ইউক্রেন হয়ে ইউরোপে রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহের পাইপলাইনের নিয়ন্ত্রণ দাবি যুক্তরাষ্ট্রের
Published: 13th, April 2025 GMT
ইউক্রেনে থাকা একটি গুরুত্বপূর্ণ গ্যাস পাইপলাইনের নিয়ন্ত্রণ দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই পাইপলাইন দিয়ে রাশিয়া থেকে গ্যাস ইউরোপে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। বিভিন্ন খবরে এ তথ্য উল্লেখ করে ট্রাম্প প্রশাসনের এমন চাওয়াকে ঔপনিবেশিক ধারার নিপীড়ন হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চান, তাঁর পূর্বসূরি জো বাইডেনের শাসনামলে ইউক্রেনকে দেওয়া অস্ত্র সহায়তার ‘বিনিময়ে’ কিয়েভ যেন তার প্রাকৃতিক সম্পদের মজুত যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেয়।যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে একটি খনিজ চুক্তি সই নিয়ে হোয়াইট হাউসের প্রস্তাবের ওপর আলোচনা করতে গত শুক্রবার বৈঠক করেন দুই দেশের কর্মকর্তারা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চান, তাঁর পূর্বসূরি জো বাইডেনের শাসনামলে ইউক্রেনকে দেওয়া অস্ত্র সহায়তার ‘বিনিময়ে’ কিয়েভ যেন তার প্রাকৃতিক সম্পদের মজুত যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেয়।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, ইউক্রেনের খনিজ সম্পদের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দেশটির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনা ক্রমেই বেশি বিদ্বেষপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এ নিয়ে হোয়াইট হাউসের দেওয়া খসড়া প্রস্তাবে আগের চেয়ে অনেক বেশি দাবি করা হয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে ট্রাম্প প্রশাসন ইউক্রেনের কাছে তেল ও গ্যাসের পাশাপাশি তার ৫০০ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের বিরল খনিজ সম্পদ দেওয়ার দাবি জানায়।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় জ্বালানি প্রতিষ্ঠান গ্যাজপ্রমের সঙ্গে পাঁচ বছরের চুক্তির মেয়াদ শেষ হলে গত ১ জানুয়ারি এ পাইপলাইন দিয়ে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয় ইউক্রেন। এর আগে ইউক্রেন ও রাশিয়া দুই দেশই এ পাইপলাইন দিয়ে কোটি কোটি ইউরো ট্রানজিট ফি আয় করেছে। এমনকি রাশিয়া-ইউক্রেন পুরোদমে যুদ্ধ চলার মধ্যেও প্রথম তিন বছর তাদের এ আয় অব্যাহত ছিল।শুক্রবারের আলোচনার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত একটি সূত্র বার্তা সংস্থাটিকে জানায়, সাম্প্রতিকতম নথিপত্র অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি সংস্থা ‘ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ফাইন্যান্স করপোরেশন’ ইউক্রেন হয়ে ইউরোপে সরবরাহ করা রুশ গ্যাসের পাইপলাইনের নিয়ন্ত্রণ দাবি করেছে।
আরও পড়ুনইউক্রেনের বিরল খনিজ কী, এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কেন চুক্তিতে যাচ্ছে দেশটি২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫গ্যাস পাইপলাইনটি রাশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় সুদজা থেকে ইউক্রেনের উঝঝোরদ শহরে গেছে। শহরটি ইইউ ও স্লোভাকিয়া সীমান্ত থেকে প্রায় ১ হাজার ২০০ কিলোমিটার (প্রায় ৭৫০ মাইল) দূরে অবস্থিত। পাইপলাইনটি সাবেক সোভিয়েত আমলে তৈরি। এটিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় অবকাঠামো ও জ্বালানি সরবরাহের পথ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
আরও পড়ুনখনিজ নিয়ে চুক্তির দ্বারপ্রান্তে ইউক্রেন–যুক্তরাষ্ট্র২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় জ্বালানি প্রতিষ্ঠান গ্যাজপ্রমের সঙ্গে পাঁচ বছরের চুক্তির মেয়াদ শেষ হলে গত ১ জানুয়ারি এ পাইপলাইন দিয়ে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয় ইউক্রেন। এর আগে ইউক্রেন ও রাশিয়া দুদেশই এ পাইপলাইন দিয়ে কোটি কোটি ইউরো ট্রানজিট ফি আয় করেছে। এমনকি রাশিয়া–ইউক্রেন পুরোদমে যুদ্ধ চলার মধ্যেও প্রথম তিন বছর তাদের এ আয় অব্যাহত ছিল।
আরও পড়ুনইউক্রেনের পারমাণবিক কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ নিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র২১ মার্চ ২০২৫আরও পড়ুনইউক্রেনের খনিজে ভাগ বসাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচনের দিন অমোচনীয় কালি সরবরাহ না হলে ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকবে: ছাত্রদল
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনে অমোচনীয় কালি সরবরাহ না করলে ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতারা। এ ছাড়া এমফিল কোর্সে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা না দিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে ছাত্রদলকে ভোট প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন তাঁরা।
রোববার উপাচার্যের সভাকক্ষে রাজনৈতিক ও সক্রিয় সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত জকসু ও হল সংসদ নির্বাচন ২০২৫–এর আচরণবিধিবিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় ছাত্রদলের নেতারা এমন মন্তব্য করেন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন বলেন, ‘নির্বাচনে যদি কোনো ধরনের অনিয়মের ঘটনা ঘটে, তাহলে আমরা একচুল ছাড় দেব না। আমি প্রতিজ্ঞা করছি, যদি কোনো ধরনের অনিয়ম হয়— কোনো ছাড় হবে না। নির্বাচনের সময় অমোচনীয় কালি ব্যবহার করতে হবে। যদি নির্বাচন কমিশন অমোচনীয় কালি ব্যবহার করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকবে।’
ভোটের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে ‘ম্যানুয়ালি’ ভোট গণনার দাবি জানিয়ে শামসুল আরেফিন বলেন, ‘কত ব্যালট ছাপানো হলো, কত ভোট গণনা হলো, কত ব্যালট নষ্ট হলো—এসব তথ্য স্বচ্ছতার সঙ্গে প্রকাশ করতে হবে। কারণ, আমরা ডাকসুতে ব্যালট কেলেঙ্কারির অভিযোগ সম্পর্কে জানি।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ বিধিমালায় এমফিল শিক্ষার্থীদের ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা না দিয়ে ছাত্রদলকে ‘মাইনাস’ করার একটি মাস্টারপ্ল্যান করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘জকসু গঠন ও পরিচালনা বিধিমালায় বলা হয়েছে, তফসিল ঘোষণার পর নিয়মিত শিক্ষার্থী ভোটার কিংবা প্রার্থী ছাড়া কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। অন্যদিকে এমফিল শিক্ষার্থীদের ভোটার ও প্রার্থীর যোগ্যতা না দিয়ে আমাদের মাইনাস করা ছিল মাস্টারপ্ল্যান—আর সেই মাস্টারপ্ল্যান সফল হয়েছে।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোস্তফা হাসানের সভাপতিত্বে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য রেজাউল করিম, প্রক্টর, সিন্ডিকেটের সদস্য, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ ও হল শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচন ২০২৫-এর নির্বাচন কমিশনার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে সক্রিয় বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।