আনন্দ শোভাযাত্রায় রবীন্দ্রনাথ-নজরুল-মীর মশাররফ-লালন
Published: 14th, April 2025 GMT
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে পহেলা বৈশাখের আনন্দ শোভাযাত্রায় দেখা মিলেছে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বাংলা সাহিত্যের অমর কথা সাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেন, ফকির লালন সাঁই, মুঘল সম্রাট আকবর, গ্রামীণ সাংবাদিকতার পথিকৃৎ কাঙাল হরিনাথসহ অন্তত ৩৮ জন বিখ্যাত মনীষীর। তবে তারা আসল নয়, ডামি। ডামি হলেও তাদের মাধ্যমে দারুণভাবে ফুটেছে বিখ্যাত ব্যক্তিদের চেহারা ও অবয়ব। তাদের দেখে মুগ্ধ নতুন প্রজন্মের দর্শনার্থীরা।
এছাড়াও শোভাযাত্রায় বায়ান্নের ভাষা আন্দোলন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ও চব্বিশের গণ অভ্যুত্থানের সচিত্র দেখা গেছে।
সোমবার সকালে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে এমন বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার আয়োজন করে উপজেলা প্রশাসন।
জানা গেছে, বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উপলক্ষ্যে সোমবার সকাল সাগে ৯টায় কুমারখালী শিল্পকলা একাডেমি থেকে বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা বের করে উপজেলা প্রশাসন। আনন্দ শোভাযাত্রাটি হলবাজার, গণমোড়, থানামোড়, গোলচত্বর, উপজেলা সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে স্থানীয় আবুল হোসেন তরুণ অডিটোরিয়ামে চত্বরে শেষ হয়। পরে সেখানে দই চিড়া খাওয়া, সাংস্কৃতিক অনু্ষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কুমারখালী শিল্পকলা একাডেমীর ১২৫ জন সংগীত ও নৃত্যশিল্পী নেন এবং শোভাযাত্রায় কয়েক হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে কুমারখালী সরকারি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী রুহিনা ইসলাম প্রজ্ঞা বলেন, বৈশাখী শোভাযাত্রায় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, পিয়ারী সুন্দরী, কাজী মিয়াজান, মীর মশাররফ হোসেনসহ অসংখ্য মনীষীদের দেখেছি। খুব ভালো লেগেছে।
কলেজ ছাত্র শুভ মোল্লা বলেন, প্রত্যাশার চেয়েও বেশি জাঁকজমক হয়েছে আয়োজন। বন্ধুরা মিলে খুবই আনন্দ করছি।
সুবর্ণা খাতুন নামের এক শিশু জানায়, পহেলা বৈশাখ অনুষ্ঠানে নৃত্য করেছি। দই চিড়া খেয়েছি। খুবই ভালো লাগছে।
প্রায় ১৮ ধরে বৈশাখের শোভাযাত্রায় মীর মশাররফ হোসেনের ডামি চরিত্রে ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদুর রহমান মানু। তিনি বলেন, প্রতি বৈশাখে একই চরিত্রে থাকি। নিজের কাছে খুবই ভালো লাগে। যতদিন বাঁচি, এ চরিত্রেই থাকতে চাই।
আধুনিকতার বাইরে এসে যেন বাংলা সংস্কৃতি ধরে রাখতে পারি। সেজন্য সম্রাট আকবরের ডামি সেজেছিলাম। কথাগুলো বলছিলেন চয়ন শেখ।
পরিচয় জানতেই 'বল বীর, বল উন্নত মম শির! শির নেহারি আমারই নত শির ওই শিখর হিমাদ্রীর!' কবিতার কয়েকটি লাইন বলতে থাকেন পান্টি এলাকার মিলন হোসেন। তিনি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ডামি ছিলেন।
নতুন প্রজন্মের কাছে বাঙালির ইতিহাস ঐহিত্য ও সংস্কৃতি তুলে ধরতে এবং বিখ্যাত ব্যক্তিদের পরিচিত করতে রবীন্দ্রনাথ, মশাররফ, কাঙাল, বাঘা যতীনসহ ৩৮টি ডামি চরিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়াও ৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ৭১ এর মুক্তিযোদ্ধা, ২৪ এর গণ অভ্যর্থান, প্যালেস্টাইনের চিত্র দারুণভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বলে জানান ডামি পরিচালক কবি ও নাট্যকার লিটন আব্বাস।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মিকাইল ইসলাস বলেন, আনন্দ শোভাযাত্রায় বিখ্যাত ব্যক্তি ও মনীষীদের চরিত্র দারুণভাবে ফুটে উঠেছে। তা দেখে মুগ্ধ সব শ্রেণি পেশার মানুষ। ডামি ছাড়াও চিড়া দই খাওয়া, সাংস্কৃতিক অনু্ষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আনন দ শ ভ য ত র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
বর্ণিল আয়োজনে ১৯তম সিকৃবি দিবস উদযাপন
আজ ২ নভেম্বর, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (সিকৃবি) দিবস। ২০০৬ সালের এই দিনে যাত্রা শুরু করা দেশের কৃষি শিক্ষা, গবেষণা ও উদ্ভাবনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা প্রতিষ্ঠানটি ঊনিশতম বছরে পদার্পণ করেছে।
দিবসটি উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে দিনব্যাপী ছিল নানা আয়োজন। রবিবার (২ নভেম্বর) সকালে প্রশাসনিক ভবনের সামনে জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। পরে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে দিবসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলিমুল ইসলাম ।
আরো পড়ুন:
বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক মানে এগিয়ে নিতে সিকৃবি উপাচার্যের অঙ্গীকার
মাছের উৎপাদন হ্রাসের কারণ নদীর দূষণ: মৎস্য সচিব
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর উপাচার্যের নেতৃত্বে একটি শোভাযাত্রা ক্যাম্পাসের প্রশাসনিক ভবন থেকে শুরু হয়ে টিএসসি চত্ত্বর ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রদক্ষিণ করে। এরপর কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে ‘চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান-উত্তর বাংলাদেশের দারিদ্র্য বিমোচন ও টেকসই উন্নয়নে কৃষি শিক্ষা ও গবেষণায় করণীয়’ শীর্ষক সেমিনার আয়োজন করা হয়।
অধ্যাপক ড. মো. সামিউল আহসান তালুকদারের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএম সারওয়ার উদ্দিন চৌধুরী।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এম সারওয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, “দেশের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। অল্প সময়ের মধ্যেই এই বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক উৎকর্ষতা ও উদ্ভাবনী চিন্তাধারায় একটি অনন্য অবস্থান তৈরি করেছে। শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশ, গবেষণায় আগ্রহ ও সমাজসেবায় অংশগ্রহণ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল শক্তি।”
তিনি আরো বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে জ্ঞান ও গবেষণার বিনিময় জাতীয় উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত করে। তাই পারস্পরিক সহযোগিতা ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরো জোরদার করা প্রয়োজন “
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নিজাম উদ্দিন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এটিএম মাহবুব-ই-ইলাহী, সিলেট বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবী। অনুষ্ঠানের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আলিমুল ইসলাম।
দিবসটি উপলক্ষে সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে আয়োজন করা হয়েছে।
ঢাকা/আইনুল/মেহেদী