পহেলা বৈশাখ নিয়ে উচ্ছ্বাসের যেন শেষ নেই বাঙালির। মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণসহ দিনভর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘুরে বেড়ানো, বাঙালিয়ানায় তৈরি খাবার খাওয়া, মেলায় গিয়ে দেশীয় পণ্য কেনা, গান-বাজনাতেই মেতে থাকেন বেশিরভাগ মানুষ। তবে রাজধানীর দক্ষিণে বাংলা নববর্ষবরণের বড় আয়োজন থাকলেও উত্তরে তেমন থাকে না। সেই তাগিদ থেকে গত বছর বর্ষবরণের প্রথম উদ্যোগ নেয় ‘অলিগলি বর্ষবরণ বন্ধুগণ’। আয়োজনে সাড়া পাওয়ায় এবারও রাজধানীর উত্তরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দুই দিনব্যাপী ‘অলিগলি হালখাতা’।

আগামী ১৩ এবং ১৪ এপ্রিল রাজধানীর গুলশানের বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমদ পার্কে এ উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। এই উদ্যোগে সহযোগিতা করেছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ।

শুক্রবার বিকেলে গুলশানের বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমদ পার্কে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান 'গুলশান সোসাইটি'র মহাসচিব সৈয়দ আহসান হাবীব।

সৈয়দ আহসান হাবীব বলেন, ভালোবাসায়, সম্প্রীতিতে, সৌহার্দ্যে, সকলের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে অসাধারণ ভরপুর প্রাণের সম্মিলনে গতবার এই পার্কে বাংলা নববর্ষ উদযাপন হয়েছে। সেই প্রাণের সাড়া নাড়া দিয়ে গেছে বলেই এবার আবারও বাংলা নববর্ষ উদযাপনে মিলিত হয়েছি। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি), ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশসহ (ডিএমপি) বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতায় নববর্ষ উদযাপন হবে।

তিনি আরও বলেন, বাংলার উদারনৈতিক বহুত্ববাদী, অসাম্প্রদায়িক, মানবতাবাদী সংস্কৃতি আমাদের শক্তি। কর্তৃত্ববাদ নয়, সমাজে জাগুক, বিরাজিত হোক মানবিক মর্যাদা, চিন্তা-সংস্কৃতির সমন্বয়ের শক্তি। যা আমাদের মুক্তিযুদ্ধেরও আদর্শ। আর মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ঘটা বাংলাদেশের অভ্যুত্থান কেবল রাজনৈতিক নয়, এক সাংস্কৃতিক অভ্যুত্থানও বটে। তাই সংস্কৃতি হোক আমাদের কারেন্সি। দূর হয়ে যাক আবর্জনা- সে বছরের হোক কিংবা মন-মগজের।

বর্ষবরণ উৎসব মালা

প্রথমদিন (চৈত্র সংক্রান্তি) বিকেল ৪টা থেকে চারুকারু প্রদর্শনী হবে। রাত ৮টায় ইসলাম উদ্দিন পালাকারের পালাগান অনুষ্ঠিত হবে। এরপর রাত ৯টায় আলপনা আলাপ। এরপর ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ ও নাগরিকদের অংশগ্রহণে রাত ১০টায় পার্কের সামনে থেকে গুলশান দুই মোড় পর্যন্ত রাস্তা জুড়ে আলপনা আঁকা হবে।

দ্বিতীয় দিন (পয়লা বৈশাখ) সকাল সাড়ে আটটায় রেচেল প্রিয়াঙ্কা ও তার দল বর্ষবরণ নৃত্য প্রদর্শন করবেন। নৃত্যের পরেই শুভেচ্ছা বক্তব্য দেবেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন মুরশিদ, অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, গুলশান সোসাইটি ও অলিগলি-বর্ষবরণ বন্ধুগণ প্রমুখ।

পরবর্তীতে সকাল ১০টায় গান পরিবেশন করবে গানের দল ও জলের গান। এরপর চিত্রশিল্পীদের অংশগ্রহণে আর্টক্যাম্প থাকবেন ফরিদা জামান, কনক চাঁপা চাকমা, শিশির ভট্টাচার্য, জামাল আহমেদ, মোহাম্মদ ইউনুস, আহম্মেদ শামসুদ্দোহা, শেখ আফজাল, মোহাম্মদ ইকবাল, বীরেন সোম, আনিসুজ্জামান, বিশ্বজিৎ গোস্বামী।

সকাল এগারোটায় সাঈদ ফিরদৌসের সঞ্চালনায় ভাবালাপ পর্ব ১ "সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদ" আলাপ করবেন- সাংবাদিক নুরুল কবির, সারা যাকের (সংস্কৃতিজন), আফজাল হোসেন (নাট্যব্যক্তিত্ব), অধ্যাপক প্রশান্ত ত্রিপুরা। ভাবালাপ-এর ২য় পর্ব ভরদুপুরের গল্পসল্প "জনপরিসরে নারীর উপস্থিতি" আলাপ করবেন- ব্যারিস্টার সারা হোসেন, ব্যারিস্টার শুক্লা সিরাজ, শিক্ষক মিথিলা মাহফুজ, আদিবাসী অ্যাক্টিভিস্ট ডালিয়া চাকমা। বিকাল ৪টায় পাড়ার বাচ্চাদের সমবেত নৃত্য প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে।

বিকেল সোয়া ৪টায় গানালাপ- সমবেত গান: "সব সখি মিলি গাই মঙ্গলগান" গাইবেন: সভ্যতা, সুমেল, আনান, জয়িতা, নাভিন, লাবিক। এলকেজি স্টুডিও’র পরিচালনায়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় সমগীত গানের দল, বাপ্পা মজুমদার ও দলছুট গান পরিবেশন করবেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম হ ম মদ নববর ষ করব ন

এছাড়াও পড়ুন:

কলিজা ঠান্ডা করে দেওয়া ছবি ‘উৎসব’

‘উৎসব’ দেখে মন ভরে গেছে। বাংলাদেশের সিনেমা দেখতে যাওয়া, বয়স হওয়ার পর, একটা বিড়ম্বনা। একটা কারণ, সিনেমা হলের বের হওয়ার দরজার মুখে ক্যামেরা দাঁড়িয়ে থাকে। বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জিজ্ঞাসা করে, ‘কেমন দেখলেন।’ কী বলবেন? সিনেমা যাঁরা বানান, তাঁরা আমাদের ভাইবেরাদার, বোন-দুলাভাই, মামা-চাচা, ভাইপো-ভাইঝি, না হলে আমার আরেকটা নাটকের প্রডুসার, একটা চ্যানেলের মালিক, সত্য কথা বলে এই বয়সে বন্ধুহারা, ভাইহারা হতে কে চায়।

বেশির ভাগ সিনেমা শেষ পর্যন্ত দেখলে একটা উপকার হয়, নিজের ধৈর্যশক্তি বাড়ে, সহ্যক্ষমতা পোক্ত হয়! সম্পূর্ণ ভালো লেগেছে, এমন ছবি আমার তালিকায় খুব কম। একটা দুটোর নাম করি, ‘সূর্য দীঘল বাড়ি’, ‘মুক্তির গান’। ‘নিরন্তর’ ভালো লেগেছিল, ‘শঙ্খনাদ’ পছন্দ করেছিলাম, ‘টেলিভিশন’ কিংবা ‘স্বপ্নজাল’ দেখেও প্রশংসা করেছিলাম...এই রকম হাতে গোনা কয়েকটা ছবি। হাতে গোনা ব্যাপারটা হলো, আপনি হাতের আঙুল দিয়ে গুনতে পারবেন, অঙ্গুলিমেয়, আঙুলের দাগ ধরে ধরে গুনবেন, বিশটার বেশি হবে না। আমার মনে হয়, দুই হাতের দশটা আঙুলের চেয়ে বেশি বাংলাদেশি সিনেমার নাম আমি বলতে পারব না, যা আমার বেশ ভালো লেগেছে।

তানিম নূর পরিচালিত এবারের ঈদের ছবি ‘উৎসব’ দেখলাম ১৩ জুন ২০২৫। অপরাহ্ণ শো। দুদিন আগেই টিকিট কাটা ছিল। আমরা আটজনের একটা দল, বন্ধুবান্ধব, ছেলেমেয়েসমেত স্টার সিনেপ্লেক্সে গিয়ে হাজির। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হলো। এত বড় লাইন, সবার হাতে টিকিট, সবাই একটা সিনেমা দেখতে দাঁড়িয়ে আছেন হাসিমুখে, কী সুন্দর একটা দৃশ্য।

উৎসব সিনেমার পোস্টার

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কপালে ১৩টি এবং থুতনিতে ৪টি সেলাই করা লাগে
  • দেশের পর এবার বিদেশেও ঈদের সিনেমার মুক্তি
  • বকুলতলায় বৃষ্টির সুর
  • কলকাতায় নতুন সিনেমার শুটিং শুরু করলেন জয়া
  • বর্ষা উৎসবে বন ও পরিবেশ ধ্বংসের প্রতিবাদ, পান্থকুঞ্জ পার্ক রক্ষাসহ কয়েকটি দাবি
  • নাচ-গান-আবৃত্তিতে চারুকলায় বর্ষাবরণ
  • মেঘ-রোদের লুকোচুরির সকালে নাচে-গানে বর্ষাবরণ 
  • মেঘ-রোদের লুকোচুরি সকালে নাচে-গানে বর্ষাবরণ 
  • কলিজা ঠান্ডা করে দেওয়া ছবি ‘উৎসব’
  • ভালোবাসার ফ্রেমে মেহজাবীন-রাজীব, পেছনে আইফেল টাওয়ার