ট্রাম্প-পুতিন দুজনই জেলেনস্কির বিদায় চান, তা কি সম্ভব
Published: 12th, April 2025 GMT
ইউক্রেন বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দুজনই দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির প্রতি তাঁদের প্রচণ্ড অসন্তোষের দিক দিয়ে একবিন্দুতে এসেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া উভয় দেশের নেতারাই চাইছেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের পদ থেকে জেলেনস্কি সরে যান।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ট্রাম্প দাবি করেন, ‘আমরা এমন একটি অবস্থায় আছি, যেখানে ইউক্রেনে কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি, যেখানে সামরিক শাসন চলছে এবং বলতে কষ্ট লাগছে যে তাঁর (জেলেনস্কি) জনপ্রিয়তা ৪ শতাংশে নেমে এসেছে।’
ইউক্রেনের সংবিধান ও নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, সামরিক শাসন চলাকালে নির্বাচন অনুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে এবং যুদ্ধ চলাকালে নির্বাচন করা প্রায় অসম্ভব।এর পাঁচ দিন পর পুতিন ট্রাম্পের বক্তব্যকে সমর্থন জানান। রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আসলে তাঁর (জেলেনস্কির) কত শতাংশ জনসমর্থন আছে, সেটা বড় কথা নয়, তা ৪ শতাংশ বা যা-ই হোক না কেন। গুরুত্বপূর্ণ হলো, আমাদের কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী, তাঁর জনপ্রিয়তা তাঁর সম্ভাব্য রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীর তুলনায় ঠিক অর্ধেক।’ রুশ প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ইউক্রেনের সাবেক শীর্ষ জেনারেল ভালেরি জালুঝনির দিকে ইঙ্গিত করে এ কথা বলেন। এই জেনারেলকে গত বছর চাকরিচ্যুত করেছিলেন জেলেনস্কি।
ট্রাম্প ও পুতিন দুজনই জেলেনস্কির জনপ্রিয়তার বিষয়ে ভুল ছিলেন।
কিয়েভ ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব সোশিওলজির জরিপ অনুযায়ী, ট্রাম্পের সঙ্গে জেলেনস্কির কূটনৈতিক টানাপোড়েন ইউক্রেনের ভেতরে তাঁর জনপ্রিয়তা বাড়িয়ে দেয়। ডিসেম্বরে তার জনপ্রিয়তা ছিল ৫২ শতাংশ, যা ফেব্রুয়ারিতে বেড়ে দাঁড়ায় ৫৭ শতাংশে।
অবশ্য জরিপ অনুযায়ী, ৩৭ শতাংশ ইউক্রেনীয় জেলেনস্কিকে বিশ্বাস করেন না।
সমালোচকেরা জেলেনস্কির বিরুদ্ধে নাগরিকদের বাক্স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করার অভিযোগ করেন। এ ছাড়া তিনি নিজের রাজনৈতিক দল ‘সার্ভেন্ট অব দ্য পিপল’–এর ভেতর দুর্নীতি বন্ধে ব্যর্থ হয়েছেন, বিশেষ করে সামরিক বাহিনীর ভেতরে দুর্নীতি বন্ধে ব্যর্থ হয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে জালুঝনিকে বরখাস্ত করার জন্যও তাঁর সমালোচনা হয়।
বর্তমানে যুক্তরাজ্যে ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী জালুঝনির ব্যাপারে ঠিকই বলেছিলেন পুতিন। কারণ, জালুঝনিই ইউক্রেনের একমাত্র ব্যক্তি, যিনি জেলেনস্কিকে হারাতে পারেন।
শক্তপোক্ত, স্বল্পভাষী এই জেনারেলের ৬২ শতাংশ জনসমর্থন রয়েছে। তবে তিনি একাধিকবার বলেছেন, যুদ্ধ চলাকালে তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নেবেন না।
জালুঝনি গত সপ্তাহে ইউক্রেনের বার্তা সংস্থা আরবিসি–ইউক্রেনকে বলেছেন, ‘যখন যুদ্ধ চলছে, তখন আমাদের সবার উচিত দেশকে রক্ষার জন্য কাজ করা, নির্বাচনের ব্যাপারে চিন্তা করা নয়।’
সে যা–ই হোক না কেন ২০১৯ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জেতার আগে জেলেনস্কি যেসব কৌশল গ্রহণ করেছিলেন এবং সফল হয়েছিলেন, সেগুলোই জালুঝনিও চতুরতার সঙ্গে করে চলেছেন।
জালুঝনি কদাচিৎ সাক্ষাৎকার দেন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও তাঁর উপস্থিতি সীমিত করে রেখেছেন, যেন তাঁর রাজনৈতিক অবস্থানের বিষয়ে ভোটাররা আন্দাজ করতে থাকেন।
জালুঝনি ট্রাম্পের প্রতি মাত্র একবার ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। ৬ মার্চ লন্ডনের চাথাম হাউসে এক সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে ‘বিশ্বব্যবস্থা ধ্বংসের’ এবং ‘পশ্চিমা বিশ্বের ঐক্য নিয়ে সন্দেহ তৈরির’ অভিযোগ তোলেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইউক্রেনে দ্রুত একটি ভোটের আয়োজন করার দাবি করলে এর জবাবে তিনি এ কথাগুলো বলেন।
এর অন্তর্নিহিত বার্তাটি ছিল স্পষ্ট, নিশ্চিত জয়ের সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও জালুঝনি এখন জেলেনস্কিকে চ্যালেঞ্জ করছেন না।
এদিকে শোনা যাচ্ছে, ট্রাম্পের প্রতিনিধিদল বারবার জেলেনস্কির বেসামরিক রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে, যদিও তাঁদের জনপ্রিয়তা খুবই কম।
মার্চের শুরুতে ট্রাম্পের সহকারীরা ইউক্রেনের বর্ষীয়ান রাজনীতিক ও দুবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইউলিয়া টিমোশেঙ্কোর সঙ্গে কথা বলেছেন বলে খবর প্রকাশ হয়েছে।
একসময় যিনি তাঁর চুলের ‘হালো বিনুনি’ স্টাইলের জন্য পরিচিতি পেয়েছিলেন।
কমেডিয়ান থেকে রাজনীতিতে আসা জেলেনস্কি প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেওয়ার আগপর্যন্ত ২০১৯ সালের নির্বাচনে জনমত জরিপে এগিয়ে ছিলেন টিমোশেঙ্কো।
কিন্তু বর্তমানে মাত্র ১০ দশমিক ৬ শতাংশ টিমোশেঙ্কোর প্রতি আস্থা রাখেন বলে কিয়েভভিত্তিক জরিপ সংস্থা রোজুমকভ সেন্টারের ২৫ মার্চের জরিপে উঠে এসেছে। টিমোশেঙ্কো ইউক্রেনের বাতকিভশচিনা (ফাদারল্যান্ড) নামের দলের প্রধান।
জেলেনস্কির পূর্বসূরি এবং প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ পোরোশেঙ্কো অবশ্য জনপ্রিয়তায় টিমোশেঙ্কোর চেয়ে কিছুটা এগিয়ে আছেন।
জরিপ অনুযায়ী, ১৭ শতাংশ ইউক্রেনীয় পেট্রো পোরোশেঙ্কোর প্রতি আস্থা রাখেন। ইউক্রেনের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি থেকে প্রেসিডেন্ট হওয়া পোরোশেঙ্কো ২০১৪ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই এবং ভাষা ও জাতিগত বিভেদ ভুলে সব ইউক্রেনীয়কে ঐক্যবদ্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি ওই নির্বাচনে জয় পান।
কিন্তু প্রেসিডেন্ট থাকাকালে পোরোশেঙ্কো নানা দুর্নীতি কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়েন এবং ২০১৯ সালের নির্বাচনে মাত্র ২৪ শতাংশ ভোট পেয়ে তিনি জেলেনস্কির কাছে পরাজিত হন।
পোরোশেঙ্কো নিশ্চিত করেছেন, ট্রাম্পের সহকারীরা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। তবে বৈঠকটি আগাম নির্বাচন নিয়ে ছিল বলে যে অভিযোগ উঠেছে, তা তিনি অস্বীকার করেছেন।
পোরোশেঙ্কো ফেসবুকে লিখেছেন, শুধু যুদ্ধবিরতি ও নিরাপত্তা নিশ্চয়তার শর্তে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের পরই ইউক্রেনে নির্বাচন সম্ভব।
ইউক্রেনের সংবিধান ও নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, সামরিক শাসন চলাকালে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে এবং যুদ্ধ চলাকালে নির্বাচন আয়োজন করা প্রায় অসম্ভব।
কারণ, ইউক্রেনে ভোট গ্রহণের জন্য প্রায় সাত লাখ সেনাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নিতে হবে, যাতে তাঁরা ভোট দিতে পারেন বা চাইলে তাঁদের কেউ প্রার্থী হতে পারেন ও প্রচার চালাতে পারেন। এটি কার্যত অসম্ভব, বিশেষ করে যখন রুশ বাহিনী ১ হাজার ২০০ কিলোমিটার (৭৫০ মাইল) দীর্ঘ ফ্রন্টলাইনজুড়ে আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে। যদিও মার্চে রুশদের নতুন এলাকা দখলের অগ্রগতি ছিল কম।
বিশ্লেষণধর্মী টেলিগ্রাম চ্যানেল খোরটিটসিয়ার তথ্যমতে, রুশ বাহিনী মার্চ মাসে মাত্র ১৩৩ বর্গকিলোমিটার (৫১ বর্গমাইল) এলাকা দখল করতে পেরেছে, যার বেশি ভাগই দনবাসের। গত নভেম্বরে দখল করা ৭৩০ বর্গকিলোমিটার এলাকার তুলনায় যা একেবারেই কম।
অবশ্য পুতিন তাঁর বাহিনীর ‘বড় জয়ের’ আশা করছেন এবং তিনি ট্রাম্প প্রস্তাবিত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির জন্য একের পর এক নতুন শর্ত সামনে আনছেন।
ভোটের সময় জনসমাগম অনিবার্য, তাই রাশিয়ার প্রায় প্রতিদিনকার গোলাবর্ষণ ইউক্রেনের শহরগুলোর জন্য বড় নিরাপত্তা হুমকি।
সাধারণত ইউক্রেনে সরকারি বিদ্যালয় ও প্রশাসনিক ভবনে ভোটকেন্দ্র করা হয়। কিন্তু যুদ্ধে ইতোমধ্যে হাজার হাজার ভবন ধ্বংস হয়েছে।
চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে সোভিয়েত যুগ–পরবর্তী ইউক্রেনের প্রতিটি নির্বাচন পর্যবেক্ষণে অংশ নেওয়া আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করতে পারবে না কিয়েভ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউক র ন র স কর ছ ল ন র র জন র জন য অন য য়
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই বিরোধিতা: ৩০ শিক্ষক-কর্মচারী ও ৩৩ ছাত্রলীগ নেতার ‘শাস্তি’
জুলাই গণঅভ্যুত্থান বিরোধী তালিকায় থাকা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ৩০ জন শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী সাময়িক বরখাস্ত এবং একই অভিযোগে ৩৩ জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে বহিষ্কার বা সনদ বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭১তম সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আরো পড়ুন:
আ.লীগে যোগ দেওয়া মুবিনকে আইনজীবী ফোরাম থেকে বহিষ্কার
ববির ৪ শিক্ষার্থী বহিষ্কার
সিন্ডিকেট সভা সূত্রে জানা গেছে, জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের বিরুদ্ধে ভূমিকায় থাকা ইবির ১৯ জন শিক্ষক, ১১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে ‘শাস্তি নির্ধারণ কমিটি’ করবেন উপাচার্য অধ্যাপক নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ।
এদিকে একই অপরাধে জড়িত থাকায় ৩৩ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার ও সনদ বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিন্ডিকেট। যাদের পড়াশোনা শেষ হয়েছে, সেই শিক্ষার্থীদের সনদ বাতিল করা হবে। আর যারা অধ্যয়নরত, তাদের বহিষ্কার করা হবে।
এর আগে জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের বিরুদ্ধে ভূমিকায় অবতীর্ণ শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের চিহ্নিতকরণে গত ১৫ মার্চ আল-হাদীস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আকতার হোসেনকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি করে প্রশাসন।
এই কমিটি প্রত্যক্ষদর্শীদের দেওয়া লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ, বিভিন্ন তথ্যচিত্র, ভিডিও এবং পত্রিকার খবর পর্যালোচনা করে তালিকায় থাকা শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানবিরোধী এবং নিবর্তনমূলক কার্যকলাপের সংশ্লিষ্টতা পায়।
কমিটি প্রতিবেদন জমা দিলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। সর্বশেষ কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সিন্ডিকেট সভায় তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সাময়িক বরখাস্তের তালিকায় থাকা শিক্ষকরা হলেন: ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান, ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মন, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মা, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. বাকী বিল্লাহ ও অধ্যাপক ড. রবিউল হোসেন, হিসাববিজ্ঞান ও তথ্যপদ্ধতি বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী আখতার হোসেন ও অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরিন, ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. এ. এইচ. এম আক্তারুল ইসলাম ও অধ্যাপক ড. মিয়া রাশিদুজ্জামান।
ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবুল আরফিনসহ আরো রয়েছেন, ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার, আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহজাহান মণ্ডল ও অধ্যাপক ড. রেবা মণ্ডল, মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাজেদুল হক, ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আফরোজা বানু, আল-ফিকহ অ্যান্ড ল বিভাগের অধ্যাপক ড. আমজাদ হোসেন, ল অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মেহেদী হাসান এবং কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জয়শ্রী সেন।
সাসপেন্ড হওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তালিকায় রয়েছেন প্রশাসন ও সংস্থাপন শাখার উপ-রেজিস্ট্রার আলমগীর হোসেন খান ও আব্দুল হান্নান, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দফতরের সহকারী রেজিস্ট্রার ও কর্মকর্তা সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওয়ালিদ হাসান মুকুট, একই দফতরের উপ-রেজিস্ট্রার আব্দুস সালাম সেলিম, প্রশাসন ও সংস্থাপন শাখার উপ-রেজিস্ট্রার ড. ইব্রাহীম হোসেন সোনা।
সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের শাখা কর্মকর্তা উকীল উদ্দিনসহ তালিকায় নাম রয়েছে ফার্মেসি বিভাগের জাহাঙ্গীর আলম (শিমুল), আইসিটি সেলের প্রশাসনিক কর্মকর্তা জে এম ইলিয়াস, অর্থ ও হিসাব বিভাগের শাখা কর্মকর্তা তোফাজ্জেল হোসেন, তথ্য, প্রকাশনা ও জনসংযোগ দপ্তরের উপ-রেজিস্ট্রার (ফটোগ্রাফি) শেখ আবু সিদ্দিক রোকন এবং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দফতরের সহকারী রেজিস্ট্রার মাসুদুর রহমানের।
বহিষ্কার ও সদন বাতিল হওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন: ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৩-১৪ বর্ষের বিপুল খান, অর্থনীতি বিভাগের ২০১৪-১৫ বর্ষের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৫-১৬ বর্ষের মেহেদী হাসান হাফিজ ও শাহীন আলম, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের রতন রায়।
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৪-১৫ বর্ষের মুন্সি কামরুল হাসান অনিকসহ তালিকায় রয়েছেন, মার্কেটিং বিভাগের ২০১৫-১৬ বর্ষের হুসাইন মজুমদার, বাংলা বিভাগের ২০১৬-১৭ বর্ষের তরিকুল ইসলাম।
ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের মৃদুল রাব্বী, ইংরেজি বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের ফজলে রাব্বী, ল অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের শাকিল, ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৭-১৮ বর্ষের শিমুল খান, আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের কামাল হোসেন, ইংরেজি বিভাগের ২০২০-২১ বর্ষের মাসুদ রানা, আরবী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের মেজবাহুল ইসলাম বহিষ্কার ও সনদ বাতিলের তালিকায় রয়েছেন।
সমাজকল্যাণ বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের অনিক কুমার, বাংলা বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের আব্দুল আলিম, ল অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের বিজন রায়, শেখ সোহাগ ও শাওনও এই শাস্তি পেয়েছেন।
জুলাই অভ্যুত্থানের বিরোধিতা করায় শাস্তি পেয়েছেন অর্থনীতি বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের তানভীর ও শেখ সাদি, সমাজকল্যাণ বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের মাজহারুল ইসলাম, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০২০-২১ বর্ষের মনিরুল ইসলাম আসিফ, সমাজকল্যাণ বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের মারুফ ইসলাম, চারুকলা বিভাগের ২০২০-২১ বর্ষের পিয়াস, বাংলা বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের ফারহান লাবিব ধ্রুব, আল-ফিকহ অ্যান্ড ল বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের প্রাঞ্জল, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের নাবিল আহমেদ ইমন।
ফিনান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৭-১৮ বর্ষের রাফিদ, লোক প্রশাসন বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের আদনান আলি পাটোয়ারি, ল অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের লিয়াফত ইসলাম রাকিব এবং ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের ইমামুল মুক্তাকী শিমুলও শাস্তির তালিকায় রয়েছেন।
এদিকে জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে প্রকাশ্যে বিরোধিতাকারী হিসেবে এই ৬৩ জন শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যবস্থা নিলেও তাদের উস্কানিদাতা এবং পেছন থেকে আন্দোলন দমনকারী অনেকেই ধরাছোয়ার বাইরে থেকে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। একই অভিযোগ অভিযুক্তদেরও। তবে তাদের বিরুদ্ধেও তদন্ত চলমান রয়েছে এবং পর্যায়ক্রমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।
ঢাকা/তানিম/রাসেল