জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, গত ৫৩ বছরে বাংলাদেশের শাসনকাঠামোতে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণে ঘাটতি এবং প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা ছিল বলেই একটি ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আমজনতার দলের আলোচনার শুরুতে অধ্যাপক আলী রীয়াজ এ কথা বলেন।

সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছে ঐকমত্য কমিশন। এর অংশ হিসেবে আজ আমজনতার দলের সঙ্গে আলোচনা করে কমিশন।

আলোচনার শুরুতে সূচনা বক্তব্যে আলী রীয়াজ বলেন, ঐকমত্য কমিশনের লক্ষ্য হচ্ছে সবার সঙ্গে আলোচনা করে একটি সর্বজন গ্রহণযোগ্য জাতীয় সনদ তৈরি করা, যা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের পথরেখা তৈরি করবে। তিনি বলেন, ১৬ বছর ধরে দেশের সর্বস্তরের মানুষ যে ফ্যাসিবাদের নিপীড়ন সহ্য করেছে, তা যেন আর ফিরে না আসে। এখন নতুন বাংলাদেশ গড়ার সময় এসেছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের অব্যাহত আলোচনা নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অনুঘটক হিসেবে কাজ করবে।

আলোচনায় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ইফতেখারুজ্জামান ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য) মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।

আমজনতার দলের সভাপতি মিয়া মশিউজ্জামানের নেতৃত্বে দলটির সাধারণ সম্পাদক মো.

তারেক রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়সাল আহমেদসহ ১২ সদস্যের প্রতিনিধিদল আলোচনায় অংশ নেয়।

প্রথম পর্যায়ে গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর মধ্যে সংবিধান, জনপ্রশাসন, নির্বাচনব্যবস্থা, দুর্নীতি দমন কমিশন ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলো নিয়ে দলগুলোর সঙ্গে আলাদা আলাদা আলোচনা করছে ঐকমত্য কমিশন। এখন পর্যন্ত ১৬টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রথম পর্যায়ের আলোচনা শেষ করেছে কমিশন।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ঐকমত্য কমিশন হাজির করেছে অনৈক্যের দলিল: বিএনপি নেতা জহির উদ্দিন স্বপন

ঐকমত্য কমিশনের কাজ ঐকমত্য তৈরি করা হলেও তারা আনুষ্ঠানিকভাবে অনৈক্যের দলিল হাজির করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন।

জহির উদ্দিন বলেছেন, ‘যতটুকু ঐক্য নিশ্চিত করা যায়, ততটুকুই ঐকমত্য কমিশনের কাজ। বাকিটা ঐক্যের চেষ্টার জন্য রেখে দিতে হবে।…কিন্তু তা না করে যখন এ রকমভাবে হাজির করা হচ্ছে সিদ্ধান্তের নামে, তখন মূলত বিরোধে লিপ্ত হওয়ার জন্য একটা পরোক্ষ আহ্বান এবং একটা বিরোধের এজেন্ডাকে কিন্তু হাজির করা হয়।’

আজ শনিবার সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে ‘পলিটিকস ল্যাব: পাবলিক ডায়ালগ’ শীর্ষক সংলাপে এ কথা বলেন জহির উদ্দিন। সংলাপের আয়োজন করে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস)।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত মঙ্গলবার জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে হস্তান্তরের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে তা নিয়ে মতভেদ দেখা দেয়। বিএনপি অভিযোগ তুলেছে, তাদের আপত্তির বিষয়গুলো রাখা হয়নি সনদ বাস্তবায়ন আদেশের খসড়ায়। আলোচনায় আসেনি, এমন কিছুও যুক্ত করা হয়েছে।

সংলাপে জহির উদ্দিন স্বপন বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশনই জাতির সামনে জানাল যে ঐক্য নাই। ঐকমত্যের কাজই হবে যতটুকু ঐক্য আছে, সেটাকে উত্তোলন করা, যতটুকু নাই ততটুকুকে জানিয়ে রাখা এর চাইতে বেশি কোনো কাজ নাই। কমিশন শব্দটার মধ্যেই তো রয়েছে যে তারা অথরিটি নয়।’

জুলাই অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা থেকে যদি প্রকৃত অর্থে সংস্কারই উদ্দেশ্য হয়, তাহলে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি মেনে চলার ওপর জোর দেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রথম আলোরও একটা ঐকমত্য সনদ আছে, আর তা আছে আমাদের হৃদয়ে
  • রাজনৈতিক দলগুলোকে ৭ দিনের সময় দিলে সরকার
  • গণভোট নিয়ে মতভেদে উপদেষ্টা পরিষদের উদ্বেগ
  • দলগুলো ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে ব্যর্থ হলে সরকার নিজের মতো সিদ্ধান্ত নেবে
  • জুলাই সনদ বাস্তবায়নে কেন এমন দুর্বোধ্য পথ
  • এক সপ্তাহের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোকে ‘ঐকমত্য সুপারিশ’ দেওয়ার আহ্বান
  • সনদ বাস্তবায়নে দ্রুত সিদ্ধান্ত, আরপিওতে পরিবর্তন আসছে
  • তড়িঘড়ি না করে সংবিধান সংস্কারে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান
  • কিছু রাজনৈতিক দল ঐকমত্য কমিশনে গিয়ে ফাঁদে পড়েছে: জাপা মহাসচিব
  • ঐকমত্য কমিশন হাজির করেছে অনৈক্যের দলিল: বিএনপি নেতা জহির উদ্দিন স্বপন