নওগাঁর নিয়ামতপুরে গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে দু’জন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় ১১ জন আহত হয়েছেন। চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চন্দননগর এলাকার বুধুরিয়া ডাঙ্গাপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন– বুধুরিয়া ডাঙ্গাপাড়া এলাকার মৃত ওছির আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম ও একই এলাকার মৃত আফসের আলীর ছেলে আজিজুল হক।
জানা গেছে, শরিফুল ইসলাম ও লালচানের বুধুরিয়া এলাকায় পাশাপাশি জমি রয়েছে। শরিফুল ইসলামের বাবা তাদের জায়গায় গাছ লাগান। মাপজোক করে দেখা যায়, গাছটি লালচানের জমিতে পড়েছে। উভয় পক্ষের সম্মতিতে শরিফুল ইসলাম বুধবার মেহগনি গাছটি কাটতে গেলে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। বৃহস্পতিবার সকালে শরিফুল ইসলামকে তাঁর অংশ বেড়া দিয়ে ঘিরে নিতে বলেন লালচান। শরিফুল এখন ব্যস্ত আছেন জানালে লালচান ক্ষিপ্ত হন। পরে লালচান, কাশেম হাজিসহ ২০-২২ জন রামদা, কুড়াল, হাসুয়া দিয়ে শরিফুল ও তাঁর লোকজনের ওপর হামলা করে। এতে ঘটনাস্থলেই শরিফুল ইসলামের মৃত্যু হয়। আহতদের মধ্যে আজিজুল ইসলাম রাজশাহী মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। তিনি সেখানে মারা যান।
নিয়ামতপুর থানার ওসি হাবিবুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় ১০ জনকে আটক করা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়। মামলার প্রস্তুতি চলছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতের হামলার আশঙ্কায় পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ১০০০ মাদ্রাসা বন্ধ ঘোষণা
ভারত ও পাকিস্তানের তীব্র উত্তেজনার মধ্যে পাকিস্তাননিয়ন্ত্রতি কাশ্মীরে এক হাজারের বেশি ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (মাদ্রাসা) বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
গত সপ্তাহে ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ হামলার পর ভারতের সম্ভাব্য সামরিক হামলার আশঙ্কায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। দুই দেশই পারমাণবিক শক্তিধর হওয়ায় পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে।
ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে গত ২২ এপ্রিল সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছেন, যাঁদের বেশির ভাগই পর্যটক। এ হামলায় পাকিস্তানের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে ভারত অভিযোগ করে আসছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশটির সেনাবাহিনীকে ওই হামলার জবাব দিতে ‘সম্পূর্ণ স্বাধীনতা’ দিয়েছেন, যাতে তারা উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে পারে।
পাকিস্তান অবশ্য পেহেলগামের হামলায় তাদের বিরুদ্ধে আনা সম্পৃক্ততার অভিযোগ নাকচ করে বলেছে, ভারতের সম্ভাব্য সামরিক হামলার ব্যাপারে তাদের কাছে ‘বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ’ রয়েছে। পাকিস্তান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, ‘যেকোনো আগ্রাসনের জবাব কঠোরভাবে দেওয়া হবে।’
পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার গতকাল বুধবার সকালে এক টেলিভিশন বিবৃতিতে বলেন, ‘আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যেই হামলা হতে পারে।’
আতঙ্কে মানুষ, বাংকার তৈরির প্রস্তুতি
সামরিক উত্তেজনার আশঙ্কায় পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে এক হাজারের বেশি মাদ্রাসা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
কাশ্মীরের ধর্মবিষয়ক দপ্তরের প্রধান হাফিজ নজির আহমদ বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘আমরা কাশ্মীরের সব মাদ্রাসা ১০ দিনের ছুটি ঘোষণা করেছি।’
দপ্তরের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘সীমান্তে উত্তেজনা ও সম্ভাব্য সংঘর্ষের কারণে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) সংলগ্ন অঞ্চলে প্রায় ১৫ লাখ মানুষ বসবাস করেন। এখানকার অনেক মানুষ মাটির নিচে বাংকার তৈরি করছেন। যাঁদের সামর্থ্য আছে, তাঁরা সেগুলো সিমেন্ট দিয়েও মজবুত করছেন।
এলওসির কাছে চাকোঠি এলাকায় বসবাসরত ৪৪ বছর বয়সী দোকানি ইফতেখার আহমদ মির বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘এক সপ্তাহ ধরে আমরা সব সময় আতঙ্কে আছি, বিশেষ করে আমাদের বাচ্চাদের নিরাপত্তা নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় আছি।’
ইফতেখার বলেন, ‘ওরা স্কুল বা মাদ্রাসা শেষে আর বাইরে যাতে ঘোরাফেরা না করে সরাসরি বাড়ি ফিরে আসে, সে বিষয়টি আমরা নিশ্চিত করি।’
পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের প্রধান শহর মুজাফফরাবাদে জরুরি সেবাকর্মীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিশুদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেছেন। ভারতের পক্ষ থেকে হামলা হলে কী করতে হবে, প্রশিক্ষণে সেগুলো শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে।
১১ বছর বয়সী আলি রেজা বলে, ‘আমরা শিখেছি কীভাবে আহত কাউকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে হয়, কীভাবে স্ট্রেচারে বহন করতে হয় আর আগুন নেভাতে হয়।’