‘বিচার ব্যবস্থা সংস্কারে আইনজীবীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ জরুরি’
Published: 27th, April 2025 GMT
বিচার ব্যবস্থা সংস্কারে আইনজীবীদের কার্যকর অংশগ্রহণ ছাড়া ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা। তারা বলেন, সুপ্রিম কোর্ট প্রসঙ্গে কমিশনের ৩৭টি সুপারিশের মধ্যে ১৪টি সুপারিশ অল্প সময়ের মধ্যে প্রশাসনিক উদ্যোগের মাধ্যমে বাস্তবায়ন সম্ভব। অনলাইনে মেনশন স্লিপ গ্রহণ এবং রায় প্রদানের বিষয়টি কার্যকর হলে বিচারিক কার্যক্রমে গতি আসবে।
শনিবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে ‘বিচার ব্যবস্থা সংস্কার ও জরুরি করণীয়: প্রসঙ্গ সুপ্রিম কোর্ট’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) এ সভার আয়োজন করে। সভায় দুর্নীতিমুক্ত কোর্ট ব্যবস্থাপনা, প্রতিবন্ধীবান্ধব অবকাঠামো গঠন, বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি ব্যবস্থার প্রসার, আদালতের বেঞ্চ পুনর্গঠন নীতিমালা প্রণয়ন এবং দ্রুত রায়-আদেশ পাওয়ার ব্যবস্থা নিশ্চিত করার ওপর বক্তারা জোর দেন।
ব্লাস্টের নির্বাহী পরিচালক ব্যারিস্টার সারা হোসেনের সঞ্চালনায় সভায় আলোচক ছিলেন সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, সুপ্রিম কোর্টের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এম জামিউল হক ফয়সাল, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো.
ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, বার কাউন্সিলের অভিযোগ নিষ্পত্তিতে নিরপেক্ষতা ও কার্যকারিতার অভাব রয়েছে। অতীতের মতো শুনানির দিনেই আদেশ প্রস্তুত করার নিয়ম পুনরায় চালু হওয়া উচিত।
এম জামিউল হক ফয়সাল বলেন, বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর করতে হবে। ই-জুডিশিয়ারি ও ভার্চুয়াল কোর্টের বিস্তারে মানসিকতার পরিবর্তন জরুরি।
ড. কাজী জাহেদ ইকবাল বলেন, হাইকোর্টের জামিন আদেশ স্থগিত না থাকলে কোনো আইনজীবী সনদ পাঠিয়ে জেলমুক্তি আটকে দিতে পারবেন না। এটি আইনসম্মত নয়। ব্যারিস্টার তানিম হোসাইন শাওন বলেন, অনেক সুপারিশ দ্রুত বাস্তবায়ন সম্ভব এবং তার জন্য সংবিধান বা আইন পরিবর্তনের প্রয়োজন নেই। প্রশাসনিক উদ্যোগে এগুলো বাস্তবায়ন করা জরুরি। ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম বলেন, আদালতের স্থগিতাদেশ ছাড়া হাইকোর্টের বিচারাধীন মামলা স্থগিত রাখা উচিত নয়। এজন্য অনুশীলন নির্দেশনা থাকা প্রয়োজন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বাগেরহাটে ৪ আসন বহালের দাবিতে হাইকোর্টে রিট
বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহাল রাখতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং একটি আসন কমিয়ে তিনটি আসন করার নির্বাচন কমিশনের গেজেট কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের আগামী ১০ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
মানিকগঞ্জে কৃষিজমির মাটি কাটার বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
ডাকসু নির্বাচন স্থগিত চেয়ে করা ছাত্রলীগ নেতার রিট বাতিল
বাগেরহাট প্রেস ক্লাব ও অন্যান্যদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন রিট পিটিশন দাখিল করেন। এছাড়া চিতলমারী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বাগেরহাট ১ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী মুজিবর রহমান শামীমের পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ আক্তার রসুল একই বিষয়ে পৃথক রিট পিটিশন করেন।
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও বাগেরহাট জেলা বিএনপির নেতা ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, “আমরা রিট পিটিশন করেছি। আদালত আমাদের কথা শুনেছেন এবং ১০ দিনের রুল জারি করেছেন। আশা করি, আদালতে ন্যায়বিচার পাব এবং বাগেরহাটের চারটি আসন বহাল থাকবে।”
গত ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশন বাগেরহাটের চারটি আসনের মধ্যে একটি আসন কমিয়ে তিনটি করার প্রস্তাব দেয়। এরপর থেকে বাগেরহাটের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠন আন্দোলন শুরু করে। চারটি আসন বহালের দাবিতে নির্বাচন কমিশনের শুনানিতেও অংশ নেয় তারা।
তবে ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন শুধু সীমানা পরিবর্তন করে তিনটি আসন রেখে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে।
চূড়ান্ত গেজেট অনুযায়ী বাগেরহাট-১ (সদর-চিতলমারী-মোল্লাহাট), বাগেরহাট-২ (ফকিরহাট-রামপাল-মোংলা) ও বাগেরহাট-৩ (কচুয়া-মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) নির্ধারণ করা হয়। অথচ দীর্ঘদিন ধরে বাগেরহাট-১ (চিতলমারী-মোল্লাহাট-ফকিরহাট), বাগেরহাট-২ (সদর-কচুয়া), বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মোংলা) এবং বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
ঢাকা/শহিদুল/বকুল