Samakal:
2025-06-15@10:50:13 GMT

আশ্বাসেই ঝুলছে বগা সেতু

Published: 24th, April 2025 GMT

আশ্বাসেই ঝুলছে বগা সেতু

পটুয়াখালীর বাউফলের লোহালিয়া নদীর ওপর একটি সেতুর অভাবে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তিন উপজেলার মানুষকে। দুমকী-বাউফল-দশমিনা-গলাচিপা আঞ্চলিক মহাসড়কে একটি সেতু নির্মাণে কয়েক দশক ধরে প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বগা নামক স্থানে সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা আলোর মুখ দেখেনি। 

জানা গেছে, কুয়াকাটা-পটুয়াখালী-ঢাকা মহাসড়কের লেবুখালী থেকে দুমকী-বাউফল-দশমিনা-গলাচিপা সদর পর্যন্ত প্রায় ৮৬ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মিত হয়েছে। মাঝপথে বাউফলের বগা ইউনিয়নের লোহালিয়া নদী। ওই আঞ্চলিক মহাসড়কের ১১ কিলোমিটারে লোহালিয়া নদীতে সড়ক ও জনপথ বিভাগের ফেরি রয়েছে। প্রতিদিন ফেরিতে পণ্যবাহী শত শত ট্রাক,  কাভার্ডভ্যান, যাত্রীবাহী বাস, তিন উপজেলার রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স নদী পার হয়। এসব যানবাহন ও যাত্রীদের নদী পারাপার হতে নানা বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। অনেক সময় ফেরিতে ওঠার অপেক্ষায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় নষ্ট হয়। লোহালিয়া নদীতে সেতুটি নির্মিত হলে জেলা সদর থেকে দুমকী উপজেলা হয়ে বাউফল, দশমিনা উপজেলা ছাড়াও গলাচিপা উপজেলা পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ নিশ্চিত হবে। 

স্থানীয়রা জানান, শিক্ষা, সংস্কৃতিসহ অর্থনৈতিক সূচকে সমৃদ্ধ এক জনপদ বাউফল। এই একটি উপজেলা নিয়ে গঠিত সংসদীয় আসন পটুয়াখালী-২। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সড়কপথে বাউফলে এলে লোহালিয়া নদী পেরিয়ে আসতে হয়ে। এ ছাড়া দুমকী, দশমিনা ও গলাচিপা উপজেলার কয়েক লাখ মানুষকে বগা ফেরিঘাট হয়ে জেলা শহরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করতে হয়। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময় থেকে এই আসনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেও উপজেলাবাসীর প্রধান দাবি বগা সেতু নির্মাণ হয়নি। 

পটুয়াখালী-বগা-বাউফল সড়কে নিয়মিত চলাচলকারী ট্রাকচালক খলিলুর রহমান বলেন, ‘ফেরিঘাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয়। এর থেকে বড় বড় নদীতেও সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। লোহালিয়া নদীতে ফেরি পার হতে গাড়িচালকদের যেমন সময় নষ্ট হয়, তেমনি পরিবহন ভাড়াও বেশি দিতে হয়। এ ছাড়া অনেক সময় নির্ধারিত সময়ে পণ্য সরবরাহ করা সম্ভব হয় না।’

বাউফলের বগা বন্দরের ব্যবসায়ী সমির বণিক বলেন, স্থানীয় ব্যবসায়ীরা আগে রাজধানী ঢাকা থেকে লঞ্চে মালপত্র পরিবহন করতেন। এতে করে বগা লঞ্চ ঘাটে মালপত্র নামিয়ে আবার ছোট ছোট পরিবহনে বন্দরে নিয়ে আসতে অনেক খরচ  পড়ে। পদ্মা সেতুসহ দক্ষিণাঞ্চলে অনেক সেতু নির্মাণ হওয়ায়  পরবর্তী সময়ে সড়ক পথে ট্রাকে মালপত্র পরিবহন বেড়ে যায়। এখনও লোহালিয়া নদীতে ফেরি নিয়ে ব্যবসায়ীদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। বগা সেতুটি নির্মাণ হলে সড়ক পথে সরাসরি মালপত্র বন্দরে নিয়ে আসা সম্ভব হবে। অবিলম্বে বগা সেতু নির্মাণের দাবি জানান তিনি। 

বাউফলের এনামুল হক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল মান্নান খান বলেন, রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় সড়ক পথে যাতায়াতে তিন উপজেলার মানুষের বড় দুর্ভোগ বগা ফেরি পারাপার। বগা ফেরিঘাটে সেতু নির্মাণ হলে জাতীয় মহাসড়কের সঙ্গে বাউফলসহ তিন উপজেলার নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে। এতে কয়েক লাখ মানুষের জীবনযাত্রায় ইতিবাচক পরিবর্তন ও স্থানীয় অর্থনীতির উন্নয়ন ঘটবে। 

স্থানীয় কৃষক আরোজ আলী বলেন, লোহালিয় নদীতে বগা সেতু নির্মাণ হলে স্থানীয় কৃষকরা তাদের পণ্য জেলা শহরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করে লাভবান হতে পারবে। 

বাউফল শাখা পূবালী ব্যাংকের ম্যানেজার টি এম মনিরুজ্জামান বলেন, লোহালিয়া নদীর ওপর বগা সেতুটি নির্মিত হলে এ অঞ্চলের মানুষের ব্যবসা বাণিজ্য ও অর্থনীতিতে নতুন গতি আসবে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার দুটি ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, জেলা সদর থেকে ফেরিতে ব্যাংকের টাকা নিয়ে আসতে তাদের প্রতিনিয়ত বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। এতে আমানতকারীরা ব্যাংক সম্পর্কে খারাপ ধারণা করেন এবং তাদের কার্যক্রম নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। 

এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগ পটুয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী মো.

জামিল আক্তার জানান, লোহালিয়া নদীতে বগা সেতু নির্মাণের জন্য ২০২১ সালের মার্চ মাসে চীনের সঙ্গে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হয়। ইতোমধ্যে সেতুর ফিজিবিলিটি স্টাডিও শেষ  হয়েছে। এখন জমি অধিগ্রহণ এবং এতে কী পরিমাণ অর্থ খরচ হবে, সে বিষয়ে প্রাক্কলন তৈরি করা হচ্ছে। এটি শেষ হলে দ্রুত ডিপিপি প্রণয়ন করে সেতু নির্মাণকাজ শুরু করা যাবে বলে তিনি আশাবাদী। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ত ন উপজ ল র ম লপত র ব উফল র পর বহন ব যবস দশম ন

এছাড়াও পড়ুন:

শাবানার আজ জন্মদিন

ঢাকাই চলচ্চিত্রের জীবন্ত কিংবদন্তি শাবানা। রবিবার (১৫ জুন) এ অভিনেত্রীর জন্মদিন। ১৯৫২ সালের এই দিনে চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার ডাবুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বাংলা সিনেমার অবিস্মরণীয় এই তারকা। তার প্রকৃত নাম আফরোজা সুলতানা রত্না। কিন্তু সারা দেশের মানুষ তাকে হৃদয়ে ধারণ করে ‘শাবানা’ নামে।

মাত্র ১০ বছর বয়সে শিশুশিল্পী হিসেবে ‘নতুন সুর’ (১৯৬২) সিনেমার মাধ্যমে অভিনয়ে অভিষেক হয় শাবানার। সেখান থেকে শুরু—তারপর এক দীর্ঘ পথচলা, যেখানে শাবানা হয়ে ওঠেন একের পর এক যুগান্তকারী সিনেমার মুখ। চার দশকের ক্যারিয়ারে প্রায় ৩০০ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে বাংলা সিনেমার আকাশে নিজেকে স্থায়ী নক্ষত্রে রূপান্তরিত করেন।

‘ভাত দে’, ‘অবুঝ মন’, ‘ছুটির ঘণ্টা’, ‘ওরা এগারো জন’, ‘চাঁপা ডাঙার বউ’, ‘আক্রোশ’, ‘রাঙা ভাবি’, ‘বাংলার নায়ক’—এমন অসংখ্য কালজয়ী সিনেমায় অভিনয় করে দর্শকের মনে দাগ কেটেছেন শাবানা। জনপ্রিয়তা ও অভিনয়গুণে অনন্য এক শিল্পী, যিনি রোমান্স থেকে শুরু করে সমাজধর্মী, দেশপ্রেম বা পারিবারিক—সব ধরনের চরিত্রে নিজেকে নিখুঁতভাবে তুলে ধরতে পেরেছেন।

আরো পড়ুন:

‘অত্যাচারী’ স্বামীর মৃত্যুতে কারিশমার শোক, যা বললেন জয়া

দর্শক বলছেন আমি যেন শুভ ভাইকে বিয়ে করি: মন্দিরা

অভিনয়ের স্বীকৃতিস্বরূপ ৯ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন শাবানা। প্রযোজক হিসেবেও পেয়েছেন জাতীয় পুরস্কার। নাট্য ও সংস্কৃতি জগৎ থেকেও অর্জন করেছেন বাচসাস, নাট্যসভা, ললিতকলা একাডেমি ও কথক একাডেমি পুরস্কার।

ব্যক্তিজীবনে ১৯৭৩ সালে বিয়ে করেন সরকারি কর্মকর্তা ও প্রযোজক ওয়াহিদ সাদিককে। তিন সন্তানের জননী শাবানা ১৯৯৭ সালে হঠাৎ করেই অভিনয় জীবন থেকে বিদায় নেন। ২০০০ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সিতে পরিবার নিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন তিনি।

অভিনয়ে ফিরবেন কি না, সে প্রশ্ন বহুবার উঠেছে। কিন্তু শাবানা এমন এক নাম, যার অবদান আর স্মৃতিময়তা কখনো ম্লান হওয়ার নয়।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ