বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনের এখন একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, প্রকৃত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এবং রূপান্তরমূলক নির্বাচন বাস্তবায়ন করা দরকার বলে মনে করছেন ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড ইলেকটোরাল অ্যাসিস্ট্যান্স (ইন্টারন্যাশনাল আইডিয়া)-এর এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক লিনা রিক্কিলা তামাং।

কোন কোন সংস্কারের পর জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা হবে, সেসব বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের চলমান কর্মকাণ্ডের মধ্যে ‎‎রবিবার (২৭ এপ্রিল) ঢাকায় নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসিরউদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে লিনা রিক্কিলা তমাং তাদের প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন।  

সিইসির সঙ্গে সাক্ষাৎতে তাদের মধ্যে আলোচনার বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন রিক্কিলা তামাং।

আরো পড়ুন:

বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায় অস্ট্রেলিয়া

নির্বাচ‌নে সমঝোতার ভিত্তিতে একক প্রার্থী দে‌বে পাঁচ ইসলামী দল

সেখানে সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আমার বিশ্বাস, বাংলাদেশের জনগণের প্রত্যাশা এখন একটি মুক্ত, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, পাশাপাশি প্রতিনিধিত্বমূলক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠান।”

“এটি যেন বাস্তবেই রূপান্তরমূলক সংস্কারের মাধ্যমে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে পুনর্গঠনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়,” প্রত্যাশা রিক্কিলা তামাংয়ের। 

সাক্ষাৎকালে সিইসির সঙ্গে নির্বাচন প্রস্তুতি ও নির্বাচন ব্যবস্থাপনা সংস্কারসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় বলে তুলে ধরে রিক্কিলা তামাং বলেন, “আমরা বুঝতে পেরেছি যে, এখনো কিছু বিষয় রয়েছে, যেগুলো নিয়ে কাজ করা প্রয়োজন, বিশেষ করে এমন কিছু সংস্কার আছে, যেগুলো আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে বাস্তবায়ন করা যেতে পারে। আমাকে ব্যাখ্যা করা হয়েছে যে, নির্বাচন কমিশনকে বিদ্যমান আইনি কাঠামোর মধ্যেই কাজ করতে হয় এবং তারা আইনের বাইরে যেতে পারে না।”

“কী কী মূল বিষয় অগ্রাধিকার পাবে, তা অনেকাংশে নির্ভর করবে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্যের ওপর, তারা কীভাবে বাস্তবায়নের বিষয়ে একমত হয়,” যোগ করেন তামাং।

তিনি বলেন, “আমাদের জানানো হয়েছে, আসন্ন জুলাই সনদে যা কিছু সম্মত হবে, তার ওপর ভিত্তি করে নির্বাচন কমিশন পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে পারবে।”

নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন গঠন করে নির্বাচনের বিদ্যমান আইন পর্যালোচনার ভিত্তিতে সংস্কারের জন্য সুপারিশমালা তৈরি করে তার ওপর রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত গ্রহণ ও সরাসরি আলোচনা করছে জাতীয় ঐতমত্য কমিশন।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি। সব কমিশনের সুপারিশমালা ৩৯টি রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠিয়ে ৩৫টির মতামত এসেছে। তার ভিত্তিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করছে ঐকমত্য কমিশন। এরই মধ্যে ১৯টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ শেষ হয়েছে। 

প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা করা রোডম্যাপ অনুযায়ী চলতি বছরের শেষ মাস ডিসেম্বর থেকে পরের বছরের জুলাইয়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অবশ্য একাংশের রাজনৈতিক দল বলছে, পুরো সংস্কার করার পর নির্বাচন দেওয়া হোক; বিএনপিসহ আরেক অংশ বলছে, নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার করে ভোট দেওয়া হোক; সেটি ডিসেম্বর বা তার আগেই হতে পারে। 

ঢাকা/হাসান/রাসেল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে ঐকমত্য না হলে গণভোট ছাড়া উপায় নেই: এবি পার্টি

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে অংশ নিয়ে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছাতে না পারলে গণভোট ছাড়া উপায় নেই।

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক হয়। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এবি পার্টির চেয়ারম্যান এ কথা বলেন।

ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে মজিবুর রহমান বলেছেন, ‘সংবিধান পরিবর্তন, সংস্কার, সংশোধন, নতুন করে লেখা বা বাতিলের চূড়ান্ত ক্ষমতা জনগণের। আমরা ঐক্যবদ্ধ মতামতের ভিত্তিতে জুলাই সনদ তৈরি করেছি, হয়তো কয়েকটি বিষয়ে কারও কারও “নোট অব ডিসেন্ট” (দ্বিমত) আছে। কিন্তু চূড়ান্ত কোনটা হবে, তা নির্ধারণের মূল ক্ষমতা জনগণের।’

কমিশনের আজকের প্রস্তাবে জুলাই ঘোষণাপত্রের ২২ নম্বর অনুচ্ছেদকে রেফারেন্স আকারে উল্লেখ করায় কোনো কোনো রাজনৈতিক দল ও নেতা জুলাই ঘোষণাপত্রের বৈধতা নিয়ে মন্তব্য করেন। এ বিষয়ে এবি পার্টির চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে যাঁরা আজ প্রশ্ন তুলছেন, কাল তাঁরা সংসদে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করবেন এবং এই সনদকে প্রশ্নবিদ্ধ করবেন না, তার নিশ্চয়তা কী?

এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সানী আবদুল হক বলেন, সংবিধানে এটা নেই, ওটা নেই বলে সংবিধান সংস্কার করা যাবে না—এই ধারণা অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাপরিপন্থী। রাজনৈতিক দলগুলো যদি জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতির প্রশ্নে নিজেদের অবস্থান থেকে নমনীয় না হয়, তবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পুরো প্রচেষ্টা মুখ থুবড়ে পড়বে।

আশঙ্কা প্রকাশ করে এবি পার্টির এই নেতা বলেন, এমন পরিস্থিতি জাতিকে এক গভীর সংকটের দিকে ঠেলে দেবে। সুতরাং জাতীয় স্বার্থে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা জরুরি; অন্যথায় গণভোট ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।

আরও পড়ুনবর্ধিত মেয়াদের আগেই জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি চূড়ান্ত করতে চায় কমিশন: আলী রীয়াজ৪ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাংবিধানিক আদেশ ও গণভোটের সুপারিশ, একমত নয় দলগুলো
  • ‘সংবিধান আদেশ’ জারির সুপারিশ করতে পারে কমিশন: আলী রীয়াজ
  • জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ আবারও রাস্তায় নামবে: জামায়াত নেতা রফিকুল
  • কমিটি গঠন, প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত 
  • বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে ঐকমত্য না হলে গণভোট ছাড়া উপায় নেই: এবি পার্টি
  • বর্ধিত মেয়াদের আগেই জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি চূড়ান্ত করতে চায় কমিশন: আলী রীয়াজ
  • বিএনপি নির্বাচনমুখী কর্মসূচিতে যাবে
  • দলগুলোর সঙ্গে বুধবার আবার আলোচনায় বসছে ঐকমত্য কমিশন
  • ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই নির্বাচন হতে হবে
  • জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ ফের এক মাস বাড়ল