বিদ্যমান ব্যবস্থা সংস্কার না করে নির্বাচন হলে পুরোনো ফ্যাসিবাদ ফিরে আসবে বলে আশঙ্কা করছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি। একই সঙ্গে দলটি মনে করে জাতীয় সনদ আগামী প্রজন্মের জন্য দলিল হিসেবে কাজ করবে।

আজ রোববার জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে এসব কথা বলেন জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন।

বিদ্যমান রাজনৈতিক বন্দোবস্তের ওপর দাঁড়িয়ে নতুন রাষ্ট্র বিনির্মাণ করা সম্ভব নয় উল্লেখ করে শহীদ উদ্দিন বলেন, শাসনব্যবস্থার কাঠামোগত সংস্কার অনিবার্য। ফ্যাসিবাদী শাসক ফ্যাসিবাদী শাসনের মধ্য দিয়ে মানুষের সব অধিকার হরণ, জনগণের সম্পদ লুণ্ঠন, আয়নাঘর প্রতিষ্ঠাসহ রাষ্ট্রের সব কাঠামোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এর ফলে রাষ্ট্রের সব কাঠামো ভেঙে পড়েছে।

জেএসডির সাধারণ সম্পাদক বলেন, এ বিদ্যমান ব্যবস্থার ওপর দাঁড়িয়ে এটিকে পুনর্বিন্যাস করা ছাড়া নতুন ক্ষমতায়নের দিকে গেলে পুরোনো ব্যবস্থা ফিরে আসার আশঙ্কা থাকবে।

জাতীয় সনদ তৈরির উদ্যোগকে যৌক্তিক ও কার্যকর মন্তব্য করে শহীদ উদ্দিন বলেন, জাতীয় সনদ তৈরির জন্য যে কাজগুলো হয়েছে; তা আজ, আগামীকাল ও প্রজন্মের জন্য ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে সংরক্ষিত থাকবে। আমরা যেটুকু ঐকমত্য তৈরি করব, সেটি হবেই। কিন্তু আগামী প্রজন্ম রাষ্ট্রকে পুনর্নির্মাণ করার জন্য নতুন ধারণা তৈরি করার ক্ষেত্রে সহায়তা নিতে পারবে।

রাজনৈতিক দলগুলোর ন্যূনতম ঐকমত্যের ভিত্তিতে জাতীয় সনদ করা দরকার বলে মনে করেন শহীদ উদ্দিন মাহমুদ।

জেএসডি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ১৬৬টি প্রস্তাবের মধ্যে ১১৯টিতে একমত, ১৭টিতে দ্বিমত, ২৭টিতে আংশিকভাবে একমত এবং ৩টিতে মতামত নেই বলে লিখিতভাবে জানিয়েছে।

শহীদ উদ্দিন মাহমুদের নেতৃত্বে ৮ সদস্যের প্রতিনিধি দলে ছিলেন সিনিয়র সহসভাপতি তানিয়া রব, সহসভাপতি সিরাজ মিয়া, সানোয়ার হোসেন তালুকদার, কে এম জাবির, তৌহিদ হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন পাটোয়ারী, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হেলালুজ্জামান।

আরও পড়ুনস্বল্প সময়ের মধ্যে ‘জাতীয় সনদ’ তৈরি করতে চায় ঐকমত্য কমিশন১০ মার্চ ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ ত য় সনদ ব যবস থ ঐকমত য র জন য জ এসড

এছাড়াও পড়ুন:

‘মানবিক করিডর’ প্রতিষ্ঠার আগে জাতীয় ঐকমত্য তৈরি করতে হবে: চরমোনাই পীর

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের জন্য ‘মানবিক করিডর’ প্রতিষ্ঠার আগে জাতীয় ঐকমত্য তৈরির দাবি জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম (চরমোনাই পীর)। তিনি বলেছেন, মানবিক করিডর প্রতিষ্ঠার বিষয়টি শুধু মানবিক বিষয় নয়, এর সঙ্গে দেশের নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িত। তাই বিস্তর বোঝাপড়া এবং রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা ছাড়া এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হবে না।

আজ মঙ্গলবার দলের কুমিল্লা মহানগর শাখার শুরা সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম এ কথাগুলো বলেন। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দলটি এ তথ্য জানিয়েছে।

রেজাউল করীম বলেন, ‘রাখাইন রাজ্য নিয়ে আমাদের অপ্রীতিকর অভিজ্ঞতা রয়েছে। বাংলাদেশ ঐতিহাসিকভাবে রাখাইনের রোহিঙ্গাদের মানবিক সাহায্য করে আসছে। বর্তমানেও বাংলাদেশে ১৪ থেকে ১৫ লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছে। মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সৃষ্ট মানবিক পরিস্থিতির প্রতি আমরা সংবেদনশীল। বিপর্যস্ত মানুষের জন্য মানবিক করিডর প্রতিষ্ঠা জরুরি। কিন্তু অতীতের অভিজ্ঞতা বলে, এ ধরনের করিডর কেবল “মানবিক” রাখা যায় না। এর সঙ্গে সামরিক ও নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িয়ে যায়।’ তিনি বলেন, ফলে (করিডরের জন্য) মিয়ানমারের ভেতর দিয়ে বা অন্য বিকল্পগুলোকেই বিবেচনা করা উচিত। কারণ, এ ধরনের ক্ষেত্রে মিয়ানমার বা আরাকান আর্মি বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য কোনো অংশীদার নয়। তাই এ বিষয়ে তাড়াহুড়া না করে বুঝেশুনে সবার সম্মতিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির বলেন, একটি রক্তক্ষয়ী গণ–অভ্যুত্থান হয়ে গেল, কিন্তু দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ ও চরিত্রে সেই অর্থে কোনো পরিবর্তন হয়নি। ক্ষমতার জন্য উদগ্র ব্যাকুলতা, প্রতিহিংসা, হানাহানি ও কূটকৌশল এখনো চলমান। এই পরিস্থিতে নির্বাচনের চেয়ে ব্যক্তি, দল ও রাষ্ট্রের সংস্কারই প্রধান মুখ্য হওয়া উচিত।

ক্ষোভ প্রকাশ করে চরমোনাই পীর বলেন, স্বৈরতন্ত্র পতনে যে ব্যক্তি জীবন দিয়েছেন, তাঁর কবর জিয়ারত করে ফেরার পথে তাঁর মেয়েকে ধর্ষণ করা হলো। সেই মেয়ে পরে আত্মহত্যাও করল। এর চেয়ে কষ্টদায়ক ঘটনা আর কী হতে পারে? নিপীড়িত মেয়েটাকে কেন রাষ্ট্র রক্ষা করতে পারল না, সেই জবাব সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দিতে হবে। একই সঙ্গে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে সারা দেশে নিহত ও আহত ব্যক্তিদের পরিবারের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। অবশ্যই পতিত স্বৈরাচারের বিচার করতে হবে।

ইসলামী আন্দোলন কুমিল্লা মহানগরের আহ্বায়ক এম এম বিলাল হুসাইনের সভাপতিত্বে শুরা অধিবেশনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব আশরাফুল আলম, কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ জয়নাল আবেদীন, ইসলামী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি হারুনুর রশিদ প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনসহ ১১ বিষয়ে ইসলামী আন্দোলন ও এবি পার্টির ঐকমত্য
  • চলছে বৈঠকের রাজনীতি
  • বৈঠকে আওয়ামী লীগের বিচার ও মৌলিক সংস্কার প্রশ্নে একমত এনসিপি ও গণসংহতি আন্দোলন
  • কানাডার প্রধানমন্ত্রী কার্নিকে অভিনন্দন জানালেন ট্রাম্প
  • অনির্বাচিত সরকারের করিডোর দেওয়ার এখতিয়ার নেই: বিএনপি
  • অনির্বাচিত সরকারের করিডোর দেওয়ার এখতিয়ার নেই
  • ‘মানবিক করিডর’ প্রতিষ্ঠার আগে জাতীয় ঐকমত্য তৈরি করতে হবে: চরমোনাই পীর
  • জাতীয় স্বার্থে আমরা কি একমত হতে পারি না
  • গণভোটে সংস্কার চায় নুরের গণঅধিকার
  • সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীর বয়স ন্যূনতম ২৩ করার প্রস্তাব গণ অধিকার পরিষদের