হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ‘ফ্যাটবয় প্যানেল’ নামের একটি ম্যালওয়্যার প্রায় আড়াই কোটি স্মার্টফোনে ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান জিম্পেরিয়াম। প্রতিষ্ঠানটির তথ্যমতে, হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের বোকা বানাতে প্রতারকেরা সরকারি কর্মকর্তা বা ব্যাংক প্রতিনিধির ভুয়া পরিচয়ে একটি লিংক পাঠাচ্ছে। লিংকটিকে ক্লিক করলে একটি এপিকে ফাইল ডাউনলোড হয়ে যায়, যার মাধ্যমে ফোনে ফ্যাটবয় প্যানেল নামের ম্যালওয়্যার প্রবেশ করে। ম্যালওয়্যারটি ফোনের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পাশাপাশি ওয়ান-টাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি) সংগ্রহ করে ব্যবহারকারীদের অজান্তেই আর্থিক লেনদেন করতে থাকে।

জিম্পেরিয়ামের তথ্যমতে, ইনস্টল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ম্যালওয়্যারটি নিজের আইকন লুকিয়ে ফেলে এবং গুগল প্লে প্রোটেক্ট সেবা বন্ধ করে দেয়, যাতে ব্যবহারকারী সন্দেহ করতে না পারে। তা ছাড়া এই ম্যালওয়্যার একটি কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণকাঠামোর (কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার) সঙ্গে সংযুক্ত থাকে, যেখানে থেকে একাধিক ম্যালওয়্যারের সমন্বিত কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। ফলে অপরাধীরা দূর থেকে একই সঙ্গে একাধিক স্মার্টফোন নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।

এ বিষয়ে জিম্পেরিয়ামের প্রধান বিজ্ঞানী নিকো কিয়ারাভিগলিও বলেন, সাধারণত ব্যবহারকারীরা যখন সরকারি বা ব্যাংকের পরিচয়ে পাঠানো ভুয়া এপিকে ফাইল ডাউনলোড করে, তখন নিজের অজান্তেই বড় ধরনের ঝুঁকির মুখে পড়েন। অনেকে এখনো প্লে স্টোরের বাইরের অ্যাপ ডাউনলোডের ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন নন।

সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ক্ষতিকর ম্যালওয়্যার থেকে রক্ষা পেতে হলে অপরিচিত লিংক থেকে অ্যাপ ডাউনলোড বা এপিকে ফাইল ইনস্টল করা থেকে বিরত থাকতে হবে। এ ছাড়া সব সময় গুগল প্লে প্রোটেক্ট সক্রিয় রাখার পাশাপাশি মোবাইলে অপ্রয়োজনীয় অ্যাপের অনুমতি সীমিত রাখা উচিত। ফোনে থাকা অ্যাপগুলোর মধ্যে কোনটি খুদে বার্তা, কল লগ বা গ্যালারির তথ্য ব্যবহার করছে তা সতর্কতার সঙ্গে যাচাই করতে হবে।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম য লওয় য র ড উনল ড ব যবহ র

এছাড়াও পড়ুন:

ছুটি না পেয়ে অসুস্থ শ্রমিকের মৃত্যু, মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ 

নারায়ণগঞ্জের বন্দরের মদনপুর এলাকায় লারিজ ফ্যাশনের পোশাক কারখানায় অসুস্থ হয়ে রিনা আক্তার (৩২) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। 

সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে তারা মদনপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

প্রত্যক্ষদর্শী ও শ্রমিকরা জানিয়েছেন, রিনা আক্তার অসুস্থ অবস্থায় কারখানায় কাজ করছিলেন। রোববার তিনি বেশি অসুস্থতা অনুভব করলে ছুটি চেয়ে আবেদন করেন। তবে, কর্তৃপক্ষ ওই শ্রমিকের আবেদনে সাড়া না দিয়ে কাজ করতে বাধ্য করেন। ওই নারী গুরুতর অসুস্থ হয়ে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে সহকর্মীরা স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

অবরোধকারী শ্রমিকদের অভিযোগ, তাদের সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য মালিকপক্ষ দায়ী। রিনা অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও তাকে ছুটি দেওয়া হয়নি। চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন তিনি। 

লারিজ ফ্যাশনের মালিকপক্ষ ও কর্মকর্তাদেরকে গ্রেপ্তার করার দাবি জানিয়েছেন শ্রমিকরা।

এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে লারিজ ফ্যাশন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শিমুল বলেছেন, আমাদের একজন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে মৃত্যু হয়। এতে আমাদের কোনো গাফিলতি নেই। আমরা আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেছেন, সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য গার্মেন্টস মালিকপক্ষ দায়ী, এমন অভিযোগ করে শ্রমিকরা আন্দোলনে নেমেছেন। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি। ঘটনাস্থলে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশও আছে। শ্রমিকরা রাস্তা থেকে সরে গেছেন। যানচলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

ঢাকা/অনিক/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ