ট্রাম্পের প্রিয় ‘ট্যারিফ’ শব্দটি যেভাবে আরবি থেকে ইংরেজিতে এল
Published: 11th, April 2025 GMT
‘অভিধানের মধ্যে আমার কাছে সবচেয়ে সুন্দর শব্দ ট্যারিফ। এটাই আমার সবচেয়ে প্রিয় শব্দ।’
যুক্তরাষ্ট্রের গত নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে এক অনুষ্ঠানে ট্যারিফ বা শুল্ক শব্দটি নিয়ে এভাবেই নিজের মনোভাব প্রকাশ করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্যারিফ শব্দটি ট্রাম্পের কত প্রিয়, তা চলতি মাসের শুরুতে বোঝা গেছে। ২ এপ্রিল তিনি যখন বিশ্বের প্রায় সব দেশে বিভিন্ন মাত্রায় শুল্ক আরোপ করলেন, তখন সারা দুনিয়ায় এক ধরনের আতঙ্কের ঢেউ বয়ে গেছে। পুঁজিবাজারে নেমেছিল রেকর্ড ধস। যদিও পরে তিনি ৯ এপ্রিল সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে চীন ছাড়া অন্যান্য দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেছেন।
কিন্তু কথা হলো ট্রাম্পের প্রিয় ট্যারিফ কোন ভাষার শব্দ? এর উৎপত্তি কোথায়?
সোজাভাবে বলতে গেলে, ট্যারিফ শব্দটি আরবি শব্দ। শব্দটি আরবি থেকে কীভাবে ইউরোপে জনপ্রিয় হলো, তা নিয়ে অন্তত দুটি শক্তিশালী মত আছে।
সাদামাটাভাবে বললে, ট্যারিফ এক ধরনের কর (ট্যাক্স)। কোনো পণ্য এক দেশ থেকে অন্য দেশে আমদানি-রপ্তানির ওপর এটা আরোপ করা হয়ে থাকে।
একটি বহুল প্রচলিত মত হলো, ইংরেজিতে ট্যারিফ (tariff) শব্দটা এসেছে ফরাসি তারিফ (tarif) থেকে। আবার ফরাসিতে শব্দটি এসেছে ইতালীয় ভাষার তেরিফা (tariffa) শব্দ থেকে।
তেরিফা বলতে দাম বা চার্জের তালিকা বোঝায়। কর বা আমদানি শুল্কের ফর্দ বোঝাতেও শব্দটি ব্যবহার করা হয়। ইতালি ভাষায় শব্দটা এসেছে ল্যাটিন পরিভাষা তারিফা (tarifa) থেকে, যার অর্থ দাম নির্ধারণ করা।
ধারণা করা হয়, মধ্যযুগে ওসমানি সাম্রাজ্যের তুর্কিদের মাধ্যমে শব্দটি ল্যাটিন ভাষাভাষী জগতে প্রবেশে করে। তুর্কিরা দামের ফর্দ বোঝাতে শব্দটি ব্যবহার করত, যেটি তারা তায়রিফা (ta'rifa) নামক একটি ফারসি ভাষা থেকে পেয়েছিল।
আরও পড়ুনইতিহাসের ভয়ংকর ট্যারিফ যুদ্ধে কে জিতবে, কে হারবে২২ ঘণ্টা আগেমার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর (ছবিতে নেই) সঙ্গে বৈঠকে। ৭ এপ্রিল ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
শাবানার আজ জন্মদিন
ঢাকাই চলচ্চিত্রের জীবন্ত কিংবদন্তি শাবানা। রবিবার (১৫ জুন) এ অভিনেত্রীর জন্মদিন। ১৯৫২ সালের এই দিনে চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার ডাবুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বাংলা সিনেমার অবিস্মরণীয় এই তারকা। তার প্রকৃত নাম আফরোজা সুলতানা রত্না। কিন্তু সারা দেশের মানুষ তাকে হৃদয়ে ধারণ করে ‘শাবানা’ নামে।
মাত্র ১০ বছর বয়সে শিশুশিল্পী হিসেবে ‘নতুন সুর’ (১৯৬২) সিনেমার মাধ্যমে অভিনয়ে অভিষেক হয় শাবানার। সেখান থেকে শুরু—তারপর এক দীর্ঘ পথচলা, যেখানে শাবানা হয়ে ওঠেন একের পর এক যুগান্তকারী সিনেমার মুখ। চার দশকের ক্যারিয়ারে প্রায় ৩০০ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে বাংলা সিনেমার আকাশে নিজেকে স্থায়ী নক্ষত্রে রূপান্তরিত করেন।
‘ভাত দে’, ‘অবুঝ মন’, ‘ছুটির ঘণ্টা’, ‘ওরা এগারো জন’, ‘চাঁপা ডাঙার বউ’, ‘আক্রোশ’, ‘রাঙা ভাবি’, ‘বাংলার নায়ক’—এমন অসংখ্য কালজয়ী সিনেমায় অভিনয় করে দর্শকের মনে দাগ কেটেছেন শাবানা। জনপ্রিয়তা ও অভিনয়গুণে অনন্য এক শিল্পী, যিনি রোমান্স থেকে শুরু করে সমাজধর্মী, দেশপ্রেম বা পারিবারিক—সব ধরনের চরিত্রে নিজেকে নিখুঁতভাবে তুলে ধরতে পেরেছেন।
আরো পড়ুন:
‘অত্যাচারী’ স্বামীর মৃত্যুতে কারিশমার শোক, যা বললেন জয়া
দর্শক বলছেন আমি যেন শুভ ভাইকে বিয়ে করি: মন্দিরা
অভিনয়ের স্বীকৃতিস্বরূপ ৯ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন শাবানা। প্রযোজক হিসেবেও পেয়েছেন জাতীয় পুরস্কার। নাট্য ও সংস্কৃতি জগৎ থেকেও অর্জন করেছেন বাচসাস, নাট্যসভা, ললিতকলা একাডেমি ও কথক একাডেমি পুরস্কার।
ব্যক্তিজীবনে ১৯৭৩ সালে বিয়ে করেন সরকারি কর্মকর্তা ও প্রযোজক ওয়াহিদ সাদিককে। তিন সন্তানের জননী শাবানা ১৯৯৭ সালে হঠাৎ করেই অভিনয় জীবন থেকে বিদায় নেন। ২০০০ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সিতে পরিবার নিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন তিনি।
অভিনয়ে ফিরবেন কি না, সে প্রশ্ন বহুবার উঠেছে। কিন্তু শাবানা এমন এক নাম, যার অবদান আর স্মৃতিময়তা কখনো ম্লান হওয়ার নয়।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত