পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাওয়া সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার: চীনের রাষ্ট্রদূতকে প্রধান উপদেষ্টা
Published: 21st, April 2025 GMT
চীন সফরের সময় নেওয়া পরিকল্পনাগুলো নিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়া সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার বলে জানিয়েছেন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
রবিবার (২০ এপ্রিল) ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
বৈঠককালে তারা প্রধান উপদেষ্টার সাম্প্রতিক চীন সফরের ফলাফল পর্যালোচনা করেন এবং বাংলাদেশ-চীন সহযোগিতা ত্বরান্বিত করতে পরবর্তী পদক্ষেপগুলো তুলে ধরেন।
উভয় পক্ষ অবকাঠামো, বাণিজ্য, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আলোচনাকে কার্যকর প্রকল্পে রূপান্তরিত করার জন্য যৌথ প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের এখন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হলো চীন সফরের সময় আমরা যে পরিকল্পনাগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি সেগুলো নিয়ে এগিয়ে যাওয়া। আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে গতি যেন হারিয়ে না যায়।”
চীনা রাষ্ট্রদূত প্রধান উপদেষ্টার অনুভূতির প্রতিধ্বনি করে বলেন, “এটি আমাদেরও সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। চীনে আমাদের সর্বোচ্চ পর্যায়ের এজেন্ডা বৈঠক হয়েছে এবং আমরা কেবল চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য আরও দুই থেকে তিন বছর অপেক্ষা করতে চাই না - আমরা দ্রুত সেগুলো বাস্তবায়ন করতে চাই।”
আলোচিত বিষয়গুলোর মধ্যে একটি ছিল মোংলা এবং আনোয়ারা অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়ন। বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন জানান, প্রস্তুতি চলছে এবং একবার সম্পন্ন হলে জোনগুলো বাস্তবায়ন শুরু করার জন্য ডেভেলপারদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সূত্র জানিয়েছে, উভয় পক্ষ চীন থেকে চারটি নতুন জাহাজ কেনার পরিকল্পনা নিয়েও আলোচনা করেছেন। চীনা পক্ষ আশ্বাস দিয়েছে যে এই প্রক্রিয়াটি এই বছরের জুনের মধ্যে সম্পন্ন হবে।
রাষ্ট্রদূত আরো নিশ্চিত করেছেন যে চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী শিগগিরই বাংলাদেশ সফর করবেন। তার সাথে বিনিয়োগকারীদের ১০০ সদস্যের প্রতিনিধিদল থাকবেন নতুন বিনিয়োগের সুযোগ অন্বেষণের লক্ষ্যে।
বিডার চেয়ারম্যান আশিক বলেন “আমরা খাত-নির্দিষ্ট সহযোগিতা জোরদার করার জন্য চীনা বিনিয়োগকারীদের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে একটি ক্ষুদ্র-বিনিয়োগ শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন করব।”
আলোচনায় স্বাস্থ্যসেবা সহযোগিতার বিষয়টি বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়েছে। চীনা পক্ষ বাংলাদেশে ১ হাজার শয্যার একটি হাসপাতাল নির্মাণের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন, যা প্রাথমিকভাবে চীন সফরের সময় প্রস্তাব করা হয়েছিল। তারা চট্টগ্রামে একটি বিশেষায়িত বার্ন ইউনিট প্রতিষ্ঠায় চলমান সহায়তার কথাও তুলে ধরেন।
চীনা রাষ্ট্রদূত জানান, কুনমিং-চট্টগ্রাম সরাসরি ফ্লাইট চালু করার জন্য অগ্রগতি হচ্ছে এবং বাংলাদেশি রোগীদের জন্য চিকিৎসা ভিসা দ্রুততর করার প্রচেষ্টা চলছে।
অধ্যাপক ইউনূস সাংস্কৃতিক বিনিময়ের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে তরুণ বাংলাদেশিদের চীনা ভাষা ও সংস্কৃতির সাথে আরও ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত করার জন্য একটি চীনা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র এবং ভাষা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেন।
উভয় পক্ষ তিস্তা নদী ব্যবস্থার কাজসহ জল ব্যবস্থাপনার উপর দীর্ঘমেয়াদী ৫০ বছর মেয়াদী মাস্টার প্ল্যান চালু করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
প্রধান উপদেষ্টা চীনে পাট রপ্তানি সম্প্রসারণের সম্ভাবনাও উত্থাপন করেন এবং লোকোমোটিভ খাতে আরও বেশি চীনা বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
তিনি চট্টগ্রাম এবং সৈয়দপুর উভয় স্থানে লোকোমোটিভ উৎপাদন ও রক্ষণাবেক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের প্রস্তাব করেন। পাশাপাশি সক্ষমতা বৃদ্ধির কর্মশালা এবং প্রশিক্ষণ কর্মসূচিও উপস্থাপন করা হয়।
কৃষি বাণিজ্য ছিল অগ্রগতির আরেকটি ক্ষেত্র। বাংলাদেশ এই মৌসুমে চীনে আম রপ্তানি শুরু করবে, আগামী বছর কাঁঠাল রপ্তানির সময়সূচি রয়েছে।
বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো.
তথ্যসূত্র: বাসস
ঢাকা/ইভা
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ ন সফর র প রস ত কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
আলিসের ফিরতে হবে পরের বিপিএলে
শেষ বিপিএলে চমক দেখিয়ে আবারো লাইমলাইটে চলে এসেছিলেন আলিস আল ইসলাম। মনে হচ্ছিল, এবার বুঝি জাতীয় দলে সুযোগ পেয়ে নিজের জায়গটা পাকাপোক্ত করতে পারবেন। কিন্তু ভাগ্যের কী নির্মমতা। বিপিএলের ফাইনালে নিজের দল চিটাগং কিংসকে তুলে ফাইনাল খেলতে পারেননি। হাঁটুর চোটে ছিটকে যান ফাইনাল থেকে। এরপর তাকে যেতে হয়েছে চিকিৎসকদের ছুরি কাঁচির নিচে। দেশের বাইরে অস্ত্রোপচার শেষ করেছেন। এখন আছেন পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায়। ২২ গজে ফিরতে তাকে অপেক্ষা করতে হচ্ছে আরেকটি বিপিএলের। আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরে হতে পারে বিপিএল। সেই প্রতিযোগিতাকে সামনে রেখেই মাঠে ফেরার পরিকল্পনা করছেন বৈচিত্র্যময় স্পিনার।
রাইজিংবিডি-কে মুঠোফোনে আলিস বললেন, ‘‘আগামী বিপিএল দিয়ে আমার মাঠে ফেরার পরিকল্পনা। এর আগে চাইলেও পারব না। কারণ আমার পুনর্বাসন প্রক্রিয়া লম্বা হবে। এ প্রক্রিয়ায় আমি কেমন করি সেটার ওপর নির্ভর করবে আমার ফেরা। বিপিএলে এখনো সময় আছে। এজন্য চাইচ্ছি ধীর-স্থির গতিতে আগাতে। বোলিং কিংবা রানিং বা হাঁটা কবে শুরু করতে পারবো— এসব কিছুই এখনো ঠিক হয়নি। আপাতত আমাকে প্রপার ডায়েট, কিছু এক্সারসাইজ, কিছু থেরাপি আর মেডিটেশন করতে হবে। এসব করলে আমার ফেরার প্রক্রিয়ায় দ্রুত এগিয়ে যেতে পারব।’’
হাঁটুর এসিএল (অ্যান্টেরিয়র ক্রুসিয়েট লিগামেন্ট) চোটে পড়েছেন আলিস। অস্ত্রোপচার বাধ্যতামূলক ছিল। মালয়েশিয়ায় গত মাসে করানো হয় আলিসের অস্ত্রোপচার। ২১ দিন পুরোপুরি বিশ্রামের পর গত সপ্তাহে শুরু হয় তার পুনর্বাসন। এ ধরণের অস্ত্রোপচারের পর সুস্থ হয়ে মাঠে ফিরতে ৯ মাস সময় লাগে। প্রকারভেদে আরো অনেক বেশি ও কম সময় লাগতে পারে। যেমন, ইবাদত হোসেনেরই লেগেছে প্রায় ১৩ মাস। আলিসের কম সময় লাগতে পারে স্পিনার হওয়াতে। দ্বিতীয়ত, কিভাবে নিজেকে যত্ন করছেন সেটাও নির্ভর করছে।
আরো পড়ুন:
খুলনায় ‘সেরা সাঁতারুর খোঁজে বাংলাদেশ’ প্রতিযোগিতা শুরু
টিভিতে আজকের খেলা
বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশিষ চৌধুরি বলেছেন, ‘‘আমাদের টার্গেট নেক্সট বিপিএল। আমরা চাইছি সে যেন বিপিএলটা খেলতে পারে। দেখা যায় এসিএলে ৯ মাস সময় লাগে। আমরা সেটা ওভারকাম করতে চাচ্ছি। পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার ওপর নির্ভর করবে, কবে নাগাদ বোলিং শুরু করতে পারবে। বিপিএলটা টার্গেটে রেখে এগোনোর চেষ্টা করছি।”
২০১৯ সালে বিপিএলে যাত্রা শুরু করার পর অনেক চড়াই উৎরাই হয়েছে। বোলিং অ্যাকশন শোধরানো লেগেছে। ইনজুরিতে দেড় বছর বাইরে কাটিয়েছেন। তবুও ফিরে এসে বারবার নিজেকে প্রমাণ করেছেন। এবারও বিশ্বাস, ফিরে এসে নিজের ছন্দেই থাকবেন তিনি।
ঢাকা/ইয়াসিন/বকুল