চমেক শিক্ষার্থী আবিদুর হত্যা মামলায় খালাসপ্রাপ্ত ১২ জনকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
Published: 29th, April 2025 GMT
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) শিক্ষার্থী আবিদুর রহমান আবিদকে ১৪ বছর আগে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে খালাস পাওয়া ১২ জনকে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে বাদীর করা আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি সৈয়দ জাহেদ মনসুরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।
ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১১ সালের অক্টোবর মাসে। তখন চমেকের ৫১তম ব্যাচের বিডিএস তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন আবিদুর রহমান। তাঁর বাড়ি কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার উত্তর বড়ইতলী গ্রামে। আর আসামিরা চমেক ছাত্রলীগ (বর্তমানে নিষিদ্ধ) শাখার তৎকালীন নেতা-কর্মী ছিলেন।
মামলার এজাহারের ভাষ্য, ২০১১ সালের ১৯ অক্টোবর বেলা আড়াইটা, সন্ধ্যা ৭টা ও রাত ১০টায় তিন দফা পিটুনির পর চিকিৎসার সুযোগ না দিয়ে আবিদুর রহমানকে তাঁর বোনের বাসায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পরে তাঁর চিকিৎসা করার ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে আসামিরা বাধা দেন। পরদিন তাঁকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০১১ সালের ২১ অক্টোবর রাত সাড়ে আটটার দিকে মারা যান আবিদুর রহমান।
এ ঘটনায় আবিদুর রহমানের মামা নেয়ামত উল্লাহ বাদী হয়ে ছাত্রলীগের তৎকালীন ২২ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে ২০১১ সালের ২৩ অক্টোবর চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে পুলিশ ১২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আর এজাহারভুক্ত অপর ১০ আসামিকে মামলার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
আলোচিত এ হত্যা মামলার বিচার শেষে ২০১৯ সালের ১০ জুলাই রায় দেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ জান্নাতুল ফেরদৌস চৌধুরী। রায়ে আসামিদের খালাস দেওয়া হয়।
বিচারিক আদালতের রায়ে খালাসপ্রাপ্ত ১২ জন হলেন ছাত্রলীগ নিয়ন্ত্রিত ছাত্রসংসদের তৎকালীন সহসভাপতি (ভিপি) মফিজুর রহমান জুম্মা, চমেক ছাত্রলীগ শাখার তৎকালীন সভাপতি সোহেল পারভেজ, সাধারণ সম্পাদক বিজয় সরকার, সহসাধারণ সম্পাদক হিমেল চাকমা, ফেরদৌস রাসেল, শান্ত দেবনাথ, মাহাফুজুর রহমান, ধীমান নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, দেবাশীষ চক্রবর্তী, মোস্তফা কামাল, রাশেদুর রেজা সানি ও সালমান মাহমুদ সিদ্দিকী ওরফে রাফসান।
খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে ২ হাজার ৪৭ দিন বিলম্ব মার্জনা চেয়ে চলতি মাসে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করেন মামলার বাদী।
আদালতে আবেদনকারীর পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো.
পরে আবেদনকারীর আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির প্রথম আলোকে বলেন, ১২ জনকে ৩০ দিনের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। রুলে বিচারিক আদালতের দেওয়া রায় কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ২০১১ স ল র র তৎক ল ন
এছাড়াও পড়ুন:
শিক্ষকের মুক্তি চেয়ে শিক্ষার্থীদের আদালত চত্বরে অবস্থান, সড়ক অব
পঞ্চগড়ে ধর্ষণ চেষ্টা মামলায় কারাগারে থাকা পঞ্চগড় সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের গণিত বিষয়ের শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমানের মুক্তির দাবিতে আদালত চত্বরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। পরে তারা সড়ক অবরোধ করেন। ফলে সড়কের দুই পাশে অসংখ্য যানবাহন আটকা পড়ে।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিকেলে পঞ্চগড় জেলা ও দায়রা জজ আদালত চত্বরের ন্যায়কুঞ্জ ভবনের সামনে পঞ্চগড় সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেন। পরে তারা সেখান থেকে সরে গিয়ে পঞ্চগড়-তেতুঁলিয়া মহাসড়ক অবরোধ করেন। পুলিশ গিয়ে তাদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়।
আরো পড়ুন: পঞ্চগড়ে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে শিক্ষক আটক
আরো পড়ুন:
পাবিপ্রবিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে প্রজেক্ট শো
অবকাঠামো উন্নয়নের দাবিতে ববিতে মানববন্ধন
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, গণিত বিষয়ের শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমানকে ন্যায় বিচার পাওয়া থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা আদালতের কর্মকর্তা হওয়ায় আসামির পক্ষে কোনো আইনজীবীকে দাঁড়াতে দিচ্ছেন না। দ্রুত সময়ের মধ্যে তারা শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমানের জামিন দাবি করেন।
অভিযুক্ত শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমানের স্ত্রী আক্তার বানুর অভিযোগ, “একটি মিথ্যা মামলায় আমার স্বামীকে কারাগারে রাখা হয়েছে। ভুক্তভোগীর বাবা আইনজীবী হওয়ায় আমাদের পক্ষে কোনো আইনজীবীকে শুনানি করতে দেওয়া হচ্ছে না।”
তিনি আরো বলেন, “মঙ্গলবার দুপুরে মামলার শুনানিকালে এজলাসে আসামি পক্ষের কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। দ্রুতই মামলার চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। কোনো মামলায় এত দ্রুত চার্জশিট দেওয়া হয় না। আমি আমার স্বামীর মুক্তি দাবি করছি।”
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর জাকির হোসেন বলেন, “আসামির মামলার শুনানি যথাযথ প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে হচ্ছে। আসামি পক্ষে কোনো আইনজীবী দাঁড়াতে দেওয়া হচ্ছে না অভিযোগটি সত্য নয়। তারা কোনো আইনজীবীর প্রতি ভরসা রাখতে পারছেন না।”
তিনি বলেন, “শিশু আছিয়া মারা যাওয়ার পর থেকে প্রতিটি ধর্ষণ মামলা দ্রুততম সময়ের মধ্যে শেষ করার নির্দেশনা রয়েছে।”
গত ১৬ এপ্রিল ৯ম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমানকে আটক করে গণধোলাইয়ের পর পুলিশে সোপর্দ করেন স্থানীয়রা।
ওসি বলেন, “শিক্ষার্থীরা শিক্ষকের জামিন হচ্ছে না দাবি করে আন্দোলন করেন। তারা ২০ মিনিটের মতো সড়ক অবরোধ করে রাখেন। আমরা গিয়ে শিক্ষার্থীদের বুঝাই, আদালতের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার সুযোগ নেই। এরপর শিক্ষার্থীরা সড়ক থেকে সরে যান।”
ঢাকা/নাঈম/মাসুদ