বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি) নিরাপত্তাঝুঁকিতে আছে বলে মত দিয়েছে এ–সংক্রান্ত কেপিআই কমিটি। কমিটির সদস্যরা সম্প্রতি পিএসসির চেয়ারম্যান মোবাশ্বের মোনেমের সাঙ্গে দেখা করে তাঁকে বিষয়ে অবহিত করেছেন। এ বিষয়ে একটি আনুষ্ঠানিক চিঠিও দেওয়ার কথা বলা হয় কমিটি থেকে। এই চিঠি পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানিয়েছেন চেয়ারম্যান।

সরকার ঘোষিত কি–পয়েন্ট ইনস্টলেশন (কেপিআই) সংস্থাগুলোতে ব্যক্তি প্রবেশাধিকার, নিরাপত্তা প্রহরীর কার্যবিধি ও অন্য সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণ করে। কি–পয়েন্ট ইনস্টলেশন (কেপিআই) ঘোষণা ও ব্যবস্থাপনার জন্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দায়িত্বপ্রাপ্ত।

পিএসসির সূত্র জানায়, কেপিআই কমিটির সদস্যরা চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে বলেন, পিএসসির ভেতরে যে সোনালী ব্যাংক আছে, তা নিরাপত্তাঝুঁকি তৈরি করছে। এখন যেহেতু সব চাকরির ফি অনলাইনে দেওয়া যায়, তাই সেভাবে এই ব্যাংক কাজে আসার কথা নয়। এই ব্যংকের অজুহাতে বাইরের লোক পিএসসির মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় প্রবেশ করে নিরাপত্তা বিঘ্নিত করতে পারে। তাই এটি বিবেচনা করতে হবে। এ ছাড়া পিএসসির ভেতরে ডে–কেয়ার সেন্টারে মানুষের অবাধ প্রবেশ। বাইরের মানুষও এখানে প্রবেশ করতে পারে। সেটি নিরাপত্তায় ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। এটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার পক্ষে মত আসে। এ ছাড়া পিএসসি লাগোয়া বস্তি–দোকান, এখান থেকেও নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার কথা জানায় কমিটি। কমিটির সদস্যরা অনানুষ্ঠানিকভাবে ওসব উদ্বেগের কথা তুলে ধরে শিগগিরই আনুষ্ঠানিক চিঠি দেবেন বলে জানান।

আরও পড়ুন৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল ৩০ জুনের মধ্যে০৮ এপ্রিল ২০২৫

মোবাশ্বের মোনেম কমিটির সদস্যদের বলেন, ব্যাংকের বিষয়টি তিনি কমিশনের সভায় অন্য সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেবেন। ডে–কেয়ার সেন্টার তিনি তুলে দেওয়ার পক্ষে নন। তবে এতে প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ, নজরদারি বাড়ানোর উদ্যোগ তিনি নেবেন। আর বস্তির বিষয়ে মানবিকতা বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। তবে এসবই আনুষ্ঠানিক চিঠি পেলে তাঁর কাজের সুবিধা হবে বলে জানান তিনি।

আরও পড়ুনবাংলাদেশী শিক্ষকদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ফেলোশিপ টিইএ, করুন আবেদন২ মিনিট আগে

গত বছরে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠার পর পিএসসির নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় আসে। এতে কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ অনেকে গ্রেপ্তার হন। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ও পিএসসির নতুন কমিশন গঠনের পর কেপিআই কমিটি এ ধরনের উদ্বেগের কথা জানাল।

আরও পড়ুনচার বিসিএসের জট কাটিয়ে এক বছরে পরীক্ষা শেষ করার চিন্তা পিএসসির০৮ এপ্রিল ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কম ট র সদস ব যবস থ প এসস র প রব শ ক প আই

এছাড়াও পড়ুন:

অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার

অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’

সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।

সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’

অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি‌ বরাবর অভিযোগ করেন।

এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ