কর্মকর্তার বিরুদ্ধে টাকা আদায়, দুর্ব্যবহারের অভিযোগ
Published: 25th, April 2025 GMT
ময়মনসিংহ টিসিবির আঞ্চলিক কার্যালয়ের গুদাম কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসানের বিরুদ্ধে টাকা আদায় ও ডিলারদের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তারা।
অভিযোগে বলা হয়, ২০২৪ সালের জুন মাসে যোগদানের পর থেকেই গুদাম কর্মকর্তা মাহমুদুল ক্ষমতার অপব্যবহার করে ডিলারদের মালপত্র আটকে রাখা, গাড়ি চালকদের অকারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসিয়ে রাখাসহ বিভিন্ন সময় তাদের লাঞ্ছিত করেছেন।
যোগদানের কিছু দিন পরই মেসার্স আকিক এন্টারপ্রাইজের মালিক সাহিল আহমেদ আকিকের সঙ্গে গুদাম কর্মকর্তা তুচ্ছ কারণে বাগ্বিতণ্ডা হয়। এ ঘটনায় সমালোচনা শুরু হলে আঞ্চলিক কার্যালয়ের কর্মকর্তারা ডিলারদের সঙ্গে মীমাংসার জন্য বৈঠকে বসলে আর এ রকম ঘটনা ঘটাবেন না বলে প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
ময়মনসিংহ সদরের মাহিন স্টোরের মালিক মিনহাজ বলেন, ‘গুদাম কর্মকর্তা সামান্য বিষয় নিয়ে ডিলারদের গালাগাল করেন। আমরা তো তাঁর চাকরি করি না। আমাদের প্রায় ডিলার ময়মনসিংহ শহরের বাইরের বিভিন্ন উপজেলার ও জামালপুর জেলার। গুদাম কর্মকর্তার এমন আচরণ সহ্য করা যাচ্ছে না। সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যাওয়ায় বিষয়টি নিয়ে আমরা জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করেছি।’
হালুয়াঘাটের ব্যবসায়ী তামান্না এন্টারপ্রাইজের মালিক মোস্তফা কামাল জানান, মাহমুদুল নামে এই গুদাম কর্মকর্তা খুবই নিকৃষ্ট প্রকৃতির লোক। ডিলাররা তাঁর রুমে গিয়ে সালাম দিলেও তিনি উত্তর না দিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে রুম থেকে বের করে দেন। ডিলারদের প্রত্যেক ট্রাকচালকের কাছ থেকে তাঁর লোক দিয়ে ৫০ টাকা করে নেন। পণ্য বোঝাই করতে গেলেই তাঁর কর্মচারী খায়রুলের মাধ্যমে প্রতিবার ডিলারদের কাছ থেকে ২০০ টাকা করে নেন। এর পরও দুর্ব্যবহার করেন।
সানকিপাড়া এলাকার জান্নাত বীজ ভাণ্ডারের মালিক ও নারী উদ্যোক্তা পিংকি ক্ষোভ প্রকাশ করে সমকালকে বলেন, ‘মাহমুদুল নারীদের অসম্মান করে কথা বলেন। কয়েকদিন আগে তাঁর অফিসে আমাকে মানহানিকর কথা বলেন। পরে আমি বিষয়টি নিয়ে মামলা করতে চাইলে অফিসপ্রধান তাঁকে ডেকে নিয়ে শাসিয়েছেন।’
এসব অভিযোগের বিষয়ে টিসিবি ময়মনসিংহের অফিসপ্রধান জামাল উদ্দিন আহমেদের ভাষ্য, গুদাম কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আগেও অনেকবার অভিযোগ পেয়েছেন। শেষবারের মতো তাঁকে ডেকে এনে ভালোভাবে বুঝিয়ে বলবেন যাতে তাঁর আচরণ ঠিক করে। এসব নিয়ে নিউজ হলে মানসম্মান থাকবে না।
অভিযোগের বিষয়ে টিসিবির গুদাম কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসানের মোবাইল নম্বর ও হোয়াটসঅ্যাপে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ করেননি। পরে কথা হয় ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলমের সঙ্গে।
তিনি জানান, অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। তাঁকে সতর্ক করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ময়মনস হ গ দ ম কর মকর ত কর মকর ত র
এছাড়াও পড়ুন:
কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ ধসে ১০ শ্রমিক আহত
ময়মনসিংহের ত্রিশালে অবস্থিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ ধসে অন্তত ১০ শ্রমিক আহত হয়েছেন। তাঁদের উদ্ধার করে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে ‘বিদ্রোহী’ ছাত্রাবাসের পাশে একটি ১০ তলা ছাত্রাবাস নির্মিত হচ্ছে। নির্মাণাধীন ছাত্রাবাসের নিচতলায় একটি বারান্দার ছাদ ঢালাইয়ের কাজ করছিলেন শ্রমিকেরা। আজ সকাল থেকে ঢালাইয়ের কাজ চলতে থাকে। কিন্তু বিকেল সোয়া চারটার দিকে বিকট শব্দে ধসে পড়ে পুরো ছাদ। এ সময় সেখানে কাজ করা অন্তত ১০ শ্রমিক আহত হন। তাঁদের উদ্ধার করে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখান থেকে একজনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও) এস এম জিয়াউল বারী বলেন, আহত অবস্থায় ১০ শ্রমিককে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়। তাঁদের মধ্যে একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, আজ দিনভর থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছিল। ছাদ ঢালাই দেওয়ার জন্য খুঁটিগুলো ছিল দুর্বল। অনেক স্থানে লোহার পাইপের পরিবর্তে খুঁটি হিসেবে বাঁশ ও পাটের দড়ি ব্যবহার করা হয়। দুর্বল কাঠামোর কারণেই ছাদ ধসে যেতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মাহবুবুর রহমান বলেন, ১০ তলা ভবনের নিচে বারান্দার অংশের ছাদ ঢালাইয়ের কাজ চলছিল। নির্মাণকাজ করছিল সিএসআই নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ছাদ ধসে কয়েকজন শ্রমিক আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব না হওয়ায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মিজানুর রহমান বলেন, ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। কী কারণে ধসে পড়ল, কারও গাফিলতি আছে কি না, তা তদন্তে দেখা হবে। তারপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।