সাগর-রুনি হত্যা মামলা: আরও ছয় মাস সময় দেওয়া হলো টাস্কফোর্সকে
Published: 22nd, April 2025 GMT
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত শেষ করতে আরও ছয় মাস সময় পেল বিভিন্ন এজেন্সির অভিজ্ঞদের সমন্বয়ে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্স। তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দিতে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।
এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট সাগর-রুনি হত্যা মামলা তদন্তে বিভিন্ন এজেন্সির অভিজ্ঞদের সমন্বয়ে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্স গঠন করতে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে তদন্ত শেষে ছয় মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। আদালতের আদেশের পর উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠন করা হয়।
এদিকে তদন্ত শেষ করে ছয় মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে হাইকোর্টের দেওয়া ছয় মাস সময় ইতিমধ্যে শেষ হয়। এ অবস্থায় তদন্ত চলমান ও অগ্রগতি আছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপক্ষ নয় মাস সময়ের আরজি জানায়। শুনানি নিয়ে আদালত ছয় মাস সময় মঞ্জুর করেন। একই সঙ্গে আগামী ২২ অক্টোবর আদেশের জন্য পরবর্তী দিন রেখেছেন।
এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল হাইকোর্টের দেওয়া এক আদেশে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় র্যাব। তদন্তের জন্য মামলাটি র্যাবের কাছে পাঠানোর এই আদেশ সংশোধন চেয়ে স্বরাষ্ট্রসচিবের পক্ষে গত সেপ্টেম্বরে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়। এর শুনানি নিয়ে গত ৩০ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট ওই আদেশ দেন। এর ধারাবাহিকতায় আজ বিষয়টি আদেশের জন্য ওঠে।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ শুনানি করেন, সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আখতার হোসেন মো.
এর আগে ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া করা বাসায় খুন হন সাংবাদিক দম্পতি সাগর ও রুনি। সাগর সে সময় বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল মাছরাঙা টিভিতে আর রুনি এটিএন বাংলায় কর্মরত ছিলেন। সাগর-রুনি হত্যার ঘটনায় রুনির ভাই নওশের আলম বাদী হয়ে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন।
প্রথমে এই মামলা তদন্ত করছিল শেরেবাংলা নগর থানার পুলিশ। চার দিন পর মামলার তদন্তভার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার ৬২ দিনের মাথায় ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল হাইকোর্টে ব্যর্থতা স্বীকার করে ডিবি। এরপর আদালত র্যাবকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন। তখন থেকে মামলাটির তদন্ত করছিল র্যাব।
আরও পড়ুনসাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্তে টাস্কফোর্স গঠন২৩ অক্টোবর ২০২৪উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ছয় ম স সময় তদন ত শ ষ তদন ত র র তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
বাদ পড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের দাবি
জাতীয়করণ থেকে বাদ পড়া দেশের সব সচল বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন থেকে এই জানিয়েছেন সমিতিটি।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ২০১৩ সালে তৎকালীন সরকার সারা দেশে সব বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণের ঘোষণা দেয়। তবে ২০১৩ সালের গেজেট মূলে ২০১২ সালের মে মাসে সারা দেশে ৩০ হাজার ৩৫২টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও সেই সময়ে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে ৪ হাজার ১৫৯টি বিদ্যালয় বাদ রেখে ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়।
আরো পড়ুন:
পরীক্ষার দিন বাদ দিয়ে নিয়মিত ক্লাস নেওয়ার নির্দেশ
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অস্থিরতায় সরকার যথেষ্ট উদ্বিগ্ন: উপদেষ্টা
তৃতীয় ধাপের বিদ্যালয়গুলোকে জাতীয়করণের ক্ষেত্রে ২০১২ সালের মে মাসের আগে স্থাপিত ও পাঠদানের অনুমতির জন্য আবেদন করে রাখা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করতে হবে বলে জোর দাবি তোলেন বক্তারা।
মানববন্ধনে বক্তারা আরো বলেন, একই যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তৎকালীন কিছু কর্মকর্তা কর্মস্থলে না থাকায়, সব শর্ত পূরণ করার পরেও ৪ হাজার ১৫৯টি বিদ্যালয় জাতীয়করণের অন্তর্ভুক্ত হয়নি। এই বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে থেকে ২০১২ সালের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষাসহ ১ হাজার ৩০০ বিদ্যালয় জাতীয়করণের জন্য উপজেলা ও জেলায় যাচাই-বাচাই করা হয়েছে, যা মন্ত্রণালয় সংরক্ষণ করা আছে।
জাতীয়করণকালীন সময়ে পাঠদানের অনুমতি ও রেজিট্রেশনের কার্যক্রম স্থগিত রাখায় এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা বেতন-ভাতার সুবিধা ও ছাত্র-ছাত্রীরা উপবৃত্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সতিমির নেতারা তাদের বক্তব্যে তুলে ধরেন।
মানববন্ধনে সংগঠনের সভাপতি মামুনুর রশিদ খোকন বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে পাঠদান পরিচালনা করলেও বিদ্যালয়গুলো জাতীয়করণ না হওয়ায় আমরা শিক্ষকরা মানবেতর যীবন যাপন করছি। আমরা অন্যের শিশুকে জ্ঞানের আলো দিলেও আমাদের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়নি। এই অবস্থা দূর করতে শিক্ষাসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।”
বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির মহাসচিব মো. ফিরোজ উদ্দিন বলেন, “২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি সব বিদ্যালয় জাতীয়করণের ঘোষণা দেওয়া হলেও ফ্যাসিস্ট সরকার বিগত দিনে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে ৪ হাজার ১৫৯টি বিদ্যালয় সুকৌশলে বাদ দেয়। এই বিষয়ে আমরা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।”
সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ আলী লিটন বলেন, “বর্তমান সরকার শিক্ষাবান্ধব সরকার। শত প্রতিকূলতার মাঝেও বিশ্বদরবারে তারা আজ বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ের চিঠি দ্রুত বাস্তবায়ন করা হলে সারা দেশের প্রায় ১০ লাখ শিক্ষার্থী উপবৃত্তি ও টিফিনসহ প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত হবে; সেই সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়ন হবে।”
মানববন্ধনে সারা দেশ থেকে আসা বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সদস্যদের দেখা যায়।
ঢাকা/রায়হান/রাসেল