প্রথম আলোর সম্পাদক-প্রকাশের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন, আদেশ ৪ মে
Published: 28th, April 2025 GMT
ঈদ মোবারক নামে একটি ব্যাঙ্গাত্মক কার্টুন প্রকাশ করে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার অভিযোগ এনে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার সম্পাদক, প্রকাশকসহ আদালতে তিনজনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করা হয়েছে।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুজজামানের আদালতে নজরুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ী মামলার আবেদন করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে আগামী ৪ মে আদেশের জন্য দিন ধার্য করেছেন।
প্রথম আলোর সম্পাদক ও প্রকাশক মতিউর রহমান।
এ ছাড়া মামলার আবেদনে দায়িত্বপ্রাপ্ত গ্রাফিক্স ডিজাইনারকে আসামি করার আর্জি জানানো হয়েছে।
মামলার আবেদনে অভিযোগ আনা হয়েছে যে, গত ৩০ মার্চ প্রথম আলো পত্রিকার প্রথম পাতার দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ কলামের হেডলাইনে ঈদ মোবারক নামে একটি ব্যাঙ্গাত্মক কার্টুন প্রকাশ করে, যা কুকুরের ছবি সম্বলিত। ওই ব্যাঙ্গাত্মক কার্টুনে ইসলাম ধর্মের পবিত্র উৎসবকে অবমাননা করা হয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, প্রথম আলোর মত একটি জাতীয় পত্রিকা ইসলাম ধর্মের ঈদের মতো একটি পবিত্র ইবাদতকে কটাক্ষ করতে দ্বিধা করে নাই। একটি কুকুরের ললুপ হাস্যরসাত্মক কার্টুনের সাথে মানুষের আনন্দকে চিত্রায়িত করে ঈদের পবিত্রতা এবং মুসলিম উম্মাহর ধর্মীয় অনুভূতিকে চরমভাবে অবমাননা করা হয়েছে।
অভিযোগে আরো বলা হয়েছে, এই কাজটি একটি সচেতন এবং সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ঈদুল ফিতরের মতো মহান ধর্মীয় উৎসবকে অপমানিত এবং হেয় করার ঘৃণ্য প্রচেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়
বাদীর অভিযোগ, আসামিরা স্বেচ্ছায়, স্বজ্ঞানে, ইচ্ছাকৃতভাবে ইসলাম ধর্মের পবিত্র উৎসবকে তাদের দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় চিত্রায়িত ব্যাঙ্গাত্মক কার্টুন চিত্রের মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহর ঈদের মতো পবিত্র ইবাদতকে হেয় প্রতিপন্ন ও অবমাননা করেছেন।
ঢাকা/এম/রাসেল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রথম আল ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
যেকোনো উৎসবকে রাজনৈতিক প্রভাবের ঊর্ধ্বে রাখার আহ্বান বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের
কেবল বাংলা নববর্ষই নয়, যেকোনো উৎসবকে রাজনৈতিক প্রভাবের ঊর্ধ্বে রাখার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম।
মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে "বাংলা নববর্ষ: ইতিহাস, সংস্কৃতি ও উত্তরাধিকার" শীর্ষক এক সেমিনারে বাংলা নববর্ষের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট, সাংস্কৃতিক তাৎপর্য ও সামাজিক প্রভাব নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অনুরোধ করেন।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম বলেন, কেবল বাংলা নববর্ষই নয়, যেকোনো উৎসবকে রাজনৈতিক প্রভাবের ঊর্ধ্বে রাখা জরুরি। রাজনীতির সঙ্গে রাষ্ট্র ও সমাজের সম্পর্ক সঠিকভাবে গড়ে উঠলে কোনো উৎসবই নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত হয় না। মানুষের দৈনন্দিন জীবনে সাংস্কৃতিক চিন্তা-চেতনার যে স্বকীয়তা রয়েছে, তা অক্ষুণ্ন রাখাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত। বুদ্ধিভিত্তিক ও সচেতন উদ্যোগের মাধ্যমে ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব। বাংলা নববর্ষের প্রতি জনগণের গভীর অনুরাগ রয়েছে, তাই এটিকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে হবে।
সেমিনারে আইআরডিসি’র সাধারণ সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হকের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন
আইআরডিসি-এর সভাপতি ও ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিলাল হোসাইন।
সেমিনারে ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. নাছির আহমেদ তার মূল প্রবন্ধে বাংলা নববর্ষের ঐতিহাসিক বিবর্তন এবং নববর্ষ উদযাপনের ঐতিহ্য ও উত্তরাধিকার নিয়ে দুই পর্বে বিশদ আলোচনা করেন। তিনি বলেন, বাংলা নববর্ষ কেবল বাঙালিদের উৎসব নয়, বরং এটি ধর্ম, গোত্র ও সম্প্রদায় নির্বিশেষে সকল বাংলাদেশির একটি সমন্বিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এছাড়া, বাংলা সনের উৎপত্তি, এর অর্থনৈতিক প্রাসঙ্গিকতা এবং ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক মাত্রা নিয়েও তিনি গভীরভাবে আলোকপাত করেন।
এছাড়াও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীন এবং বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. ফজলে এলাহি চৌধুরী প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন। তাঁরা বাংলা নববর্ষের আন্তর্জাতিক ও সামাজিক সংহতি এবং সাংস্কৃতিক বিকাশে এর ভূমিকা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মতামত তুলে ধরেন। একইসাথে বাংলা নববর্ষের বহুমাত্রিক তাৎপর্য ও এর প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে গঠনমূলক আলোচনা করেন।
এসময় সেমিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, গবেষক উপস্থিত ছিলেন।