হলহলিয়া নদীর ওপর একটি সেতুর অভাবে বর্ষা মৌসুমে নৌকা আর শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সাঁকোই একমাত্র ভরসা। এতে দুর্ভোগে রয়েছেন ১৯ গ্রামের মানুষ। একটি সেতু নির্মাণ করা হলে পাল্টে যেতে পারে ওই চরাঞ্চলের কৃষি, শিক্ষা, চিকিৎসাসহ সামগ্রিক চিত্র। এমন অবস্থা কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার চরশৌলমারী ইউনিয়নের কাজাইকাটা এলাকায়। তাই হলহলিয়া নদীর ওপর দ্রুত একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
সম্প্রতি সরেজমিন দেখা গেছে, চরশৌলমারী ইউনিয়নের ১৯টি গ্রামের মানুষের রৌমারী উপজেলা শহরে যাওয়া-আসার একমাত্র রাস্তায় হলহলিয়া নদী পারাপারের উপায় নৌকা অথবা সাঁকো। এই নদীর ওপর দিয়ে যাতায়াত করে থাকেন কাজাইকাটা, চর কাজাইকাটা, আন্দবাজার, ফুলকার চর, শান্তির চর, খরানিয়ারচর, সোনাপুর, গেন্দার আলগা, নামাজের চর, খেয়ারচর, ডিগ্রীরচর, বাংলা বাজার, চর ইটালুকান্দা, লাউবাড়ি, উত্তর নামাজের চর, জাহাজের আলগা, দই খাওয়ার চর, হবিগঞ্জ ও ফুলকার চর গ্রামের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, বিভিন্ন সময় নির্বাচনের আগে জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক দলের নেতারা একাধিকবার হলহলিয়া নদীর ওপর সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু তা বাস্তবায়ন হয় না। এ কারণে হাজার হাজার মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ ছাড়া জমির উৎপাদিত ফসল বাজারজাত করতে পারেন না কৃষক। গাড়ি চলতে পারে না। এ কারণে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ীসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষ পড়েছে বিপাকে।
স্থানীয় বাসিন্দা বাদল মিয়া জানান, নদীতে সেতু না থাকায় ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে তাদের।  সেতুর অভাবে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। প্রতিবার নির্বাচনের আগে সেতু করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন নেতারা, ভোট গেলে তা ভুলে যান তারা। এ কারণে সেতু আর হয় না। এলাকার মানুষের কষ্টও শেষ হয় না।
শাহিন মিয়া নামে আরেক ব্যক্তি বলেন, প্রতিদিন কোনো না কোনো কাজে তাদের দাঁতভাঙ্গা বাজারসহ রৌমারী শহরে যাওয়ার জন্য নদী পার হতে হয়। এতে অনেক কষ্ট হয়। উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারে নিয়ে যাওয়ার জন্য দ্বিগুণ খরচ বহন করতে হয়। অথচ একটি সেতু হলে এই এলাকার চিত্র বদলে যাবে। 
চরশৌলমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান দুলালের দাবি, ওই স্থানে সেতু নির্মাণ করার জন্য অনেকবার বলা হয়েছে উপজেলা মাসিক সভায়। কিন্তু কাজ হচ্ছে না। সেতু না হওয়ায় এ অঞ্চলের মানুষের চলাফেরায় কষ্ট হচ্ছে।
২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুড়িগ্রাম-৪ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ছিলেন রৌমারী উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও জেলা বিএনপির সদস্য আজিজুর রহমান। আগামী নির্বাচনেও দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিগত দিনে যাদুরচর ইউনিয়ন পরিষদের তিন-তিনবার চেয়ারম্যান ছিলাম। আমি চেয়ারম্যান হিসেবে যেখানে যে প্রতিশ্রুতি বা মানুষের সামনে যা বলেছি, সব ওয়াদা বা প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করেছি।’
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) রৌমারী উপজেলা প্রকৌশলী মনছুরুল হক বলেন, ‘আমার ও ইউএনওর কাছে যদি দাবিদাওয়া করা হয়, তাহলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে।’
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উজ্জ্বল কুমার হালদারের সঙ্গে। তাঁর ভাষ্য, বিষয়টি জেনেছেন তিনি। জনসাধারণের দুর্ভোগ নিরসনে কাজ করে যাচ্ছেন তারা। তাঁর আশা দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

চলন্ত বাসে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ, চালক আটক

ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে এক কলেজছাত্রীকে চলন্ত বাসে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। নবীগঞ্জ-শেরপুর সড়কে রোববার রাতে যাত্রীবাহী বাসে এ ঘটনা ঘটে। পরে ওই ছাত্রীর চিৎকার শুনে স্থানীয় জনতা সড়কের তিনতালাব পুকুর পাড় নামক স্থানে বাসটি আটক করে এবং বাসের ড্রাইভারকে আটক করে সেনাবাহিনীর নিকট হস্তান্তর করে। এসময় বাসের হেলপার পালিয়ে যায়।
 
পরে সেনাবাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হারুনুর রশিদের নেতৃত্বে একদল সেনা সদস্য ওই কলেজ ছাত্রী ও ড্রাইভারকে নবীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করে। এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

জানা যায়, ঢাকায় একটি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ে ওই ছাত্রী। রোববার সকালে ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে একটি বাসে উঠেন তিনি। তার গ্রামের বাড়ি যেতে বানিয়াচং যাওয়ার পথে শায়েস্থাগঞ্জ বাস স্ট্যান্ডে নামার কথা থাকলেও তিনি বাসের মধ্যে ঘুমিয়ে যান। ফলে বাস তাকে শায়েস্থাগঞ্জে না নামিয়ে শেরপুর বাসস্ট্যান্ডে নামিয়ে দেয়। সেখান থেকে রাত সাড়ে ১০টায় ওই কলেজছাত্রী একটি লোকাল বাসে উঠে। সেই বাসে কয়েকজন যাত্রী ছিল, বাসটি নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি নামক স্থানে পৌঁছালে অন্যান্য যাত্রীদের নামিয়ে দেয়। এরপর ওই ছাত্রীকে একা পেয়ে বাসের চালক ও হেলপার তাকে বাসে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।

এ বিষয়ে ওই ছাত্রী জানায়, তিনি ঢাকায় একটি কলেজে লেখাপড়া করেন। তার পরিবারের সবাই ঢাকায় থাকে তিনি ঢাকায় ঈদ করেছে। ঈদের ছুটিতে তিনি বাড়ি আসেননি এই জন্য আজকে গ্রামের বাড়িতে আসছিলেন।

বানিয়াচং থানার সেনাক্যাম্পের সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হারুনুর রশিদ বলেন, আমরা কলেজছাত্রী ও বাস চালককে নবীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করেছি।

এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানার ওসি দুলাল মিয়া জানান, ঘটনার পর বাস চালককে আটক করা হয়েছে এবং হেলপার পালিয়ে গেছে। এ ব্যাপারে মামলা লেখার কাজ চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ