আড়াইহাজার থানার ওসি’র বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্র সচিব ও আইজিপির কাছে যুবদল নেতার অভিযোগ
Published: 16th, April 2025 GMT
আড়াইহাজার থানার বির্তকিত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এনায়েত হোসেনের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সাবেক সিনিয়র সহ-সভপতি সালাউদ্দিন মোল্লা স্বরাষ্ট্র সচিব ও আইজিপির কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) তিনি দুইপৃষ্ঠার একটি অভিযোগ সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে পৌঁছে দেন।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ্য করেন, ৫ আগস্টের পর আড়াইহাজার থানায় এনায়েত হোসেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই নানা বিতর্কিত কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়েন। সারাদেশে যখন ফিলিস্তিন ইস্যুতে মুসলমানদে হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে।
সারাদেশে যে সময় এসএসসি পরীক্ষা চলমান। আড়াইহাজার থানার ওসি গত ১১ এপ্রিল শুক্রবার সন্ধা থেকে রাতভর উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের শালমদী গ্রামে অনুমোদন বিহীন একটি বাউল গানের আসর বসান।
সেখানে তিনি গলায় লাল গামছা পেঁচিয়ে নাচে-গানে আনন্দ উল্লাসে মত্ত থাকেন। যেখানে তিনি এমন ধরনের অনুষ্ঠান বন্ধ রাখার কথা। সেখানে তিনি নিজেই অংশ নিয়ে আনন্দ ফূর্তি করেছেন।
এ ঘটনায় পুরো এলাকাবাসী, ছাত্র সমাজ ক্ষুদ্ধ হয়েছেন। তাদের তোপের মুখে সেখান থেকে সটকে পড়েন তিনি। উক্ত সময়ের একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
অভিযোগে তিনি আরো উল্লেখ্য করেন, বিতর্কিত ওসি এনায়েত হোসেন গ্রেফতার ও মামলার ভয় দেখিয়ে এলাকার সাধারণ জনগণ ও ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে চাঁদাবাজী করছেন। এ ছাড়া উপজেলার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীর সাথে ওসির মিটিং এর ছবি ফেইসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
তিনি প্রতিদিন থানায় গভীর রাতে সাধারণ মানুষকে ধরে এনে লেনদেনের হাট বসান। তাকে মোটা অংকের টাকা দিলে ছেড়ে দেন। তা না দিলে মিথ্যা মামলায় তিনি নিহীর মানুষকে কোর্টে প্রেরণ করেন।
এনিয়ে স্থানীয় বিভিন্ন পত্রিকায় “বির্তকিত আড়াইহাজার থানার ওসি” শিরোনামে ফলাওভাবে সংবাদ প্রকাশ হয়। তার কাছে মানুষের জানমালের কোন নিরাপত্তা নেই। সালাউদ্দিন মোল্লা বলেন, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় প্রতিদিন চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের মত ঘটনা ঘটনা ঘটছে।
ওসি আড়াইহাজারের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছেন। ৫ আগস্টের পর তিনি থানায় দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত সাধারণ মানুষকে হয়রানি করাসহ ঘুষবাণিজ্য যেন তার কাছে ওপেন সিক্রেট।
আমি সহ ভুক্তভোগীদের দাবী আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব থেকে এনায়েত হোসেনকে দ্রুত অপসারণ করা হোক।
এর আগে আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পুলিশ মহাপরিদর্শক বরাবর অনিয়ম, দুর্নীতি ও সাধারণ মানুষকে হয়রানির অভিযোগ দায়ের করেন বিএনপি নেতা রিয়াজুল ইসলামের স্ত্রী আনোয়ারা আক্তার বেবী।
অভিযোগে আনোয়ারা আক্তার জানান, আমার স্বামী মহিলা দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক পারভীন আক্তারের অনুসারী। দুপ্তারা বাজারে পারভীনের ছবি সংবলিত ব্যানার টানাতে গেলে অভিযুক্তরা বাধা দেয়। এসময় প্রতিবাদ করতে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দেয় তারা।
এ ঘটনার পর রাতে তোড়নটি ভেঙে ফেলা হয় এবং রাতে অস্ত্র নিয়ে বাড়িতে হামলা চালায় আসামিরা। এসময় ফাঁকা গুলি ছুড়ে ঘন্টাব্যাপী পুরে এলাকায় তান্ডব চালায় তারা। এঘটনার পর থানায় অভিযোগ দিতে গেলে অভিযোগ না নিয়ে উল্টো মোটা অংকের টাকা দাবী করেন থানার ওসি এনায়েত হোসেন।
পরবর্তীতে থানার সহযোগীতা না পেয়ে এলাকা ছেড়ে স্বামী ও ছেলেকে নিয়ে পালিয়ে নিজেদের রক্ষা করেছেন বলে জানান আনোয়ারা আক্তার।
অভিযুক্ত আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এনায়েত হোসেন জানান, গেইট ভাংচুর নিয়ে রাজনৈতিক দুটি পক্ষের মাঝে বিরোধ হয়েছে। এ বিষয়ে তারা থানায় কোন লিখিত অভিযোগ দেয়নি।
আমি বলেছি তারা যেন থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে, এতটুকুই ঘটনা। তাদের রাজনৈতিক বিরোধের কারণে এখন আমাকে দায়ী করছেন তারা।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
প্রেম ছিল না তবু কেন মধুবালাকে বিয়ে করেছিলেন কিশোর কুমার
দিলীপ কুমারের সঙ্গে বিচ্ছেদের কিছুদিন পরই কিশোর কুমারকে বিয়ে করেন অভিনেত্রী মধুবালা। তবে তখন তিনি ছিলেন অসুস্থ। কিশোর কুমার জানিয়েছিলেন, ভালোবাসা থেকে নয়, বরং কথা রাখতেই তিনি এ বিয়ে করেছিলেন।
মধুবালা ও দিলীপ কুমারের প্রেম নিয়ে একসময় মুখর ছিল মুম্বাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। কিন্তু অভিনেত্রীর বাবার বাধার কারণে সে সম্পর্কে ফাটল ধরে এবং দুজনের বিচ্ছেদ ঘটে। কিছুদিন পরেই কিশোর কুমারকে বিয়ে করেন মধুবালা। তাঁদের এই বিয়ে অনেককে চমকে দিয়েছিল। কারণ, তাঁদের প্রেমের কথা তখনো গোপন ছিল। তবে মধুবালার শরীর তখন ভালো যাচ্ছিল না। বলা হয়, দীর্ঘ রোগভোগের সময় কিশোর কুমার তাঁকে মায়ের বাড়িতে রেখেই চলে যান।
দ্য ইলাস্ট্রেটেড উইকলি অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কিশোর কুমার বলেছিলেন, ‘বিয়ের আগেই জানতাম, ও খুব অসুস্থ। কিন্তু কথা তো দিয়েছিলাম। তাই সে কথা রেখেই ওকে ঘরে এনেছিলাম স্ত্রী হিসেবে। জানতাম, ওর জন্মগত হৃদ্রোগ আছে। তবু ৯ বছর ধরে সেবা করেছি। চোখের সামনেই ওকে মরতে দেখেছি। কেউ বুঝবে না এর যন্ত্রণা, না ভুগলে। ও অসম্ভব সুন্দরী ছিল। আর কত যন্ত্রণায় মারা গেছে, সেটা চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না। হতাশায় চিৎকার করত, কান্নাকাটি করত। এত প্রাণোচ্ছল মানুষ নয়টা বছর বিছানায় শুয়ে থাকবে—এ কল্পনাই করা যায় না। ডাক্তার বলেছিল, ওকে হাসিখুশি রাখতে হবে। আমি তা–ই করেছি—ওর শেষনিশ্বাস পর্যন্ত। কখনো হেসেছি, কখনো কেঁদেছি ওর সঙ্গে।’
তবে কিশোর কুমারের এই বক্তব্য নিয়ে সংশয় তৈরি হয়। কারণ, পরে ফিল্মফেয়ার সাময়িকীতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে একেবারে ভিন্ন কথা বলেন তিনি। সেই সাক্ষাৎকারে কিশোর কুমার বলেন, ‘মধুবালার সঙ্গে আমি প্রেমে পড়িনি কখনো। বরং ওর প্রেমিক ছিল আমার বন্ধু দিলীপ কুমার। আমি তো শুধু ওদের বার্তা পৌঁছে দিতাম। বিয়ের প্রস্তাবটা দিয়েছিল মধুবালাই। এমনকি, যখন আমার প্রথম স্ত্রী রুমা তখনো আমার সঙ্গে ছিল, তখনো মধু বলত, “ওকে কখনো ছেড়ো না, না হলে আমি তোমার হয়ে যাব।”’
আরও পড়ুনকিশোর কুমার কি সত্যিই ঘরে কঙ্কাল আর মাথার খুলি নিয়ে ঘুমাতেন২৭ মে ২০২৫মধুবালার পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, চিকিৎসকেরা তখন বলেছিলেন, অভিনেত্রীর পক্ষে শারীরিক সম্পর্ক কিংবা সন্তানধারণ কোনো কিছুই সম্ভব নয়। সেই বাস্তবতা হয়তো প্রভাব ফেলেছিল কিশোরের সিদ্ধান্তে। এক ঘনিষ্ঠজন বলেন, ‘আমরা বলছি না কিশোরদা ভুল করেছিলেন। ডাক্তার তো স্পষ্ট বলেছিল—শারীরিক সম্পর্ক বা সন্তান কোনোটাই সম্ভব নয়। তবে একজন নারীর তো মানসিক সঙ্গীও দরকার হয়।’
ওই ঘনিষ্ঠজন আরও জানান, কিশোর কুমার তিন মাসে একবার আসতেন মাত্র। বলতেন, ‘আমি এলে তুমি কাঁদবে, আর এতে তোমার হৃদ্যন্ত্রের ক্ষতি হবে। তুমি বিষণ্ন হয়ে পড়বে।’ সে সময় মধু অনেক ছোট ছিলেন, ঈর্ষাও ছিল স্বাভাবিক। হয়তো এ দূরত্বই ধীরে ধীরে তাঁকে শেষ করে দিয়েছিল।
১৯৬৯ সালে মাত্র ৩৬ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান বলিউড অভিনেত্রী মধুবালা