Prothomalo:
2025-04-30@23:36:47 GMT

জাতীয় ঐকমত্যের বিকল্প নেই

Published: 27th, April 2025 GMT

নির্বাচন ও সংস্কারের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের চলমান আলোচনা কত দিন চলবে, আলোচনার মধ্য দিয়ে সমস্যার সমাধান হবে কি না, ইত্যাদি নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন উঠেছে। গত বছর জুলাই অভ্যুত্থানের পর অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের অঙ্গীকার ছিল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন ও স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থার পুনরাগমন রোধে প্রয়োজনীয় রাষ্ট্রীয় সংস্কার নিশ্চিত করা।

সংস্কারের লক্ষ্যে সরকার অনেকগুলো কমিশন করেছে এবং ইতিমধ্যে সেগুলোর প্রতিবেদনও জমা হয়েছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব সমন্বয় করে তা রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠিয়েছিল এবং মতামত চেয়েছিল। অনেক দল লিখিত জবাব দিয়েছে। আবার কোনো কোনো দল প্রশ্নোত্তর আকারে মতামত চাওয়া নিয়ে আপত্তিও জানিয়েছে।

এ ধরনের পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে আলোচনাকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করেছে। সমস্যা দেখা দিয়েছে যেখানে তা হলো, ইতিমধ্যে যেসব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশন আলোচনা করেছে, তাদের কাছ থেকে পরস্পরবিরোাধী মতামত এসেছে। কোনো কোনো দল সংস্কারের চেয়ে নির্বাচনকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে, আবার কোনো কোনো দল নির্বাচনের চেয়ে সংস্কারকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। এই দূরত্ব দূর করার কঠিন দায়িত্বই বর্তেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ওপর।

রাজনৈতিক দলগুলোর প্রস্তাবে বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থের স্থলে ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা দলীয় স্বার্থই প্রাধান্য পেয়েছে। এর পেছনে ভোটের হিসাব–নিকাশও কাজ করেছে, যা হওয়া উচিত নয় বলে মনে করি। এই প্রেক্ষাপটে যেসব বিষয়ে বেশির ভাগ দল ঐকমত্য প্রকাশ করেছে, সেগুলো নিয়েই জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে এগোতে হবে। সব বিষয়ে সব দল একমত হবে না। গণতান্ত্রিক সমাজে সেটা আশা করাও যায় না। ভিন্নমত আছে বলেই তারা ভিন্ন দল করেছে। নির্বাচন করতে গিয়ে যেমন সংস্কারকে বাদ দেওয়া যাবে না, তেমনি সংস্কারের নামে নির্বাচনকে অযথা বিলম্বিত করাও সমীচীন হবে না।  

বেশ কিছু সংস্কার কমিশনের সুপারিশের সঙ্গে সরাসরি নির্বাচনের সম্পর্ক নেই। অনেকগুলো সংস্কার সরকার নির্বাহী আদেশেও বাস্তবায়ন করতে পারে। কিন্তু এসব কমিশনের বাস্তবায়নে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না। সংস্কারের প্রশ্নে গোষ্ঠীবিশেষের কাছে সরকারের নতি স্বীকার কিংবা নিষ্ক্রিয় থাকা হবে দুর্ভাগ্যজনক।

নির্বাচন ও সংস্কার নিয়ে বৈঠকের পাশাপাশি মাঠের রাজনীতিও জমে উঠেছে। রাজনৈতিক দলের নেতারা একে অপরের বিরুদ্ধে প্রায়ই বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। তঁাদের কারও কারও ভাষাভঙ্গিতে শালীনতার সীমা লঙ্ঘিত হতেও দেখা যাচ্ছে, যা দেশবাসীকে উদ্বিগ্ন না করে পারে না। যখন কোনো দল অপর দলের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে প্রভাবিত করার অভিযোগ আনে, সরকারের উচিত সেটি নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে দেখা। প্রশাসন কারও প্রতি রাগ বা অনুরাগ দেখাতে পারে না। 

সম্প্রতি প্রথম আলোর সঙ্গে সাক্ষাৎকারে ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের জ্যেষ্ঠ গবেষক ড.

মির্জা হাসান আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতা আসবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। এই শঙ্কা তাঁর একার নয়। আরও অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও পণ্ডিতের কথায় রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কথা উঠে এসেছে। অস্বীকার করা যাবে না, নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেশের অর্থনীতিতেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

অতএব, অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব হবে যত দ্রুত সম্ভব সংস্কার ও নির্বাচনের বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা। এখানে নির্বাচন ও সংস্কারকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর কোনো সুযোগ নেই।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র র

এছাড়াও পড়ুন:

আলী রীয়াজের সঙ্গে ইন্টারন্যাশনাল আইডিইএ পরিচালকের বৈঠক

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের সাথে ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড ইলেক্টোরাল অ্যাসিস্ট্যান্সের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলভিত্তিক কর্মসূচির পরিচালক লীনা রিখিলা তামাংয়ের সাথে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) রাজধানীর সংসদ ভবনে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় ইন্টারন্যাশনাল আইডিইএ এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার গ্রেইস প্রিয়েটো উপস্থিত ছিলেন।

কমিশনের পক্ষে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, “সংস্কার সংক্রান্ত ৫টি কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ সম্পর্কে  রাজনৈতিক দলগুলোর সুনির্দিষ্ট  মতামত জানতে ইতোমধ্যে সুপারিশমালা স্প্রেডশিট আকারে তাদের কাছে প্রেরণ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৩৫টি রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে আমরা মতামত পেয়েছি এবং তার ভিত্তিতে ২০টি দলের সাথে প্রাথমিকভাবে আলোচনা করেছে কমিশন। আগামী দিনগুলোতেও এ আলোচনা অব্যাহত থাকবে।”

আরো পড়ুন:

জ্বালানি উপদেষ্টার পিএসকে বদ‌লি

পুলিশ সপ্তাহ শুরু মঙ্গলবার, নির্বাচনী নির্দেশনা পাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

তিনি বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনার মাধ্যমে স্বল্পতম সময়ের মধ্যে এমন একটি জাতীয় সনদ তৈরি করতে চায় কমিশন, যা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের পথরেখা তৈরি করবে।”

বৈঠকে ইন্টারন্যাশনাল আইডিইএর পরিচালক লীনা রিখিলা তামাং কমিশনের কাজে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

ঢাকা/এএএম/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অনির্বাচিত সরকারের করিডোর দেওয়ার এখতিয়ার নেই: বিএনপি
  • অনির্বাচিত সরকারের করিডোর দেওয়ার এখতিয়ার নেই
  • ‘মানবিক করিডর’ প্রতিষ্ঠার আগে জাতীয় ঐকমত্য তৈরি করতে হবে: চরমোনাই পীর
  • এই প্রথম সকলে মিলে রাষ্ট্র বিনির্মাণের সুযোগ তৈরি হয়েছে: আলী রীয়াজ
  • প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক
  • মানবিক করিডরের সিদ্ধান্ত হলেও শর্ত নিয়ে চলছে আলোচনা
  • ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক
  • প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার অগ্রগতি পর্যালোচনা
  • প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক অনুষ্ঠিত
  • আলী রীয়াজের সঙ্গে ইন্টারন্যাশনাল আইডিইএ পরিচালকের বৈঠক