রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ঝটিকা মিছিল থেকে আওয়ামী লীগ, নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও শ্রমিক লীগের ১১ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গতকাল বুধবার দিবাগত রাত ও আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এই ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মামলা রয়েছে।

পুলিশ আরও জানিয়েছে, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নানাভাবে সংঘবদ্ধ হয়ে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ঝটিকা মিছিল করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি ও দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ রয়েছে।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন বংশাল থানা ৩৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামী যুবলীগের সহসভাপতি আসাদুল্লাহ শিপলু (৪৫), ৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শাকিল আহমেদ (৫৬), ৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব (৪৫), ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সহসম্পাদক আসলাম চৌধুরী (২৪), যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগ নেতা মোবাশ্বের রহমান (৫৫), ঝালকাঠি জেলার নলছিটি থানার কুশঙ্গল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমীন (৫৪), সাবেক মেয়র ও কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক কামাল হোসেন শেখ (৬২)।

আরও গ্রেপ্তার হয়েছেন উত্তরা পশ্চিম থানা শ্রমিক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো.

বাবুল (৫৫), শেরেবাংলা নগর থানার ৯৯ নং ওয়ার্ড যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক রেজাউল করিম (রানা), মিরপুর থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজালাল (৪৫) এবং বাংলাদেশ স্থলবন্দর শ্রমিক লীগের সম্পাদক ও সুনামগঞ্জের তাহেরপুর থানার বালিজুড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজাদ হোসেন (৫২)।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বুধবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে উত্তরার ১৪ নম্বর সেক্টর থেকে মো. বাবুলকে, রাত ২টার দিকে মোহাম্মদপুর চন্দ্রিমা মডেল টাউন থেকে মো. শাহজালালকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) সাইবার ক্রাইম বিভাগের পৃথক দল। এর আগে রাত পৌনে দুইটার দিকে শেওড়াপাড়া এলাকা থেকে মো. রেজাউল করিমকে ডিবি মিরপুর বিভাগের একটি দল গ্রেপ্তার করে।

বুধবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর ভাষানটেক এলাকায় অভিযান চালিয়ে কামাল হোসেন শেখকে গ্রেপ্তার করে ডিবি তেজগাঁও বিভাগের একটি দল। অন্যদিকে বৃহস্পতিবার রাজধানীর বংশাল এলাকা থেকে আসাদুল্লাহ শিপলুকে এবং মতিঝিল থেকে শাকিল আহমেদকে গ্রেপ্তার করে ডিবি-লালবাগ বিভাগের পৃথক দল।

এর আগে বুধবার রাত ৯টার দিকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে মোবাশ্বের রহমানকে ও রাত একটার দিকে শান্তিনগর এলাকা থেকে আজাদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি ওয়ারী বিভাগের পৃথক দল।

এ ছাড়া বুধবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে লালবাগ এলাকা থেকে রুহুল আমীনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি রমনা বিভাগ। রাত সাড়ে ১১টার দিকে মতিঝিল এলাকা থেকে হাবিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে ডিবি-মতিঝিল বিভাগ। একই সময়ে পৃথক অভিযানে বাড্ডা এলাকা থেকে আসলাম চৌধুরী গ্রেপ্তার হন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর ব র রহম ন আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের

ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।

এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।

এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।

সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।

আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।

শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্‌ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।

পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঢাকায় আওয়ামী লীগ ও দলটির অঙ্গসংগঠনের ১২ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার
  • ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের