দুই প্রধানের এই ম্যাচটার দিকে তাকিয়ে ছিল গোটা ফুটবল অঙ্গনই। মোহামেডান জিতলে এই প্রথম পেশাদার লিগের শিরোপা অনেকটা হেলে যেত তাদের দিকে। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনীর চেয়ে সাদা–কালোরা এগিয়ে যেত সাত পয়েন্ট। ছয় ম্যাচ হাতে রেখে সাত পয়েন্ট এগিয়ে যাওয়া মানে উৎসবের প্রস্তুতি শুরু করতে পারতেন সমর্থকেরা। আবাহনী জিতলে সাদা–কালোর সঙ্গে তাদের ব্যবধান দাঁড়াত মাত্র এক পয়েন্ট।

কিন্তু মোহামেডান-আবাহনী কোনো দলই মেলাতে পারেনি জয়ের সমীকরণ। কুমিল্লায় আজ ৪৮ মিনিট ১০ জন নিয়ে খেলেছে মোহামেডান। তারপরও আবাহনীর সঙ্গে গুরুত্বপর্ণ লিগ ম্যাচটিতে গোলশূন্য ড্র করতে পেরছে সাদা–কালোরা।

এই ড্রয়ের ফলে দুই দলের পয়েন্টের পার্থক্যে কোনো পরিবর্তন হলো না। ম্যাচের আগে দুদলের মধ্যে থাকা চার পয়েন্টের ব্যবধান ম্যাচ শেষেও একই থাকল। ১৮ ম্যাচের লিগে ১২ ম্যাচ শেষে মোহামেডানের পয়েন্ট ৩১। আবাহনীর ২৭।

আরও পড়ুনআবাহনী-কিংস ফাইনালে ঝড়ে উড়ে গেল ডাগআউট, লন্ডভন্ড প্রেসবক্স২২ এপ্রিল ২০২৫

এই দুদলের পেছনে থাকা বসুন্ধরা কিংসও ময়মনসিংহে আজ ১২তম ম্যাচটা ড্র করেছে পয়েন্ট তালিকার চতুর্থ দল রহমতগঞ্জের সঙ্গে। মোহামেডানের সঙ্গে ১০ পয়েন্টের ব্যবধান কমিয়ে ৭-এ আনার সুযোগটা তাই হারিয়েছে কিংস। ব্যবধান রয়ে গেছে ১০-ই।

মোহামেডান আজ শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মেজাজে খেলছিল। প্রথম ১৫-১৬ মিনিট খেলেছে বেশ প্রাধান্য নিয়ে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেনি মোজাফফরভ, দিয়াবাতেরা। ৪২ মিনিটে তো সাদা–কালোরা হয়ে যায় ১০ জনের দল।

আবাহনীর এক খেলোয়াড়কে কনুইয়ের গুতো মেরে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন মোহামেডানের ডিফেন্ডার মাহবুব আলম। ৪৫ মিনিটে কুমিল্লার ভাষাসৈনিক শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে দেখা দেয় উত্তেজনা। ক্ষুব্ধ মোহামেডান–সমর্থকেরা বোতল, স্মোক ফ্লেয়ার ছুড়ে মারেন। মাঠ ধোঁয়াময় হয়ে থাকে কিছু সময়। মিনিট দশেক বন্ধও ছিল খেলা।

১০ জনের দল নিয়ে এমন ম্যাচে জেত অনেক কঠিন। ড্র করতে পারাও কৃতিত্ব। মোহামেডানের এই ড্রটা তাদের কাছে আসলে জয়েই সমান। ম্যাচ শেষে মোহামেডানের ডাগআউট দেখেই সেটা বোঝা গেছে। কোচ আলফাজ আহমেদের কথায়ও বোঝা যাচ্ছে তা। কুমিল্লা থেকে ফোনে বললেন, ‘১০ জন নিয়ে আবাহনীর মতো দলের সঙ্গে জেতা কঠিন। লাল কার্ডটা পিছিয়ে দেয় আমাদের। এ অবস্থায় এক পয়েন্ট পেয়ে আমি অখুশি না। তবে জিতলে বেশি খুশি হতাম।’

আবাহনীর কাছে এই ড্রটা হারের মতোই। ৭০ মিনিটের পর আবাহনী চাপ তৈরি করেছে মোহামেডানের রক্ষণে। ৮০ মিনিটে পর তো ব্যতিব্যস্তই ছিলেন মোহামেডান গোলকিপার সুজন। এই সময় টানা তিনটি কর্নার পায় আবাহনী। মোহামেডান রক্ষণেও চিড় ধরছিল বারবার। কিন্তু সুমন রেজা, ইব্রাহিম, রাফায়েলদের ফিনিশিংয়ের অভাবে গোল আসেনি। চলতি প্রিমিয়ার লিগে মোহামেডানের সঙ্গে পয়েন্টের ব্যবধান কমিয়ে আনার একটা সুযোগই হারাল আবাহনী।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ব যবধ ন ১০ জন

এছাড়াও পড়ুন:

ক্যারিবীয় জাহাজে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩

ক্যারিবীয় সাগরে একটি জাহাজে আবারো হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী। এতে জাহাজটিতে থাকা অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ। 

রবিবার (২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।

আরো পড়ুন:

নাইজেরিয়ায় হামলার হুমকি ট্রাম্পের

কানাডার সঙ্গে আলোচনায় না বসার ঘোষণা ট্রাম্পের

শনিবার গভীর রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে হেগসেথ বলেন, “মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই জাহাজটিকে অবৈধ মাদক চোরাচালানে জড়িত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছিল।”

তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক জলসীমায় পরিচালিত এই হামলার সময় জাহাজটিতে ‘তিনজন পুরুষ মাদক-সন্ত্রাসী’ ছিলেন। তিনজনই নিহত হয়েছেন।” 

শনিবারের এই হামলার আগে গত বুধবার ক্যারিবীয় সাগরে আরো একটি জাহাজে মার্কিন বাহিনীর হামলায় চারজন নিহত হন। গত সোমবার মার্কিন হামলায় নিহত হন ১৪ জন।

মাদক পাচারের অভিযোগ তুলে সেপ্টেম্বর মাস থেকে এই অঞ্চলে সামরিক অভিযান শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই অভিযানে এখন পর্যন্ত ভেনেজুয়েলা ও কলম্বিয়ার নাগরিকসহ ৬২ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এছাড়া ১৪টি নৌযান এবং একটি সাবমেরিন ধ্বংস হয়েছে।

তবে নৌযানগুলো মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্র এখনও দেয়নি।  ফলে হামলার বৈধতা নিয়ে ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে। কিছু আইনজীবী যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন। কলম্বিয়া এবং ভেনেজুয়েলার মতো প্রতিবেশী দেশগুলো এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে।

ভেনেজুয়েলা বলছে, যুক্তরাষ্ট্র দেশটির বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করেছে। ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, দেশটি মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াই করবে।

যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে ক্যারিবীয় অঞ্চলে সাতটি যুদ্ধজাহাজ, একটি সাবমেরিন, ড্রোন এবং যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে এবং মেক্সিকো উপসাগরে মোতায়েন করেছে আরেকটি যুদ্ধজাহাজ।

ট্রাম্প প্রশাসন মাদক চোরাচালানকারী নৌযানের ওপর তাদের হামলাকে ‘আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করেছে। 

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের নৌযান সাধারণত আটক করা হয় ও ক্রুদের গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক মার্কিন অভিযানগুলোতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুরো নৌকা ধ্বংস করা হচ্ছে। জাতিসংঘ-নিযুক্ত মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা এই অভিযানগুলোকে ‘বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ড’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ