চানখাঁরপুলে গণহত্যার মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের জন্য ২৫ মে তারিখ ধার্য
Published: 22nd, April 2025 GMT
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় সংঘটিত গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিলের জন্য প্রায় এক মাস সময় দেওয়া হয়েছে। আগামী ২৫ মে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের তারিখ ধার্য করা হয়েছে।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আজ মঙ্গলবার এই আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো.
শুনানিতে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, চানখাঁরপুলের ঘটনার মামলার তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে গত রোববার চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে জমা দিয়েছে তদন্ত সংস্থা। এখন এই মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের জন্য চার সপ্তাহ সময় প্রয়োজন।
ট্রাইব্যুনাল এই আবেদন মঞ্জুর করে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের জন্য আগামী ২৫ মে সময় তারিখ ধার্য করেন।
মামলায় আটজনকে আসামি করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। তাঁরা সবাই পুলিশের সাবেক সদস্য।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় এই প্রথম কোনো মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে তা জমা দিল ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
আট আসামি হলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রমনা অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহ্ আলম মো. আখতারুল ইসলাম, রমনা অঞ্চলের সাবেক সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ইমরুল, শাহবাগ থানার সাবেক পরিদর্শক মো. আরশাদ হোসেন, কনস্টেবল মো. সুজন হোসেন, ইমাজ হোসেন ও মো. নাসিরুল ইসলাম। এই আট আসামির মধ্যে শেষের চারজন এখন কারাগারে আছেন। বাকিরা পলাতক। কারাগারে থাকা চার আসামিকে আজ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এ মামলার তদন্ত শেষ করতে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার সময় লেগেছে ৬ মাস ১৩ দিন। প্রতিবেদনটি ৯০ পৃষ্ঠার। তদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করতে ৭৯ সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিবেদনের সঙ্গে ঘটনার তথ্যপ্রমাণ হিসেবে ১৯টি ভিডিও,২টি অডিও রেকর্ড, সংবাদপত্রের ১১টি প্রতিবেদন ও ছয়জনের মৃত্যুসনদ দাখিল করা হয়েছে। এ ছাড়া জুলাই গণহত্যা নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের (ওএইচসিএইচআর) তথ্যানুসন্ধান দলের প্রতিবেদনও মূল তদন্ত প্রতিবেদনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।
তদন্ত প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, গণ-অভ্যুত্থানের সময় উল্লিখিত আসামিরা চানখাঁরপুল এলাকায় নিরস্ত্র ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের ওপর প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করেন। এতে শাহরিয়ার খান আনাস, শেখ মাহদি হাসান জুনায়েদ, মো. ইয়াকুব, মো. রাকিব হাওলাদার, মো. ইসমামুল হক ও মানিক মিয়া গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন।
সারসংক্ষেপে উল্লেখ করা হয়েছে, পলাতক আসামি সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ অন্য আসামিরা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
আরও পড়ুনডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুরসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে প্রথম তদন্ত প্রতিবেদন২১ এপ্রিল ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দ খ ল র জন য তদন ত স স থ ল র তদন ত গণহত য অপর ধ র সময়
এছাড়াও পড়ুন:
ফিলিস্তিনি জনগণকে গণহত্যা থেকে রক্ষা করতে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার আহ্বান
ফিলিস্তিনি জনগণকে গণহত্যা ও নিষ্ঠুরতম বর্বরতা থেকে রক্ষা করতে অবিলম্বে পরিপূর্ণ যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
আজ বুধবার ফিলিস্তিন সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে আয়োজিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ইসরায়েল এ পর্যন্ত ৫৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে গণহত্যা অব্যাহত রেখেছে। তিনি ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দায়ী সকলকে বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানান।
আরো পড়ুন:
ইসরায়েলি মানবাধিকার সংগঠনই বলছে, ‘গাজায় গণহত্যা চলছে’
ফিলিস্তিন সংকট সমাধান: সবার দৃষ্টি জাতিসংঘের বিশ্ব সম্মেলনে
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রতি বাংলাদেশের অব্যাহত সমর্থন পুর্নব্যক্ত করে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি স্থাপনের একমাত্র পথ হিসেবে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের লক্ষ্যে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান বাস্তবায়নে কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।
গাজা পুনর্গঠনে আরব পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ জাতিসংঘের নেতৃত্বে গাজা পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে প্রস্তত রয়েছে। তিনি গাজায় জাতিসংঘের ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম বাধা দেয়ার যেকোনো প্রচেষ্টা সর্বাত্বকভাবে প্রতিরোধ করার আহ্বান জানান।
২০২৩ সালের অক্টোবরের পর হতে গাজায় অব্যাহত ইসরায়েলি আক্রমণের প্রেক্ষাপটে ফিলিস্তিনি জনগণের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতি একাত্মতা প্রকাশ এবং একটি স্থায়ী সমাধানের পথ সুগম করতে জাতিসংঘের সদস্যদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করার জন্য ফ্রান্স ও সৌদি আরবের যৌথ উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী ‘জাতিসংঘ হাইলেভেল ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স ফর দ্য পিসফুল সেটেলমেন্ট অব দ্য কোয়েশ্চেন অব প্যালেস্টাইন অ্যান্ড দ্য ইমপ্লিমেন্টেশন অব দ্য টু-স্টেট সল্যুশন’ শীর্ষক মন্ত্রী পর্যায়ের এই সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
এতে বাংলাদেশসহ ১১৮টি দেশের প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করছে।
ঢাকা/হাসান/ফিরোজ