প্রশ্নটা শুনতে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত প্রস্তুত ছিলেন না। কিছুক্ষণ আগেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট হেরেছেন। চোখে মুখে বিষন্নতা স্পষ্ট। সংবাদ সম্মেলনে এসেছে বিমর্ষ মুখ নিয়ে।

পারফরম‌্যান্সের আয়নায় নিজেদের খুঁজেও পাচ্ছেন না। একেবারেই অধারাবাহিক। অপেশাদারিত্ব মনোভাব। স্রেফ দায়সারা ও গা-বাঁচানো ক্রিকেট খেলছেন। তাইতো প্রশ্ন উঠছে, বিসিবি এতো সুযোগ-সুবিধা, বেতন বাড়ানো, ম‌্যাচ ফি’র উন্নতি, বোনাস ঘোষণা করেও কেন সুফল পাচ্ছে না? অধিনায়ক শান্তর কাছেই তাই জানতে চাওয়া, আর কী করলে পারফরম‌্যান্স পেতে পারে বাংলাদেশ।
অধিনায়ক প্রশ্নটা শুরুতে ভালোভাবে নেননি। তাইতো পাল্টা প্রশ্ন করেই বললেন, ‘‘বেতন বাড়ানোয় মনে হয় আপনারা খুশি না। বা ম‌্যাচ ফি।’’ তবে বিসিবিকে ধন‌্যবাদ জানাতে ভুল করেননি, ‘‘অনেক দিন পর আমাদের ম‌্যাচ ফি বেড়েছে সেটা অবশ্যই অ‌্যাপ্রিসিয়েট করার মতো বিষয়।’’

শান্ত, মিরাজ ও লিটন বিসিবির ‘এ’ ক‌্যাটাগরির ক্রিকেটার। তারা ৮ লাখ টাকা করে প্রতি মাসে বেতন পাচ্ছেন। কেন্দ্রীয় চুক্তির সর্বনিম্ন গ্রেড ‘ডি’। সেখানে থাকা দুই ক্রিকেটার মাস প্রতি পাচ্ছেন ২ লাখ টাকা। ২০২০ সাল থেকে ক্রিকেটাররা ম‌্যাচ ফি প্রতি টেস্টে ৬ লাখ টাকা, প্রতি ওয়ানডেতে ৩ লাখ টাকা ও প্রতি টি-টোয়েন্টিতে ২ লাখ টাকা করে পেয়ে আসছিলেন।

আরো পড়ুন:

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে এনামুল

যেকোনো মূল‌্যে আমরা জিততে চেয়েছিলাম: আরভিন

গত বছর ম্যাচ ফি বাড়িয়ে টেস্টে ৮ লাখ, ওয়ানডেতে ৬ লাখ ও টি-টোয়েন্টিতে ৩ লাখ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছিল তখনকার ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগ। তবে বোর্ড সভায় অনুমোদন পায়নি সেটি। ফারুক আহমেদের বোর্ড গত মার্চে তা অনুমোদন দেয়। সাম্প্রতিক অতীতের পারফরম্যান্স খুব একটা আশা জাগানিয়া নয়—তবে বাড়ছে ক্রিকেটারদের পারফরম‌্যান্স বোনাসও।

সিলেটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচে মাঠে নেমে একাদশে থাকা সব ক্রিকেটার ৮ লাখ টাকা করে পেয়েছেন। একাদশের বাইরে থাকা নাঈম হাসান ও জাকির হাসান ছিলেন দ্বাদশ ও ত্রয়োদশ ক্রিকেটার। তারা পেয়েছেন ম‌্যাচ ফির ৫০ শতাংশ টাকা, অর্থ‌্যাৎ ৪ লাখ টাকা। আর চতুর্দশ ও পঞ্চদশ ক্রিকেটার ছিলেন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ও তানজিম হাসান সাকিব। তারা পেয়েছেন ৩০ শতাংশ, ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা। এছাড়া প্রতি দিনের দৈনিক ভাতা তো আছেই।

সুযোগ-সুবিধা, অর্থ-বৈভব কোনো কিছুরই ঘাটতি নেই। তবুও পারফরম্যান্স মনোঃপুত নয়। শান্ত বললেন সামনে এগিয়ে যেতে ভালো ক্রিকেটের বিকল্প নেই, ‘‘আর কি হলে আসলে ভালো হবে….

আমার কাছে মনে হয় ভালো ক্রিকেট খেলাটাই গুরুত্বপূর্ণ। চেষ্টা করা, দায়িত্ব নিয়ে খেলাটা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যে ধরণের ক্রিকেট খেলছি আমাদেরকে অবশ‌্যই দায়িত্বটা নিতে হবে। ভালো করতে পারছি না। কিভাবে ভালো করতে পারি সেটা সবাই মিলে বসে আলোচনা করে নিতে হবে। এমন না যে আমরা কেউ কষ্ট করছি না বা অন‌্য কিছু। যেহেতু পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ঘাটতি আছে। বিশেষ করে যার যার যেই ভূমিকায় আছে সেটা ঠিক হয়েই দায়িত্ব পালন করতে হবে।’’

সিলেট/ইয়াসিন/আমিনুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রফরম

এছাড়াও পড়ুন:

তাইজুলকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে অবমূল্যায়িত বোলার’ বললেন তামিম

চট্টগ্রাম টেস্টে আজ প্রথম দিনে জিম্বাবুয়ের প্রথম ইনিংসে ৬০ রানে ৫ উইকেট পেয়েছেনতাইজুল ইসলাম। টেস্টে এ নিয়ে ১৬তমবার ইনিংসে ৫ উইকেট পেলেন  বাংলাদেশের বাঁহাতি স্পিনার। প্রথম দিনের খেলা শেষে তাইজুলের প্রশংসা করে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাস দেন তামিম ইকবাল।

আরও পড়ুনতাইজুলের মনে হয় না তারা খেলা বোঝে১ ঘণ্টা আগে

বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়কের পেজে তাইজুলের একটি ছবি পোস্ট করে লেখা হয়, ‘এই মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে অবমূল্যায়িত (আন্ডাররেটেড) বোলার। এখন খেলা অন্য বোলারদের পরিসংখ্যান দেখুন, তাহলে আমার কথাটা বুঝতে পারবেন। আরেকবার ৫ উইকেট নিয়ে দারুণ খেলেছ তাইজুল।’

২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে টেস্ট ও ডিসেম্বরে ওয়ানডে অভিষেক তাইজুলের। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক ২০১৯ সালে। ওয়ানডে (২০) ও টি-টোয়েন্টির (২) চেয়ে টেস্ট ম্যাচই (৫২) বেশি খেলেন তাইজুল। চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চলতি টেস্টে প্রথম দিনের পারফরম্যান্সসহ মোট ৫৩ টেস্টে এ পর্যন্ত ২২৪ উইকেট নিয়েছেন তাইজুল। তাঁর টেস্ট সংস্করণের পারফরম্যান্সটা যাচাই করে দেখা যায়।

এখনো যাঁরা খেলছেন তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উইকেট নাথান লায়নের। অস্ট্রেলিয়ার অফ স্পিনারের টেস্ট অভিষেক ২০১১ সালে। তাইজুলের টেস্ট অভিষেকের সময় থেকে লায়নের পারফরম্যান্স—   ১০৩ টেস্টে ২৯.৪৮ গড়ে ৪৪১ উইকেট। মোট ২৪ বার ৫ উইকেট নিলেও তাইজুলের অভিষেকের পর থেকে ১৯ বার ৫ উইকেট নেন লায়ন। তবে অস্ট্রেলিয়া দল বাংলাদেশের চেয়ে অনেক বেশি টেস্ট খেলায় লায়ন এ সময়ে তাইজুলের চেয়ে অনেক বেশি টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়েছেন। বোলিং গড় এবং স্ট্রাইকরেটে লায়ন ও তাইজুলের মাঝে ব্যবধান বেশি না। তাইজুলের বোলিং গড় ৩১.৫৬, স্ট্রাইক রেট ৬১.৯, যেখানে লায়নের স্ট্রাইকরেট ৬১.৬ ও গড় ৩০.১৯।

আরও পড়ুনতাইজুলের ভেলকি, শেষ সেশনে গেল ৭ উইকেট২ ঘণ্টা আগে

ভারতের স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন গত বছর ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাড়েন। টেস্টে তার অভিষেক ২০১১ সালে। তাইজুলের টেস্ট অভিষেক থেকে এই সংস্করণে ৮৫ ম্যাচে ২২.৮৪ গড়ে ৪৩০ উইকেট নেন অশ্বিন। এ সময়ে ২৮ বার পেয়েছেন ৫ উইকেট। অস্ট্রেলিয়ার মতো ভারতও বেশি বেশি টেস্ট খেলায় স্বাভাবিকভাবেই এ সময়ে তাইজুলের তুলনায় বেশি টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়েছেন অশ্বিন।

ভারতের আরেক স্পিনার রবীন্দ্র জাদেজার ক্ষেত্রেও একই কথা খাটে। তাইজুলের অভিষেকের দুই বছর আগে টেস্টে অভিষেক জাদেজার। তাইজুলের অভিষেকের সময় থেকে এ পর্যন্ত ৬৮ টেস্টে ২৭৮ উইকেট নিয়েছেন জাদেজা। তবে তাঁর চেয়ে এ সময়ে বেশি সংখ্যকবার ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়েছেন তাইজুল। জাদেজা এ সময়ে ৫ উইকেট নিয়েছেন ১৩ বার, তাইজুল নিয়েছেন ১৬ বার।

তাইজুল ৫ উইকেট নেওয়ার পর তাঁকে জড়িয়ে ধরেন অধিনায়ক নাজমুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মিরাজে দুর্দান্ত জয় বাংলাদেশের
  • আজিজুল হাকিমের অলরাউন্ড পারফরম্যান্স, কলম্বোয়ও হেসেছে বাংলাদেশ
  • ‘বাজপাখি’ মার্তিনেজের বাজে ফর্ম, আর্জেন্টিনার জন্য কতটা দুশ্চিন্তার
  • সমালোচকরা খেলা বোঝে না!—আক্ষেপ তাইজুলের
  • তাইজুলকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে অবমূল্যায়িত বোলার’ বললেন তামিম
  • বার্সেলোনা ও পিএসজি ছাড়া যে কীর্তি গড়ার সুযোগ নেই এবার আর কারও