ঐকমত্যের বাইরে সংস্কারের কোনো সুযোগ নেই: আমির খসরু
Published: 27th, April 2025 GMT
ঐকমত্যের বাইরে সংস্কার করার কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। আজ রোববার গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) সঙ্গে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ’র নেতৃত্বে বিজেপির ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি বৈঠক উপস্থিত ছিলেন। প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্যরা হলেন বিজেপির মহাসচিব আবদুল মতিন সাউদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী মোস্তফা তামজিদ প্রমুখ। বিএনপির পক্ষে বৈঠকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু উপস্থিত ছিলেন।
আমির খসরু বলেন, আমরা দেশে বাকশাল করতে যাচ্ছি না। সবাইকে যে একমত হতে হবে, এটা যারা চিন্তা করে- এটা তো একটা বাকশালী চিন্তা। যেটা শেখ হাসিনা করেছিলেন। বিভিন্ন দলের ভিন্ন ভিন্ন দর্শন, চিন্তা-ভাবনা থাকবে, ভিন্নমত থাকবে। যেখানে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলোর বাইরে সংস্কার করার কোনো সুযোগ নাই। এর বাইরে যেটা করতে যাবে, সেটা আপনাকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে আসতে হবে। নির্বাচনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আসতে হবে এবং জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে আসতে হবে। সুতরাং যেগুলো ঐকমত্য হয়েছে, এ বিষয়গুলো কেনো জাতির সামনে তুলে ধরা হচ্ছে না। এটাই প্রশ্ন।
এ প্রসঙ্গে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য খসরু আরও বলেন, ইতিমধ্যে সবাই জমা দিয়েছে। অনেকদিন সময় চলে গিয়েছে। আলোচনা শেষ। কোথায় ঐকমত্য হয়েছে, এটার জন্য এক সপ্তাহের বেশি সময় লাগবে না। জাতিকে জানান, কোথায় ঐকমত্য হয়েছে, জাতি জানুক। ওই ঐকমত্যের ভিত্তিতে আমরা সনদে সই করে দিয়ে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাই। খুব সহজ ব্যাপার। এর বাইরে যাওয়ার তো কোনো সুযোগ নেই। আজকে যে প্রেক্ষাপট, এই প্রেক্ষাপটে নির্বাচনী রোডম্যাপ না দেওয়ার কারণে জনগণের মধ্যে সংশয় সৃষ্টি হচ্ছে। এটা আগামী দিনের গণতন্ত্র ও নির্বাচনী প্রক্রিয়ার জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে না।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কিছু রাজনৈতিক দল ঐকমত্য কমিশনে গিয়ে ফাঁদে পড়েছে: জাপা মহাসচিব
কিছু রাজনৈতিক দল ঐকমত্য কমিশনে গিয়ে ফাঁদে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী। তবে কারা, সেটা স্পষ্ট করেননি তিনি।
আজ শনিবার বিকেলে রংপুর নগরের সেন্ট্রাল রোডে জাপা কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে শামীম হায়দার পাটোয়ারী এ মন্তব্য করেন।
শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কিছু দল ইতিমধ্যে ঐকমত্য কমিশনে গিয়ে বা স্বাক্ষর করে একধরনের ফাঁদে পড়ে গেছে। কিছু রাজনৈতিক দল বলছে, ঐকমত্য কমিশন প্রতারণা করেছে। এখানে প্রতারক ও প্রতারণা শব্দটি উচ্চারিত হচ্ছে। কিন্তু আমরা তো এ রকম সংস্কার চাইনি।’
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ঐকমত্য তৈরিতে ব্যর্থ হয়েছে মন্তব্য করে জাপা মহাসচিব বলেন, কমিশন ৫৬টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মধ্যে ৩০টি দলকে বাদ দিয়েছে। যে দলগুলো সেখানে গেছে, তাদের মধ্যে অনেকগুলো বিষয় নিয়ে মতবিরোধ আছে। এক ভাগকে ঐক্য প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে, আরেক ভাগ ঐক্য প্রক্রিয়ায় সম্পূর্ণ অংশগ্রহণ করেছে। অন্য আরেক ভাগ ঐক্য প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে পরে সম্পূর্ণ দ্বিমত পোষণ করেছে।
বর্তমান প্রশাসনিক কাঠামো বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির বলে দাবি করেছেন শামীম হায়দার পাটোয়ারী। তিনি বলেন, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিল। কারণ, নির্বাচিত সরকার সেখানে দাঁড়িয়ে থেকে ভোট করেছে ও নির্বাচনকে প্রভাবিত করেছে। এই মুহূর্তে দেশে যে প্রশাসনিক কাঠামো আছে, তার ব্যাপারে তথ্য উপদেষ্টা নিজেই বলেছেন, তাঁরা বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর কথামতো প্রশাসন সাজিয়েছে, তার সঙ্গে এনসিপি আছে। এই তিন দলের বাইরে অন্য কোনো দল যদি ভোটে আসে, এই প্রশাসনিক কাঠামো সেই দলকে সুষ্ঠু ভোট হতে দেবে না।
গণভোটের দাবি নজিরবিহীন উল্লেখ করে শামামী হায়দার পাটোয়ারী বলেন, সংবিধানে এই মুহূর্তে গণভোট কোনো প্রভিশনে নেই। বর্তমানে গণভোটের যে দাবি উঠেছে, সংসদে পাস হওয়ার আগে এই দাবি বাস্তবায়ন হলে ঐকমত্য কমিশনকে সংসদের মর্যাদা দেওয়া হবে। ঐকমত্য কমিশন সার্বভৌম নয়, নির্বাচিত নয় ও সংসদ নয়। সংসদকে এড়িয়ে গিয়ে কোনো আইন পাস করা হলে তা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে।
এ সময় জাপার কো–চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান, প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ইয়াসির, রংপুর জেলার আহ্বায়ক আজমল হোসেন, সদস্যসচিব হাজী আবদুর রাজ্জাক, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হাসানুজ্জামানসহ জাপা ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।