘অত্যন্ত হতাশাজনক’ বলেছে দলটি।

আজ শুক্রবার রাতে এনসিপির এক বিবৃতিতে এই প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহউদ্দিন সিফাত বিবৃতিটি পাঠিয়েছেন।

এনসিপির বিবৃতিতে বলা হয়, রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা হিসেবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের আলোচনাকে ইতিবাচকভাবে দেখছে এনসিপি। এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে লন্ডনে অনুষ্ঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যকার বৈঠকটি ‘সংসদ নির্বাচন’ বিষয়ে দলটিকে আস্থায় আনতে সফল হয়েছে সরকার। জাতীয় ঐক্য, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং রাষ্ট্র সংস্কারের প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা জরুরি। কিন্তু বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ সংক্রান্ত আলোচনা যতটুকু গুরুত্ব পেয়েছে, অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে নাগরিকদের প্রধান দাবি তথা বিচার ও সংস্কার ততটুকু গুরুত্ব পায়নি। এটা অত্যন্ত হতাশাজনক বলে মনে করে এনসিপি।

নির্বাচন প্রশ্নে সরকার কেবল একটি রাজনৈতিক দলের অবস্থান ও দাবিকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে বলে বারবার প্রতীয়মান হচ্ছে—এ কথা উল্লেখ করে এনসিপি আরও বলেছে, জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, জুলাই সনদ কার্যকর করা এবং বিচারের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ছাড়া জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন গণ-অভ্যুত্থানকে স্রেফ একটি ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে পরিণত করবে এবং রাষ্ট্র বিনির্মাণের জন–আকাঙ্ক্ষাকে অবদমিত করবে।

জনগণের দাবি তথা জুলাই সনদ রচনা ও কার্যকর করার আগে নির্বাচনের কোনো তারিখ ঘোষিত হলে তা জনগণ মেনে নেবে না বলে উল্লেখ করেছে এনসিপি। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘কাজেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সংস্কারের বিষয়গুলোর ব্যাপারে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা ও জুলাই সনদ রচনা এবং কার্যকর করেই আসন্ন জুলাইকে যথাযথ মর্যাদায় স্মরণ করার উদ্যোগ নিতে সরকারকে জোর দাবি জানাচ্ছে এনসিপি।’

জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, মৌলিক সংস্কার বাস্তবায়নে জুলাই সনদ কার্যকর করা ও বিচারের রোডম্যাপ ঘোষণার পরই নির্বাচন সংক্রান্ত আলোচনা চূড়ান্ত হওয়া উচিত বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে এনসিপি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য, ভালো উদ্যোগ নিলেও বিরোধিতা আসে
  • লন্ডন বৈঠকে বিচার ও সংস্কারের বিষয়টি নির্বাচনের মতো গুরুত্ব না পাওয়া অত্যন্ত হতাশাজনক: এনসিপি
  • ইউনূস-তারেকের বৈঠক দেশের মানুষের জন্য স্বস্তির বার্তা, আশার আলো
  • ড. ইউনূস ও তারেকের বৈঠক জাতির জন্য স্বস্তির বার্তা: ১২ দলীয় জোট
  • ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংস্কার ও জুলাই সনদ