ওয়াক্ফ আইনের বিরোধিতায় কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডের সমাবেশ মুলতবি
Published: 25th, April 2025 GMT
ভারতে সম্প্রতি পাস হওয়া ওয়াক্ফ আইন বাতিলের দাবিতে ভারতজুড়ে আন্দোলন করছে অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড। সংগঠনটি এরই মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় ছোট-বড় কিছু সমাবেশও করেছে। কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলার পরিপ্রেক্ষিতে তারা বর্তমানে তিন দিনের শোক পালন করেছে। তবে আগামী শনিবার বিভিন্ন সংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে একটি বড় সমাবেশের ডাক দিয়েছিল ল বোর্ড। কিন্তু কর্তৃপক্ষের অনুমতি না পাওয়ায় তা মুলতবি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সমাবেশ মুলতবির কথা জানিয়েছে অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড। পরে নতুন তারিখ জানানো হবে।
ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ড পরিচালনা করে সেনাবাহিনীর ইস্টার্ন কমান্ড। ল বোর্ডকে শনিবার সমাবেশ করার অনুমতি না দেওয়া প্রসঙ্গে সেনাবাহিনীর তরফে কেন্দ্রের আইনজীবী জানান, আগামী রোববার পর্যন্ত ব্রিগেডে সেনাবাহিনীর নিজস্ব অনুষ্ঠান রয়েছে। তাই এই সময়ে সেখানে অন্য কোনো পক্ষের কোনো অনুষ্ঠান বা সমাবেশ করার সুযোগ নেই।
সেনাবাহিনীর অনুমতি প্রত্যাখ্যানকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল ল বোর্ড। আজ মামলাটি বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে ওঠে। আদালতও সমাবেশ মুলতবির পক্ষে রায় দিয়েছেন। তবে সুবিধামতো সময়ে পরে সমাবেশ করা যাবে বলে জানিয়েছেন।
কাশ্মীরের হামলার প্রসঙ্গ টেনে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ বাদীদের বলেন, ‘আগামী তিন দিন ব্রিগেডে মিটিং–মিছিল বন্ধের নির্দেশ আছে। তাই আপনারা সাত দিন পরে সেখানে জমায়েত করুন।’
একই সঙ্গে কী কারণে ব্রিগেডে শনিবার সমাবেশ বা মিছিল করা যাবে না, তা বাদীপক্ষকে ই-মেইল মারফত জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। সেনাবাহিনীকে বিষয়টি ল বোর্ডকে জানাতে হবে। প্রয়োজনে ল বোর্ডের আইনজীবী ফিরদৌস শামিমকে নতুন করে মামলা করারও পরামর্শ দিয়েছেন বিচারপতি।
এদিকে ওয়াক্ফ আইনবিরোধী অনেকগুলো মামলা বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে রয়েছে। এই অবস্থায় ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে সমাবেশ করতে দেওয়া যায় কি না, সেনাবাহিনীর তরফে কেন্দ্রের আইনজীবী সেই প্রশ্নও তুলেছেন। তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘ময়দানে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ সমবেত হবেন বলে তথ্য আমাদের হাতে এসেছে। কিন্তু প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে, ৫০ হাজার নয়, উদ্যোক্তারা মনে করেন সমাবেশে কয়েক লাখ মানুষ আসতে পারেন। সে ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাজ্য সরকারের সমস্যা হতে পারে।’
ল বোর্ডের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘বিভ্রান্ত হবেন না, ধৈর্য ধরুন। গাড়ি ভাড়া করে থাকলে তা বাতিল করবেন না। গাড়ির মালিকদের বিষয়টি জানান।’ প্রসঙ্গত, অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড ভারতের মুসলিম সমাজের নিজস্ব আইনকানুন এবং শরিয়াহ বিষয়ক আইনকানুন দেখভালের দায়িত্বে থাকা প্রধান বেসরকারি সংস্থা।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
হতাহতের ছবি-ভিডিও সরাতে ও ছড়িয়ে পড়া বন্ধে পদক্ষেপ চেয়ে রিট, আদেশ ৩ আগস্ট
রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় নিহত–আহতদের ছবি ও ভিডিও সরাতে এবং সেগুলো ছড়িয়ে পড়া বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চেয়ে রিট হয়েছে। এ রিটের ওপর আদেশের জন্য ৩ আগস্ট দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।
আজ বৃহস্পতিবার শুনানি নিয়ে বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আদেশের এই দিন ধার্য করেন।
ওই ঘটনায় নিহত–আহতদের ছবি–ভিডিও সরাতে এবং সেগুলো ছড়িয়ে পড়া বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তাসমিয়াহ নুহিয়া আহমেদ ২৯ জুলাই রিটটি করেন। আদালতে রিটের পক্ষে তিনি নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. গোলাম রহমান ভূঁইয়া।
উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান ২১ জুলাই বিধ্বস্ত হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ৩০ জুলাই পর্যন্ত হিসাবে, ওই ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ৩৪।
পরে আইনজীবী তাসমিয়াহ নুহিয়া আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ওই দুর্ঘটনায় আহত–নিহতদের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ ও ডিজিটাল মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেগুলোতে শিশুদের প্রায় পোশাকহীন, অগ্নিদগ্ধ ও আহত অবস্থায় দেখা যায়। এসব ছবি–ভিডিও শিশুদের পরিবারের পাশাপাশি সাধারণ নাগরিকদের ট্রমাটাইজ (মানসিকভাবে আঘাত) করে দিচ্ছে। আন্তর্জাতিক নীতিমালা অনুযায়ী এ ধরনের দুর্ঘটনায় আহত–নিহতদের ছবি–ভিডিও প্রকাশে সংবেদনশীল হওয়ার বিষয়ে বলা হয়েছে। ভবিষ্যতে এসব ছবি ব্যবহারে আরও সতর্কতা প্রয়োজন। তাই হতাহতদের ছবি–ভিডিও সরাতে এবং সেগুলো আর যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, সে জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়।