কক্সবাজার-মহেশখালী নৌপথে পরীক্ষামূলক চালু হলো সি-ট্রাক
Published: 18th, April 2025 GMT
কক্সবাজার শহরের ছয় নম্বর জেটি ঘাট থেকে মহেশখালী নৌপথে প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে সি-ট্রাক (ফেরি) চলাচল শুরু হয়েছে।
শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ রুটে পরীক্ষামূলকভাবে প্রথমবারের মতো এ ফেরি চালু হয়। এ সি-ট্রাক চলাচল শুরু হওয়ার খবরে দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীতে মানুষের মধ্যে আনন্দ-উচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গোপসাগরের দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীতে যাতায়াতের অন্যতম রুটে ১০ কিলোমিটার সমুদ্র পথে ফেরি চলাচলের দাবি ছিল দীর্ঘদিনের। পরে ৫ আগস্টের পর মহেশখালীর মানুষের দাবির প্রেক্ষিতে এই সি-ট্রাক চলাচল চালু করেছে সরকার। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পন্টুনও। এই সি-ট্রাক নিয়ে একসঙ্গে ২০০-২৫০ কক্সবাজার শহর থেকে মহেশখালীতে যাত্রী যাওয়া আসা করতে পারবে।
মহেশখালীর স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শুক্রবার আমাদের দীর্ঘদিনের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেছে। এই সি-ট্রাকের বদৌলতে অনেক মানুষের ভোগান্তি কমে আসবে। বিশেষ করে অসুস্থ বৃদ্ধ লোকজন ও গর্ভবতী মহিলাদের জন্যে উপকার হবে।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি-এনসিপি) যুগ্ম সদস্য সচিব এসএম সুজা উদ্দিন বলেন, আমাদের দ্বীপবাসীদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল কক্সবাজার মহেশখালী নৌপথে সি-ট্রাক চালু করার। অবশেষে শুক্রবার সে স্বপ্ন ধরা দিয়েছে। এতে দ্বীপের মানুষের দুর্ভোগ কেটে যাবে।
বিআইডব্লিউটিএ এর পরিচালক একেএম আরিফ উদ্দিন বলেন, মহেশখালীর মানুষের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে শুক্রবার থেকে কক্সবাজার মহেশখালী নৌপথে পরীক্ষামূলকভাবে সি-ট্রাক চলাচল শুরু করেছে সরকার। পরে আনুষ্ঠানিকভাবে চলাচল শুরু হবে।
মহেশখালী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন বলেন, প্রথমবারের মতো যাত্রী নিয়ে সি-ট্রাক ভিড়েছে মহেশখালী জেটি ঘাটে। স্থাপন করা হয়েছে পন্টুন। মহেশখালীর মানুষের উচ্ছ্বাস দেখে ভীষণ ভালো লাগছে। জনগণের দুর্ভোগ লাঘব করতে আমরা সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসবো।
এদিকে সকাল থেকে জেটিঘাটে ছাত্র জনতার সাথে উপস্থিত ছিলেন মহেশখালী কুতুবদিয়ার সাবেক এমপি আলমগীর ফরিদ, মহেশখালী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদিন, সাবেক পৌর মেয়র সরওয়ার আজম।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পর ক ষ ম শ ক রব র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ইরান ২০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো পরমাণু কর্মকাণ্ডে বৈশ্বিক বাধ্যবাধকতা মানছে না: আইএইএ
ইরান ২০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো পরমাণু কর্মকাণ্ড পরিচালনায় বৈশ্বিক বাধ্যবাধকতা মানছে না বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ)।
সংস্থাটির গভর্নর বোর্ডে আজ বৃহস্পতিবার গৃহীত একটি প্রস্তাবে এমন অভিযোগ করা হয়েছে। এই অভিযোগ ভবিষ্যতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বিষয়টি উত্থাপনের পথ খুলে দিতে পারে।
গত সপ্তাহে আইএইএ ইরানের পারমাণবিক কর্মকাণ্ড নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনটি সংস্থাটির গভর্নর বোর্ডে আজকের সিদ্ধান্তের পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছিল, ইরান আইএইএর সঙ্গে সহযোগিতা করছে না। তারা কিছু এলাকায় গোপনে পারমাণবিক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে তদন্তের আওতায় থাকা কিছু এলাকায় এমন কিছু পারমাণবিক উপকরণ রেখেছে, যার বিষয়ে তারা তথ্য দেয়নি।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি আইএইএর বৈঠকের আগে ইউরোপীয় শক্তিগুলোকে প্রস্তাবটি সমর্থন না করার বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, এতে তাঁরা বড় ভুল করবেন এবং ইরান এর ‘জবাব’ দেবে।
আইএইএর প্রতিবেদন এবং গভর্নর বোর্ডের এমন প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে নতুন পারমাণবিক চুক্তির লক্ষ্যে চলমান আলোচনাকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।
আরও পড়ুননিরাপত্তাঝুঁকিতে ইরাকের দূতাবাস থেকে কর্মীদের আংশিকভাবে সরাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র১১ ঘণ্টা আগেতা ছাড়া মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে। এমন এক সময়ে আইএইএর গভর্নর বোর্ডে প্রস্তাবটি গৃহীত হলো, যার মাত্র এক দিন আগে যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের কিছু নাগরিককে মধ্যপ্রাচ্য ছেড়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে, এমন খবর প্রকাশিত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র নিজ দেশের নাগরিকদের অঞ্চলটি ছাড়ার পরামর্শ দিয়েছে।
তবে ইরান জোর দিয়ে বলেছে, তাদের পরমাণু কর্মসূচি পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ এবং তারা কখনো পরমাণু অস্ত্র তৈরি বা অর্জনের চেষ্টা করবে না।
২০১৫ সালে ছয় বিশ্ব শক্তি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি করেছিল ইরান। এই চুক্তির আনুষ্ঠানিক নাম জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ)। ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রম নজরদারি করার জন্য এই চুক্তি করা হয়েছিল, যাতে দেশটি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে না পারে।
আরও পড়ুন‘শান্তিপূর্ণ কার্যক্রম’ থেকে বঞ্চিত হলে পারমাণবিক চুক্তি নয়: ইরান০৪ জুন ২০২৫চুক্তি করার বিনিময়ে ইরানের ওপর থেকে কিছু নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে সম্মত হয়েছিল পশ্চিমা দেশগুলো। কিন্তু ২০১৮ সালে তৎকালীন ট্রাম্প প্রশাসন এই চুক্তি থেকে একতরফা বের হয়ে যায়। তাঁর মতে, এই চুক্তি ইরানের পরমাণু বোমা তৈরির পথ বন্ধে যথেষ্ট নয়।
যুক্তরাষ্ট্রের বের হয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে চুক্তিটি একধরনের বাতিল হয়ে যায়। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতায় এসে চুক্তিটি নবায়নের জন্য জোর চেষ্টা চালিয়েছিলেন, কিন্তু সফল হননি।
আইএইএর সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৭ মে পর্যন্ত ইরান ৬০ শতাংশ মাত্রায় সমৃদ্ধ ৪০৮ দশমিক ৬ কেজি ইউরেনিয়াম মজুত করেছে, যা অস্ত্র তৈরির পর্যায়ের কাছাকাছি এবং প্রায় ৯টি পারমাণবিক বোমা বানানোর জন্য যথেষ্ট। পরমাণু অস্ত্র নেই—এমন যেকোনো দেশের ক্ষেত্রে উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ এই পরিমাণ ইউরেনিয়াম মজুত নজিরবিহীন ঘটনা। ফেব্রুয়ারির সর্বশেষ প্রতিবেদন থেকে এই মজুতের পরিমাণ প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়ে ১৩৩ দশমিক ৮ কেজিতে পৌঁছেছে।
আরও পড়ুনইরানের উচ্চমাত্রার ইউরেনিয়ামের মজুত ৪০৮ কেজি, যা নজিরবিহীন: আইএইএ৩১ মে ২০২৫