‎দেশের শীর্ষস্থানীয় ইস্পাত শিল্প প্রতিষ্ঠান কেএসআরএম ভবিষ্যৎ স্থপতিদের অনুপ্রাণিত করার জন্য ষষ্ঠবারের মতো ‘কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ডস ফর ফিউচার আর্কিটেক্টস: বেস্ট আন্ডারগ্রাজুয়েট থিসিস’ দিতে যাচ্ছে। প্রতিবছরের মতো এবারও দেশের তিন জন উদীয়মান স্থপতিকে সম্মাননা দেওয়া হবে। 

‎বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেক্টস বাংলাদেশের (আইএবি) মিলনায়তনে কেএসআরএম ও আইএবির যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। 

সংবাদ সম্মেলনে সার্বিক বিষয় উপস্থাপন করেন আইএবির সভাপতি স্থপতি ড.

আবু সাঈদ এম আহমেদ। তিনি জানান, আইএবির সহায়তায় কেএসআরএমের মর্যাদাপূর্ণ স্বীকৃতি ‘কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ডস ফর ফিউচার আর্কিটেক্ট’। এ অ্যাওয়ার্ড দেওয়ার উদ্দেশ্য হলো— বাংলাদেশের আইএবি স্বীকৃত আর্কিটেকচার ডিপার্টমেন্টের স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের সেরা দূরদর্শী প্রকল্পগুলোকে সমাদৃত করা।‎

‎কেএসআরএম ও আইএবির মধ্যে ১০ বছর মেয়াদী একটি সমঝোতা চুক্তি সই হয়েছে ২০১৯ সালে। সেই থেকে জুরি বোর্ড নির্বাচিত উদীয়মান তিন জন স্থপতিকে প্রতিবছর অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয় কেএসআরএমের পক্ষ থেকে। চুক্তির আওতায় আইএবি স্বীকৃত দেশের স্বনামধন্য ১৫টি আর্কিটেকচার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্নাতক পর্যায়ের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীরা এ অ্যাওয়ার্ড প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে সেরা তিন প্রতিযোগী চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছেন। অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের প্রজেক্টের মধ্যে থেকে সেরা তিন জনকে বাছাই করেন দেশের জ্যেষ্ঠ পাঁচ স্থপতি নিয়ে গঠিত জুরি বোর্ড।

আগামী ‎‎২৭ এপ্রিল সকাল ১০টায় আইএবি সেন্টারে প্রজেক্টগুলোর প্রদর্শনী উদ্বোধন করা হবে। চার দিনব্যাপী প্রদর্শনী চলবে ৩০ এপ্রিল রাত ৮টা পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রদর্শনী সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। ২৬ এপ্রিল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আইএবি সেন্টারে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে। ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হয়ে থাকার সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।‎‎

কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ডে প্রথম পুরস্কার বিজয়ী পাবেন ১ লাখ টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার বিজয়ী ৭৫ হাজার টাকা এবং তৃতীয় পুরস্কার বিজয়ী পাবেন ৫০ হাজার টাকা। একই সঙ্গে তাদেরকে ক্রেস্ট ও সনদ দেওয়া হবে।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন— কেএসআরএমের মহাব্যবস্থাপক (মার্কেট রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আশফাকুল ইসলাম, আইএবির সহ-সাধারণ সম্পাদক স্থপতি ড. মো. নওরোজ ফাতেমী, সম্পাদক (শিক্ষা) স্থপতি ড. মো. মারুফ হোসেন, সম্পাদক (প্রকাশনা ও প্রচার) স্থপতি মো. শফিউল আযম শামীম, জুরি চেয়ার স্থপতি নিশাত আফরোজ, অ্যাওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর স্থপতি সাকিব আহসান চৌধুরী।

উপস্থিত ছিলেন কেএসআরএমের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম, আইন উপদেষ্টা ব্যারিস্টার সাইফুল আলম চৌধুরী, উপ-ব্যবস্থাপক সৈয়দ তানভীরুল হাসান, ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং অফিসার মো. মুন রহমান মুন্না।

‎এবারের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো—বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট), খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, আমেরিকান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ (এআইইউবি), ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, আহছানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ, সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়, স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, লিডিং বিশ্ববিদ্যালয়, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি।

ঢাকা/সুকান্ত/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক এসআরএম র ইউন ভ র স ট আর ক ট ক ট প রস ক র রদর শ স থপত

এছাড়াও পড়ুন:

লাখপুরের রংবাহারি রাম্বুটান

১৯ জুলাই সকাল ১০টা। নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার মরজাল বাজারে গাড়ি থেকে নামলাম। ততক্ষণে ব্যাপারীদের পাইকারি কেনাকাটা শেষ। মালপত্র বেঁধেছেঁদে গাড়িতে তোলা হচ্ছে। কিন্তু ফুটপাতে তখনো ভিড়। খুচরা ক্রেতারা পছন্দের জিনিস কিনতে দরদাম করছেন। ভিড়ের মধ্যে ঢুকে পড়লাম, দেখা যাক কী পাওয়া যায়।

কাঁঠালের দোকানে তেমন ভিড় নেই। লটকনের দোকান বেশি, বিক্রিও ভালো। আকার অনুযায়ী দাম। এখানে না এলে জানতামই না, এত বড় আকারের লটকন হতে পারে! এক গৃহস্থ টুকরিতে কলম্বো লেবু নিয়ে বসে আছেন। এই লেবু আকৃতি ও সুগন্ধের জন্য বিখ্যাত। আরেকটু এগিয়ে গিয়ে থামতেই হলো। কয়েকটি দোকানে সাজানো হলুদ আর লাল রঙের রাম্বুটান!

দেখতে ফুলের মতো আকর্ষণীয় রঙের এই ফল সবার নজর কাড়ছে। ক্রেতারা দাম জানতে চাইছেন। কেউ কেউ কিনছেনও। জানতে চাইলাম, এই রাম্বুটান কোথা থেকে এল? দোকানির উত্তর শুনে চোখ ছানাবড়া। নরসিংদীর কয়েকটি গ্রামেই নাকি ইদানীং চাষ হচ্ছে রাম্বুটান। দারুণ ব্যাপার। এ খবর জানা ছিল না।

কাছাকাছি দূরত্বে কোনো গ্রামে গেলে কি রাম্বুটানের বাগান দেখতে পাওয়া যাবে? এ প্রশ্নের উত্তর দিলেন স্থানীয় কৃষি উদ্যোক্তা মো. সুজন মিয়া। তিনি জানালেন,Ñকাছেই বেলাব উপজেলার লাখপুর গ্রামে চমৎকার একটি বাগান আছে।

আমরা দ্রুত বাগানের পথ ধরি। বাগানে যেতে যেতে মনে হলোÑ ঘন গাছপালার ছাউনির ভেতর দিয়ে ক্রমেই যেন হারিয়ে যাচ্ছি! এখানকার বেশির ভাগ গাছই লটকনের। বাগানগুলো এতই বড় যে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত ভালোভাবে দেখা যায় না।

অল্প সময়ের মধ্যে পৌঁছে গেলাম লাখপুর গ্রামে। উয়ারী ও বটেশ্বর–লাগোয়া এই গ্রামে রাম্বুটানের বাগানে গিয়ে চমকে উঠি। বেশ বড় বড় অনেক গাছ। গাছে গাছে দুই রঙের রাম্বুটান। চমৎকার দৃশ্য।

এ রংবাহারি ফল দেখার জন্য সারা দিন অনেক মানুষ ভিড় করেন সেখানে। কেউ কেউ দেখছেন, আবার কিনছেনও। একটু সময় নিয়ে বাগানটি ঘুরে দেখি। ছয়-সাত বছর বয়সী সব গাছই ফলভারে আনত। পাকা ফলগুলো দেখতে রঙের ঝরনাধারার মতো, বহুবর্ণিল। বাগান থেকে তরতাজা কিছু ফল কিনি। মন ভরে ছবি তুলি।

একসময় রাম্বুটান চিনতাম না। ২০০৫ সালে হংকংয়ে বেড়াতে গিয়ে বন্ধু মোস্তাফিজুর রহমান শাহিনের বাসায় প্রথম এ ফল খাই। পরে কুয়ালালামপুর শহরের আশপাশে রাম্বুটানের অনেক গাছ দেখেছি। দুই বছর পর বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্মপ্লাজম সেন্টারে গাছভর্তি রাম্বুটান দেখে চমৎকৃত হয়েছিলাম। বীজ থেকে তৈরি চারাগুলো সেখানে প্রথম লাগানো হয় ১৯৯৮ সালে। প্রায় সাত বছর পর গাছগুলোতে ফল আসতে শুরু করে। আকৃতি ও স্বাদের দিক থেকেও ফলগুলো সমমানের।

বাগানে সুদর্শন হলুদ রঙের রাম্বুটান

সম্পর্কিত নিবন্ধ